লেখার মাধ্যমে যিনি খুঁজে ফিরতেন অমরত্বের সুধা, সেই নন্দিত কথাসাহিত্যিক, গল্পের জাদুকর হুমায়ূন আহমেদের ৭৪তম জন্মদিনে নূহাশ পল্লীতে ছিল নানা আয়োজন। কেক কাটা, মোমবাড়ি প্রজ্বলন ছাড়াও স্বজন, ভক্ত -অনুরাগীরা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তাঁর সমাধিতে।
হলুদ হিমু আর মিস্ট্রি মিসির আলিসহ অসংখ্য চরিত্রের স্রষ্টা হুমায়ূন আহমেদ। কেবল কথাসাহিত্য নয়, জনপ্রিয় নাটক ও সিনেমার অমর কারিগর হুমায়ূন আহমেদ। আর তাঁর জম্মদিন মানেই বিশেষ কিছু। তাই তো রবিবার সকাল থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসেন ভক্তরা। হলুদ পাঞ্জাবি পড়া হিমু পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আসেন রুপারাও। কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন কবি-লেখক- সাংবাদিকসহ নানা শ্রেণিপেশার মানুষ। ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন তাঁরা।
বই পড়ার ক্ষেত্রে হুমায়ূন আহমেদ আলাদা জায়গা তৈরি করেছিলেন। তার শূন্যতা পূরণ হওয়ার নয় বলে জানান ভক্ত-অনুরাগীরা।
রুপা সেজে নুহাশপল্লীতে আসেন শিক্ষার্থী হুমায়রা আফরোজ। তিনি বলেন, হুমায়ূন আহমেদ আমার প্রিয় লেখক। তার বই পড়েই আমি সাহিত্যকে ভালবেসেছি। আজ কবর জিয়ারত ছাড়াও তাঁর স্মৃতিবিজড়িত নুহাশপল্লী ঘুরে দেখব।
কবি মামুন খান বলেন, উপন্যাস লিখে যে জনপ্রিয় হওয়া যায়, বাংলা সাহিত্যে তা দেখিয়েছেন হুমায়ূন আহমেদ। ৬০-৭০ দশকে অনেক লেখক রবীন্দ্রনাথ কিংবা নজরুল দ্বারা প্রভাবিত ছিলেন। কিন্তু ব্যতিক্রমভাবে নিজস্ব শৈলীতে সাহিত্য রচনা করেছেন হুমায়ূন আহমেদ।
দিনটি উদযাপনে মেহের আফরোজ শাওন তার দুই পুত্র নিষাদ ও নিনিদকে সঙ্গে নিয়ে নুহাশ পল্লীতে আসেন। সকাল সাড়ে ১১টার দিকে দুই পুত্রকে নিয়ে হুমায়ুন আহমেদের কবরে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন তিনি। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে হুমায়ূন আহমেদের বাড়ির সামনে কেক কাটা হয়।
এ সময় ডিভাইস বা মোবাইল আসক্তির কারণে বই পড়ার আগ্রহ কমে যাচ্ছে উল্লেখ করে মেহের আফরোজ শাওন বলেন, সবাই এখন হুমায়ূনের বই পড়তে নয়, অডিও শুনতে বেশি পছন্দ করে। অনেকের পড়বার প্রবণতা কমে গেছে। বিষয়টি নিয়ে মনো বিশেষজ্ঞরা ভালো বলতে পারবেন। তবে অনলাইনেও বই পড়া যায়। কেউ যদি তাঁর বই পড়তে চান তবে অনলাইনে কিনতে পারেন, অনলাইনে পড়তে পারেন।
নুহাশপল্লীর ব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম বুলবুল জানান, হুমায়ূন আহমেদের জম্মবার্ষিকী উপলক্ষে নুহাশপল্লীতে রাতে ১ হাজার ৭৪টি মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করা হয়।
১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার কুতুবপুর গ্রামে জম্ম নেন নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ। ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ২০১২ সালে ১৯ জুলাই নিউইয়র্কের একটি হাসপাতালে মারা যান তিনি। বাংলা সাহিত্যের এ বরপুত্র তাঁর লেখনী আর স্মৃতির মাধ্যমে থাকবেন মানুষের অন্তরে চিরন্তন- জানান তাঁর ভক্তরা।
সংবাদচিত্র ডটকম/সারাদেশ