২০২৪ সালে ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে ভোট চুরির অভিযোগে টাঙ্গাইলের আদালতে শেখ হাসিনাসহ ১৯৩ জনের নামে করা মামলাটি ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন বাদী।
বুধবার সকালে জেলার মুখ্য বিচারিক হাকিম ভূঞাপুর উপজেলা আমলি আদালতে বিএনপি নেতা ও বাদী কামরুল হাসান মামলাটি প্রত্যাহারের আবেদন করেন বলে তার আইনজীবী আবু রায়হান খান জানান। টাঙ্গাইল আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. লুৎফর রহমান বলেন, বিচারক রুমেলিয়া সিরাজাম মামলার বাদী ও বাদীপক্ষের আইনজীবীর বক্তব্য শুনেন এবং তা নথিজাত করার আদেশ দেন।
লুৎফর রহমান আরো বলেন, “এতে মামলাটি আর চালানোর প্রয়োজন রইল না।”
এর আগে সোমবার ওই আদালতে শেখ হাসিনাসহ ১৯৩ জনের নামে মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলায় স্থানীয় পাঁচ সাংবাদিককে আসামি করায় জেলাজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। মঙ্গলবার দিনভর নানা নাটকীয়তার পর মামলায় পাঁচ সাংবাদিকের নাম মামলা থেকে বাদ দিতে বাদী কামরুল হাসান আদালতে অনাপত্তিপত্র দেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী আবু রায়হান খান বলেন, ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ডামি ও ভোট চুরির নির্বাচন আখ্যায়িত করে দায়ের করা মামলাটি বাদী প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
সোমবার দায়ের করা মামলায় তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট মোট ১৯৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন।
আদালতের বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে ভূঞাপুর থানার ওসিকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেন।
একইসঙ্গে আগামী ১৩ অগাস্ট মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেন।
এরই মধ্যে মঙ্গলবার পাঁচ সাংবাদিককে মামলা থেকে প্রত্যাহারে বাদী অনাপত্তিপত্র প্রদান করেন। সবশেষ বুধবার বাদী মামলাটি প্রত্যাহার করে নেন।
মামলার বাদী ভূঞাপুর উপজেলার অলোয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও ভারই গ্রামের মৃত মমতাজউদ্দিন আহম্মেদের ছেলে কামরুল হাসান।
তিনি বলেন, “ভূঞাপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম মোস্তফা তাকে মামলাটি করতে বলেন।”
প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তটি বিএনপির উপর মহল থেকে নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
গোলাম মোস্তফা বলেন, মামলাটি প্রত্যাহার হবে, এমন কথা তিনি শুনেছেন।
টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল বলেন, “আদালতে মামলা হওয়ার বিষয়টি তিনি জানতে পেরেছেন। কিন্তু মামলাটি প্রত্যাহারের বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না।”
তিনি বলেন, “কেন মামলা দায়ের করা হল, কেনইবা প্রত্যাহার করা হল, বিষয়টি সম্পর্কে জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।”
এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সভাপতি হাসানুজ্জামিল শাহীন বলেন, “এ ধরনের মামলা দায়ের করার আগে জেলা বিএনপির সঙ্গে পরামর্শ করা প্রয়োজন ছিল। ডামি নির্বাচন আয়োজন ও ভোট চুরির ঘটনার সঙ্গে যারা প্রকৃত অর্থে জড়িত তাদের নামেই মামলা করা উচিত। এ ধরনের মামলায় সাধারণত বাদী বা তার সঙ্গীয় লোকজনের ‘বাণিজ্য’ করার মানসিকতা থাকে।”
মামলাটি প্রত্যাহারের কথা জানতে পেরে তিনি বাদীকে ধন্যবাদ জানান।
সংবাদচিত্র ডটকম/রাজনীতি