ঈদুল ফিতরের ছুটি শেষে রাজধানী ও আশপাশের অধিকাংশ গার্মেন্টসে কর্মচাঞ্চল্য ফিরলেও এখনো নিরবতা বিরাজ করছে কিছু পোশাক কারখানায়। বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) তথ্য বলছে, ঈদের ছুটি শেষ হওয়ার পর সোমবার (২১ এপ্রিল) পর্যন্ত এখনো ১১টি কারখানা বন্ধ রয়েছে। ফলে অনিশ্চয়তায় দিন কাটাচ্ছেন এসব কারখানার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শ্রমিকরা।
বিজিএমইএ সূত্রে জানা গেছে, সংগঠনটির আওতাধীন মোট দুই হাজার ৩৪টি কারখানার মধ্যে দুই হাজার ২৩টি ইতোমধ্যে খুলে গেছে। অর্থাৎ বর্তমানে খোলা কারখানার হার ৯৯ দশমিক ৪৮ শতাংশ। তবে বাকি ১১টি কারখানা এখনো ছুটির তালিকায় রয়েছে। যা মোট কারখানার ০ দশমিক ৫২ শতাংশ।
তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গাজীপুর ও ময়মনসিংহ অঞ্চলে ৮৫৪টি চালু কারখানার মধ্যে ৮৪৭টি খোলা থাকলেও বাকি ৭টি এখনো বন্ধ। আর সাভার-আশুলিয়া ও জিরানি অঞ্চলে ৪০০টি কারখানার মধ্যে ৩৯৬টি চালু রয়েছে। সেখানেও এখনো চারটি কারখানা খোলা হয়নি।
নারায়ণগঞ্জে ১৮৮টি কারখানার মধ্যে ১৮৭টি চালু থাকলেও একটি এখনো ছুটিতে রয়েছে। তবে, ডিএমপি এলাকাভুক্ত ৩২১টি কারখানা এবং চট্টগ্রামের ৩৬৩টি কারখানার সবগুলোই খোলা রয়েছে। ফলে এই দুই অঞ্চলে বন্ধ কারখানার হার শূন্য শতাংশ।
এসব কারখানা কেন বন্ধ রয়েছে— এমন প্রশ্নের জবাবে বিজিএমইএ বলছে, কিছু কারখানায় লে-অফ ঘোষণা, কিছু কারখানায় উৎপাদন ঘাটতি, রপ্তানি আদেশ সংকটের কারণে এখনো কার্যক্রম চালু হয়নি।
অন্যদিকে, শ্রমিকদের ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন পরিশোধ করতে পারেনি পাঁচটি কারখানা। যার মধ্যে রয়েছে— বেসিক নিটওয়্যার লিমিটেড, টিএনজেড এ্যাপারেলস লিমিটেড, অ্যাপারেল প্লাস ইকো লিমিটেড, ব্যাসিক ক্লোথিং লিমিটেড এবং রোয়ার ফ্যাশন লিমিটেড। তবে, শ্রম মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপে এসব কারখানার শ্রমিকদের প্রাপ্য বেতন পরিশোধের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। একই সঙ্গে মার্চ মাসের ১৫ থেকে ৩০ দিনের বেতন দিয়েছে— এমন কারখানার সংখ্যা দুই হাজার ১৯টি এবং বেতন না দেওয়া কারখানার সংখ্যা পাঁচটি।
কয়েকটি কারখানা চালু না হওয়া নিয়ে কিছুটা উদ্বেগ থাকলেও, বিষয়টিকে স্বাভাবিক বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা। এ বিষয়ে বিজিএমইএ-এর সাবেক পরিচালক এবং বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, কারখানা খোলা, বন্ধ হওয়া কিংবা নতুন কারখানা চালু হওয়ার বিষয়গুলো গার্মেন্টস সেক্টরে একটি চলমান প্রক্রিয়া। তা ছাড়া, অর্থনৈতিক সমস্যা, অর্ডারের সংকট ইত্যাদি কারণে চলমান কারখানাগুলোর মধ্যে কিছু কারখানা সাময়িকভাবে বন্ধ থাকতে পারে। বিভিন্ন কারণে সবসময় শতভাগ কারখানা খোলা না-ই থাকতে পারে, এটা খুবই স্বাভাবিক বিষয়। প্রায় ৯৯.৪৮ শতাংশ কারখানা ইতোমধ্যে চালু হয়েছে, যা নিঃসন্দেহে ইতিবাচক ইঙ্গিত।
এটি উদ্যোক্তা ও শ্রমিকদের সম্মিলিত প্রয়াসের ফল বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সংবাদচিত্র ডটকম/অর্থনীতি