শুক্রবার, ৩ অক্টোবর ২০২৫ , ১৮ আশ্বিন ১৪৩২
  1. প্রচ্ছদ
  2. ফিচার
  3. Gen Z-এর হতাশা ও গণতন্ত্রের সংকট

Gen Z-এর হতাশা ও গণতন্ত্রের সংকট

একুশ শতকের দ্বিতীয় দশকের পর থেকে বৈশ্বিক রাজনীতি এক অদ্ভুত টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। প্রযুক্তি বিস্ফোরণ, সামাজিক বৈষম্য, জলবায়ু বিপর্যয় এবং অর্থনৈতিক মন্দা— সব মিলিয়ে পৃথিবী যেন এক নতুন সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে। এই পরিবর্তনের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে নতুন প্রজন্ম, যাদের আমরা চিনি জেনারেশন-জি বা Gen Z নামে। এই তরুণরা সোশ্যাল মিডিয়ার সন্তান, বৈশ্বিক সংযোগের নাগরিক এবং একই সঙ্গে অনিশ্চয়তায় ভোগা এক হারানো প্রজন্ম। তারা বিশ্বজুড়ে অস্থিরতা তৈরি করছে, আবার নিজেরাও সেই অস্থিরতার শিকার। আর এই বাস্তবতা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা নিয়ে গভীর প্রশ্ন তুলছে: গণতন্ত্র কি সত্যিই ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য কার্যকর?

জেন-জি: প্রযুক্তিনির্ভর কিন্তু অনিশ্চিত প্রজন্ম

Gen Z মূলত ১৯৯৭ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে জন্ম নেওয়া প্রজন্ম। এরা এমন এক পৃথিবীতে বড় হয়েছে যেখানে—

স্মার্টফোন ও ইন্টারনেট দৈনন্দিন জীবনের অপরিহার্য অংশ,
তথ্যপ্রবাহ মুহূর্তে পাওয়া যায়,
জলবায়ু পরিবর্তনের খবর প্রতিদিন আতঙ্ক ছড়ায়,
আর্থিক অনিশ্চয়তা ও রাজনৈতিক অস্থিরতা সাধারণ বিষয়।

তাদের অনেকেই উচ্চশিক্ষিত, কিন্তু চাকরির নিশ্চয়তা পাচ্ছে না। ইউরোপ ও আমেরিকায় হাউজিং ক্রাইসিস, দক্ষিণ এশিয়ায় বেকারত্ব, আফ্রিকায় রাজনৈতিক সহিংসতা— সব জায়গায় জেন-জি নিজেদেরকে বঞ্চিত মনে করছে।

হতাশা ও আস্থাহীনতার মূলে কী?

১. অর্থনৈতিক সংকট

মহামারি-পরবর্তী বিশ্বে মুদ্রাস্ফীতি ও বেকারত্ব তরুণদের মধ্যে গভীর হতাশা তৈরি করেছে।
ভালো ডিগ্রি নিয়েও চাকরি নেই।
কাজ পেলেও বেতনের সাথে খরচের ফারাক দিন দিন বাড়ছে।
বাড়ি কেনা তো দূরের কথা, ভাড়ার ঘরই বহন করা কঠিন হয়ে উঠছে।

২. জলবায়ু বিপর্যয়
জেন-জির বড় অংশ বিশ্বাস করে, যদি রাজনৈতিক নেতারা এখনই কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়, তবে তাদের ভবিষ্যৎ নিরাপদ নয়। এ কারণেই জলবায়ু আন্দোলনে সবচেয়ে সক্রিয় হলো এই প্রজন্ম।

৩. রাজনৈতিক দুর্নীতি ও কর্তৃত্ববাদ
অনেক দেশে গণতন্ত্র কাগজে-কলমে আছে, কিন্তু বাস্তবে নেই। ভোট জালিয়াতি, দুর্নীতি, পরিবারতন্ত্র— এসব দেখে তরুণদের আস্থা ভেঙে যাচ্ছে।

৪. ডিজিটাল ক্লান্তি
তারা সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবাদ করে, কিন্তু একই সঙ্গে গুজব, ভুয়া খবর আর অনলাইন নির্যাতনের শিকার হয়। ফলে অনলাইন একদিকে শক্তির উৎস, অন্যদিকে মানসিক চাপের বোঝা।

গণতন্ত্র: ভেঙে পড়া বিশ্বাসের কাঠামো

গণতন্ত্রের প্রতি Gen Z-এর আস্থা দ্রুত ক্ষয় হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রে ২০২৪ সালের নির্বাচনে অনেক তরুণ ভোট দিতে আগ্রহ হারিয়েছে।

ভারতে, বাংলাদেশে ও পাকিস্তানে তারা মনে করছে ভোট আসলে কেবল পুরোনো রাজনৈতিক অভিজাতদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার মাধ্যম।

ইউরোপে ডানপন্থী জনপ্রিয়তাবাদী দলগুলো তরুণদের হতাশাকে পুঁজি করে উত্থান ঘটাচ্ছে।

ফলে অনেক জেন-জি মনে করছে, “ভোট দিলেও কিছু পরিবর্তন হয় না।” এভাবে গণতন্ত্র ধীরে ধীরে আস্তাকুঁড়ে ঠাঁই নিচ্ছে।

আন্দোলনের নতুন চেহারা: অনলাইন থেকে রাস্তায়

Gen Z আর আগের প্রজন্মের মতো দলভিত্তিক রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। তারা আন্দোলন করে হ্যাশট্যাগ দিয়ে, ক্যাম্পেইন চালায় ইনস্টাগ্রামে, তারপর রাস্তায় নামে।

হংকং-এ গণতন্ত্রের দাবিতে তরুণদের আন্দোলন।

চিলি ও কলম্বিয়া-তে শিক্ষাব্যবস্থা ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ।

মধ্যপ্রাচ্যে নারীর অধিকার ও স্বাধীনতার দাবিতে তরুণদের সোচ্চার হওয়া।

সবখানেই দেখা যাচ্ছে— তরুণদের অস্থিরতা এখন এক বৈশ্বিক স্রোত।

সামনে কী অপেক্ষা করছে?

১. গণতন্ত্রের পুনর্গঠন
তরুণরা হয়তো এক নতুন ধরণের “ডিজিটাল গণতন্ত্র” তৈরি করবে, যেখানে সরাসরি ভোট বা অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে নীতিনির্ধারণে অংশগ্রহণ সম্ভব হবে।

২. কর্তৃত্ববাদের উত্থান
যদি গণতন্ত্র তরুণদের আস্থা ফেরাতে ব্যর্থ হয়, তবে তারা হতাশ হয়ে কর্তৃত্ববাদী শক্তির উত্থান সহ্য করতে পারে। ইতিহাস বলে— হতাশ তরুণ সমাজ কর্তৃত্ববাদকে সহজেই মেনে নেয়।

৩. স্থায়ী অস্থিরতা
অর্থনৈতিক বৈষম্য ও জলবায়ু সংকট যদি না কমে, তবে Gen Z আন্দোলন, বিক্ষোভ ও প্রতিবাদের মধ্যেই পরিণত হবে এক স্থায়ী বিদ্রোহী প্রজন্মে।

আজকের পৃথিবী এক কঠিন প্রশ্নের মুখোমুখি: গণতন্ত্র কি তরুণদের স্বপ্ন পূরণে সক্ষম?

যদি উত্তর নেতিবাচক হয়, তবে গণতন্ত্র সত্যিই ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে চলে যাবে। আর তার জায়গা নেবে হয়তো এক নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতা, যেখানে Gen Z হবে পথপ্রদর্শক। তারা হয়তো এমন এক পৃথিবী তৈরি করবে, যেখানে স্বচ্ছতা, সমতা আর ন্যায়বিচার নতুন রূপে ফিরে আসবে। কিন্তু ততদিন পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে জেন-জি অস্থিরতা অব্যাহত থাকবে— এক অশান্ত ভবিষ্যতের পূর্বাভাস হিসেবে।

লেখক: রেজাউল করিম রেজা
সাংবাদিক, সংগঠক ও সাবেক ছাত্রনেতা
reza13.journalist@gmail.com

বড় জয়ে বিশ্বকাপ শুরু বাংলাদেশের

৩ অক্টোবর, ২০২৫, ১২:৪১

সহজ ম্যাচ কঠিন করে অবশেষে জিতল বাংলাদেশ

৩ অক্টোবর, ২০২৫, ১২:৩৬

ভাষাসৈনিক আহমদ রফিক আর নেই

২ অক্টোবর, ২০২৫, ১১:১০

মোহাম্মদপুরে এলজিইডির ড্রাইভার রুহুলের ‘সাম্রাজ্য’

২ অক্টোবর, ২০২৫, ৬:০৯

ঢাকা বিমানবন্দরে সাংবাদিক লাঞ্ছিত: এনসিপি দায়ীদের শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেবে

২ অক্টোবর, ২০২৫, ৫:১০

ইসরায়েলের বাধা উপেক্ষা করে এগিয়ে যাচ্ছে ফ্লোটিলার ৩০ নৌযান

২ অক্টোবর, ২০২৫, ৩:২০

ভারত-পাকিস্তান নারী বিশ্বকাপ ম্যাচে হ্যান্ডশেক নিষেধাজ্ঞা

২ অক্টোবর, ২০২৫, ২:৪৬

নিম্নচাপটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত, বন্দরগুলোতে ৩ নম্বর সতর্কসংকেত

২ অক্টোবর, ২০২৫, ২:২২

Gen Z-এর হতাশা ও গণতন্ত্রের সংকট

২ অক্টোবর, ২০২৫, ৯:১১

চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত

১ অক্টোবর, ২০২৫, ৬:৪১

অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে জর্জরিত এলজিইডি: প্রমোশন না পেয়ে হতাশ শত শত প্রকৌশলী

২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৩:১১

৬ কোটি টাকায় এলজিইডির বড় প্রকল্পের পরিচালক তোফায়েল আহমেদ

১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১১:০৮

এলজিইডির এলকেএসএস’এর হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজার নুরুল ইসলামের খুঁটির জোর কোথায়?

৩০ এপ্রিল, ২০২৫, ৮:০৭

আবাসিক এলাকায় গরু-মুরগী খামার: চিথলিয়ার পরিবেশ বিপর্যয়

২৮ আগস্ট, ২০২৫, ৮:২১

প্রধান প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেনের ভূমিকায় প্রশ্ন

১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৬:২৪

জুয়েল : একজন প্রতিভাবান ক্ষণজন্মা কণ্ঠশিল্পীর নাম

১৪ জানুয়ারি, ২০২২, ৮:৫৯

ভবন দখল করে রাখার অভিযোগে: ডিআরইউ’র বিরুদ্ধে আইনি নোটিশ

২৩ জুলাই, ২০২৫, ৪:০৬

সর্বকনিষ্ঠ মহিলা ক্যান্ডিডেট মাস্টার ৯ বছরের ওয়ারিসা

৭ জুলাই, ২০২৫, ৭:৪২

৫০ টাকার নতুন নোট বাজারে আসছে

৪ জানুয়ারি, ২০২৩, ৭:৩৪

এলজিইডিতে আধিপত্য বিস্তারে মরিয়া হানিফ মৃধা

৫ অক্টোবর, ২০২৪, ৬:৩৮


উপরে