যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের এক ডজন কর্মকর্তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। এই কর্মকর্তারা ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে তদন্তে জড়িত ছিলেন জানিয়েছে সিবিএস নিউজ।
পাশাপাশি আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএইডের কয়েক ডজন সিনিয়র কর্মকর্তাকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। তারা প্রেসিডেন্টের নির্বাহী আদেশ প্রতিপালন না করার চেষ্টা করছিলেন বলে অভিযোগ আনা হয়েছে।
তবে ছুটিকালীন সময়ে তারা পূর্ণ বেতন ও অন্য সুবিধা পেতে থাকবেন। যুক্তরাষ্ট্রের এই সংস্থাটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন সংস্থা। এটি ২০২৩ সালে ৬৮ বিলিয়ন ডলার অর্থ ব্যয় করেছে। ওদিকে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আরও তিনটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করবেন বলে মনে করা হচ্ছে, যার একটি সামরিক বাহিনীতে থাকা ট্রান্সজেন্ডারদের বিষয়ে।
এছাড়া কোভিড ভ্যাকসিন না নেয়ার কারণে যেসব সেনা সদস্যকে বাদ দেয়া হয়েছিল, তাদেরকে পুনর্বহালের বিষয়েও একটি আদেশে স্বাক্ষর করবেন তিনি। মি. ট্রাম্প ব্যাপকভাবে অবৈধ অভিবাসীদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর কথা বলার পর রবিবার অন্তত এক হাজার অভিবাসীকে আটক করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের ফোনালাপ
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামির সাথে ফোনে কথা বলেছেন। পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেছেন, তারা বৈশ্বিক ইস্যুগুলো নিয়ে কথা বলেছেন।
ব্রুস বলেছেন, দুই দেশের বিশেষ সম্পর্কের গভীরতার প্রতি তারা দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন। মধ্যপ্রাচ্য, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন ও চীনের অশুভ প্রভাবের মতো সংঘাতের বিভিন্ন ইস্যুতে একযোগে কাজ করার বিষয়টিও তাদের আলোচনায় এসেছে।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছাড়াও ইউরোপিয়ান ও আফ্রিকান অনেক কূটনীতিকের সাথে ফোনে কথা বলেছেন মার্কো রুবিও।
ট্রেজারি সেক্রেটারির মনোনয়ন নিশ্চিত
যুক্তরাষ্ট্রের সেনেট দেশটির অর্থমন্ত্রী অর্থাৎ ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্টের মনোনয়ন নিশ্চিত করেছে। যুক্তরাষ্ট্র সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বগুলোর একটি পালন করবেন তিনি। কর নীতি, আন্তর্জাতিক অর্থায়ন, শুল্ক আরোপ কিংবা নিষেধাজ্ঞার মতো বিষয়গুলো নিয়ে তিনি কাজ করবেন।
সেনেটে তার নিয়োগের পক্ষে ৬৮ ভোট আর বিপক্ষে ২৯ ভোট পড়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০২৪ সালের নির্বাচনের জন্য প্রচারণা শুরুর প্রথম দিকেই স্কট বেসেন্ট তাকে সমর্থন দিয়েছিলেন।
গুগল ম্যাচে মেক্সিকো উপসাগরের নাম পাল্টাচ্ছে
যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী প্রযুক্তি কোম্পানি গুগল জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে অফিসিয়াল সিস্টেমে নাম পাল্টালেই তারা গুগল ম্যাপে ‘মেক্সিকো উপসাগরের’ নাম পাল্টিয়ে ‘আমেরিকা উপসাগর’ রাখবেন। তবে এটি শুধু যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবহারকারীদের জন্য প্রযোজ্য হবে। সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ দেয়া এক পোস্টে গুগল জানিয়েছে, পরিবর্তনটা শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই দেখা যাবে। মেক্সিকোতে এটা ‘মেক্সিকো উপসাগর’ই থাকবে।
আর এই দুই দেশের বাইরে গুগল ব্যবহারকারীরা দু’টি নামই দেখতে পাবেন। এর আগে ট্রাম্প প্রশাসন থেকে মেক্সিকো উপসাগরের নাম পরিবর্তন করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের সমাপ্তির কথা বললেন ট্রাম্প
ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও যুক্তরাষ্ট্রের জন্মসূত্রে নাগরিকত্বে সুযোগের অবসানের কথা বলেছেন। এবার দায়িত্ব গ্রহণ করেই তিনি এ বিষয়ে একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন। জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের অধিকার দেশটির আইনে সুরক্ষিত ও এই অধিকারের বিষয়টি সংবিধানে রয়েছে।
ফ্লোরিডায় রিপাবলিকানদের এক অনুষ্ঠানে মি. ট্রাম্প বলেছেন সংবিধানের ১৪তম সংশোধনী করা হয়েছিল শুধুমাত্র আগে যারা দাস ছিল তাদের জন্য। উনিশ শতকে ওই সংশোধনীতে দাস প্রথার অবসান ঘটানো হয়। ওই অনুষ্ঠানে তিনি তার এবারের মেয়াদে তার নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের ‘সবচেয়ে মহান চার বছরের একটি’ হবে বলে অঙ্গীকার করেছেন।
তিনি বলেছেন, আমরা যদি দৃঢ় থাকি ও একসাথে লড়াই করি, তাহলে কেউ আমাদের থামাতে পারবে না। রিপাবলিকান আইনপ্রণেতাদের উদ্দেশ্যে বলছিলেন তিনি। তিনি তার বক্তৃতায় যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীতেও বড় ধরনের পরিবর্তন আনার কথা বলেছেন।
কলম্বিয়ার বিষয়ে যা বললেন ট্রাম্প
ফেরত পাঠানো অভিবাসীদের বহনকারী যুক্তরাষ্ট্রের দুইটি সামরিক বিমানকে কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট বোগোটায় অবতরণ করতে না দেওয়ায় দেশটির উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ ও নিষেধাজ্ঞা আরোপের নির্দেশ দিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
তিনি বলেছেন, কলম্বিয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আসা ‘সব পণ্যের উপর’ অবিলম্বে শুল্ক কার্যকর হবে এবং এক সপ্তাহের মধ্যে এই শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে ৫০ শতাংশে উন্নীত হবে।
জবাবে কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেট্রো বলেছেন, তিনিও যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের উপর পাল্টা ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবেন।
ট্রাম্প বলেছেন তার জয় কলম্বিয়ার বিষয়ে বিশ্ব নেতাদের একটি বার্তা দিয়েছে। তিনি বলেন, প্রতিটি দেশের কাছে আমরা এটা পরিষ্কার করেছি যে তাদের লোকজনকে ফেরত নিতে হবে। এটি না করলে তাদের বড় অর্থনৈতিক মূল্য দিতে হবে।
সূত্র: বিবিসি