মানুষ অসুস্থ হলে রোগ সারাতে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। খেতে শুরু করেন ভুরি ভুরি ওষুধ। এতে করে অনেকে ভালো হয়ে ওঠেন, আবার অনেকেই শেষ পর্যন্ত রোগ থেকে মুক্তি না পেয়ে প্রাণ হারান। কিন্তু আপনি কি জানেন, শরীর নিজেই নিজেকে সুস্থ ও নিরোগ রাখার ক্ষমতা রাখে?
মনোবিদদের মতে, ‘আমাদের শরীর পুরোপুরি নির্ভর করে আমাদের মস্তিষ্ক বা ব্রেইনের ওপর। এ মস্তিষ্কের এত শক্তি যে, এর পুরো শক্তি কাজে লাগানো তো দূরের কথা, দশ ভাগেরও কম অংশ আমরা জীবিত অবস্থায় ব্যবহার করতে পারি।’
চিকিৎসকরা বলছেন, মস্তিষ্কের চার অংশের শুধুমাত্র প্রথম অংশ কনসাস মাইন্ড ব্যবহার করে মানুষ কাজ করে। খুব কম মানুষই আছেন, যারা মস্তিষ্কের দ্বিতীয় অংশ অর্থাৎ সাবকনসাস মাইন্ডকে কাজে লাগাতে পারেন!
আয়ুর্বেদ ও চিকিৎসাশাস্ত্র অনুযায়ী, মস্তিষ্কের দ্বিতীয় অংশ অর্থাৎ সাব কনসাস মাইন্ডকে কার্যকর করে তুলতে হলে মেডিটেশনের বিকল্প নেই। তবে যাদের মনের জোর বেশি এবং নিজের বিশ্বাস ও মত থেকে এক চুলও অন্যের কথায় নড়েন না, এমন মানুষ চাইলে এ সাবকনসাস মাইন্ডকে কাজে লাগাতে পারেন।
চমকপ্রদ তথ্য হলো, ‘এ সাবকনসাস মাইন্ডকে কাজে লাগাতে পারলেই আপনার শরীর রোগগ্রস্ত হওয়ার পরিমাণ কমতে শুরু করবে।’ কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মস্তিষ্ক, মন আর শরীরের মধ্যে নিবিড় সম্পর্কের কথা। এ সম্পর্ককে কাজে লাগিয়ে শরীরের যেকোনো অসুখ সহজেই সারিয়ে তুলতে পারে আপনার ব্রেইন, এমনটাই অভিমত গবেষকদের।
গবেষকরা আরও বলছেন, চিন্তা আর ভয় মানুষের শরীরে যেমন নানান রোগের কারণ, ঠিক তেমনি বিশ্বাস আর মনের শান্ত অবস্থা মানুষের শরীরের অনেক রোগ সারিয়ে তোলারও কারণ।
অন্যের অনিষ্ট করার চিন্তা, ক্ষোভ, রাগ- এসব নেতিবাচক বিষয়ে যখন মস্তিষ্ক বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়ে, তখন মস্তিষ্কে এমন কিছু রাসায়নিক বিক্রিয়া হয়, যা আমাদের শরীরকে ধীরে ধীরে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়।
অথচ পজিটিভ চিন্তার পরিমাণ বাড়ানোর পাশাপাশি নিজেকে নতুন করে জানার অভ্যাস, নিজের নতুন কোনো গুণকে জানার চেষ্টায় থাকলে শরীর ধ্বংস নয় বরং শরীরকে সুরক্ষিত রাখার রাসায়নিক পদার্থগুলো মস্তিষ্কে তৈরি হতে শুরু করে। এমনটাই জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের জৈব প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য কেন্দ্র (NCBI)।
মনোবিজ্ঞানেও প্রমাণ মিলেছে যে, ‘রোগ হওয়ার পরও আপনি যদি শতভাগ বিশ্বাস করেন, আপনার কিছুই হয়নি এবং খুব দ্রুত আপনি সুস্থ হয়ে উঠছেন, তাহলে সুফল পাবেন।’
‘আপনার মনে যদি কোনো প্রকার ভয় না থাকে, কিংবা সত্যের সাহস থাকে, তবে আপনার মধ্যে এ উপায় কাজ করতে শুরু করবে।’ মানসিক অবস্থার এ স্টেজে থাকলে গবেষকরা বলছেন, ‘মস্তিষ্কে বিশেষ ধরনের রাসায়নিক পদার্থের সৃষ্টি হয়, যা শরীরকে সুস্থ রাখে। এর ফলে আপনি নিরোগ থাকার পাশাপাশি দীর্ঘায়ুরও অধিকারী হবেন।’
তবে মনে রাখা জরুরি, ‘আপনি যতই মনোবল দৃঢ় করে সাবকনসাসের জাদু কাজে লাগাতে চান না কেন, অস্বাস্থ্যকর ডায়েটলিস্ট ফলো করলে কিন্তু মোটেও তা কার্যকর হবে না। এ উপায়কে কাজে লাগাতে একটি নির্দিষ্ট রুটিনে নিজেকে পরিচালিত করুন। পাশাপাশি সুষম খাবারে অগ্রাধিকার দিতে হবে।’
সংবাদচিত্র ডটকম/লাইফস্টাইল