পৌষের শেষদিকে এসে জেঁকে বসেছে শীত। উত্তরের জনপদে বইছে কনকনে বাতাস। সিলেট অঞ্চলের শ্রীমঙ্গলে বয়ে যাচ্ছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। জনজীবনে নেমে এসেছে স্থবিরতা।
রাজধানী ঢাকায়ও দেশের বিভিন্ন জেলায় বড়েছে শীতের তীব্রতা। তাপমাত্রা এক দিনে কমে গেল ৬ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
গতকাল মঙ্গলবার (৪ ডিসেম্বর) ঢাকার জনজীবন ছিল অনেকটাই শীতকাতর। বুধবারও তীব্র শীত অনুভব করছে ঢাকাসহ পুরো দেশবাসী। সকাল থেকে কুয়াশাচ্ছন্ন পুরো শহর। কনকনে ঠান্ডায় ভিড় বেড়েছে চায়ের দোকানে।
রাজধানীতে অফিসগামী বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাঁরা সকালে অফিসে যাওয়ার সময় শীতের কারণে কিছুটা অসুবিধা বোধ করছেন। শীতের কারণে মোটরসাইকেলে অফিসে যেতে পারছেন না। গতকাল ও আজ বুধবার শীত জেকে বসছে বলে জানান তারা। এতে করে স্বাভাবিক কাজকর্মে বিপাকে পড়তে হচ্ছে তাঁদের।
ঢাকায় এত ঠান্ডা কেন- এমন প্রশ্নে আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক বলেন, ‘রাজধানী ঢাকায় দিনের তাপমাত্রা কমে যাওয়ার পাশাপাশি বইছে হিমেল হাওয়া। সেইসঙ্গে ঘন কুয়াশায় ঠান্ডাটা তীব্রভাবে অনুভূত হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘রাতের তাপমাত্রা গত কয়েক দিন ধরেই কম রয়েছে। দিনে সূর্যালোক থাকায় সেটা তীব্রভাবে টের পাওয়া যায়নি। তবে আজ (মঙ্গলবার) দেশের অনেক জায়গায় ৪ থেকে ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা কমেছে। আর ঢাকায় দিনের তাপমাত্রা কমেছে ৬ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।’
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, গত সোমবার ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, মঙ্গলবার তা ৬ দশমিক ৪ ডিগ্রি কমে ১৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামে।
এদিকে মঙ্গলবার ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৪ দশমিক ৫, যা সোমবার ছিল ১৪ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
মঙ্গলবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল শ্রীমঙ্গলে ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কুমিল্লা ও রাজশাহীর বদলগাছীতে তাপমাত্রা ছিল ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে। এ ছাড়া বেশির ভাগ অঞ্চলে তাপমাত্রা ১২ থেকে ২৩ ডিগ্রির ঘরে ওঠা-নামা করেছে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল টেকনাফে, ২৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
হঠাৎ করে তাপমাত্রা এতটা কমে যাওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক বলেন, ‘ভারতের দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ ও বিহার অঞ্চলে একটা কুয়াশা অঞ্চল ছিল। সেটি ধীরে ধীরে বেড়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। এ জন্য শৈত্যপ্রবাহ না থাকলেও বেশি শীত অনুভূত হচ্ছে। এই অবস্থা আরও চার থেকে পাঁচ দিন থাকবে।’
আগামী ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য মাত্রার কোনো শৈত্যপ্রবাহের আলামত নেই বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। তবে বিচ্ছিন্নভাবে দেশের কোথাও কোথাও তাপমাত্রা কমতে পারে। চলতি মাসে এক থেকে দুটি মাঝারি ও তীব্র শৈত্যপ্রবাহের পূর্বাভাস থাকলেও সেটি অনুভূত হবে আরও পরে।
সংবাদচিত্র ডটকম/আবহাওয়া