সাফজয়ী বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দলের সদস্য কৃষ্ণা রানি সরকার ও শামসুন্নাহার সিনিয়রের ডলার ও টাকা চুরির অভিযোগ পাওয়া গেছে। দলের অন্যান্য সদস্যের লাগেজও পাওয়া গেছে ভাঙা অবস্থায়। এ অভিযোগ নিয়ে অবশ্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস কর্তৃপক্ষ কোনো কথা বলছে না। তবে শাহজালাল বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিমানবন্দরে লাগেজ থেকে চুরির ঘটনা সত্য নয়।
বাফুফের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বাংলাদেশ সাফজয়ী নারী দলের সদস্য কৃষ্ণা রানি সরকারের ব্যাগ থেকে ৫০০ ডলার (প্রায় ৫২ হাজার টাকা) এবং নগদ ৫০ হাজার টাকা চুরি হয়ে গেছে। সানজিদা আক্তারের ব্যাগ থেকে ৫০০ ডলার ও সামসুন্নাহার সিনিয়রের ব্যাগ থেকে হারিয়েছে ৪০০ ডলার (প্রায় ৪২ হাজার টাকা)। মেয়েদের ব্যাগ থেকে পোশাক, প্রসাধনীসহ উপহার সামগ্রীও খোয়া যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
সাফজয়ী বাংলাদেশ মহিলা ফুটবল দল গতকাল বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিমানের ফ্লাইট বিজি-৩৭২ তে করে শাহজালাল বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান। ছাদ খোলা বাসে চড়িয়ে তাদের নিয়ে যাওয়া হয় বাফুফে দপ্তরে। হাতে পতাকা ও ব্যানার নিয়ে স্লোগানে স্লোগানে শিরোপাজয়ী মেয়েদের স্বাগত জানায় হাজারো মানুষ। তার পরদিনই এল চুরির এই অভিযোগ।
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে লাগেজ হ্যান্ডেলিংয়ের দায়িত্ব বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ওপর। আবার নেপাল থেকে সাফজয়ী মেয়েরা দেশে এসেছে বিমানেরই একটি ফ্লাইটে। ফলে লাগেজ থেকে ডলার, টাকা ও প্রসাধনী চুরির অভিযোগের দায় বিমান কর্তৃপক্ষের। এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য জানতে সকাল থেকেই রাজধানীর কুর্মিটোলার বলাকা ভবনের সামনে অবস্থান করছেন গণমাধ্যমকর্মীরা। তবে বিমান কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে লুকোছাপার আচরণ করছে।
এ অভিযোগের বিষয়ে প্রশ্ন করলে বিমানের জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক তাহেরা খন্দকার বলেন, ‘আমরা আমাদের সংশ্লিষ্ট বিভাগকে খতিয়ে দেখতে বলেছি যে, অভিযোগটা ফরমালি এসেছে কিনা।’
এদিকে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ আজ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বিমানবন্দরে সাফজয়ী মেয়েদের লাগেজ চুরির ঘটনা সত্য নয়। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) প্রতিনিধিরা গতকাল সম্পূর্ণ অক্ষত ও তালাবদ্ধ অবস্থায় বিমানের কাছ থেকে সাফজয়ী মেয়েদের লাগেজ বুঝে নিয়ে বিমানবন্দর ত্যাগ করেন।
শাহজালাল বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম বিবৃতিতে বলেন, ফুটবল দলের দুই নারী সদস্যের ব্যাগ থেকে ডলার ও টাকা চুরির অভিযোগ পাওয়া যায়। এ অভিযোগের ভিত্তিতে শাহজালাল বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে। এ ঘটনার সত্যতা প্রতীয়মান হয়নি বলে নিশ্চিত হয়েছে।
দুপুর দুইটা ৮ মিনিটে শেষ ব্যাগেজ ড্রপ হয়। এরপর বাফুফে প্রটোকল প্রতিনিধি ও দলের দুজন অফিসিয়াল প্রতিনিধি লাগেজ ট্যাগ চেক করে সম্পূর্ণ অক্ষত ও তালাবদ্ধ অবস্থায় বিমান কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে লাগেজ বুঝে নিয়ে বিমানবন্দর ত্যাগ করেন।
এদিকে বিমানবন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জিয়াউল হক বলেন, ‘আমরা সংবাদপ্রাপ্তির পর স্বপ্রণোদিত হয়ে বিষয়টি তদন্ত করছি। তদন্ত শেষে বলা যাবে আসল ঘটনা কী?’
সংবাদচিত্র ডটকম/অপরাধ