উত্তর আফ্রিকার দেশ লিবিয়ার পূর্বাঞ্জলে ঘূর্ণিঝড় ড্যানিয়েলের প্রভাবে ব্যপক প্রাণহানির ঘটনায় বাংলাদেশ থেকে ত্রাণ সামগ্রী পাঠানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গণমাধ্যমকে তিনি এ তথ্য জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘লিবিয়ার বন্যা দুর্গত মানুষের জন্য ওষুধ ও শুকনো খাবারসহ ত্রাণ সামগ্রী পাঠাচ্ছে বাংলাদেশ সরকার।’
ঘূর্ণিঝড় ড্যানিয়েলের তাণ্ডবে গত দুই দিনে লিবিয়ায় প্রায় ২ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ প্রায় ৬ হাজার। বন্যায় হতাহত আরও বাড়তে পারে বলে শঙ্কা কর্তৃপক্ষের। এ অবস্থায় রাষ্ট্রীয় সব সংস্থাকে পরিস্থিতি মোকাবিলার নির্দেশ দিয়েছে লিবিয়ার অন্তর্বর্তী সরকার।
লিবিয়ার পূর্বাঞ্চল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দেরনা শহরের দুটি বাঁধ বন্যার স্রোতে ভেঙে যাওয়ার পর এই বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। এসময় সেখানকার পুরো সম্প্রদায় সাগরে ভেসে যায় বলেও জানানো হয়।
পূর্বাঞ্চলীয় সেনাবাহিনীর মুখপাত্র আহমেদ আল-মোসমারি বলেন, দেরনায় বাঁধ ভেঙে শহরের ভেতরে পানি প্রবেশ করে। তিনটি সেতু সম্পূর্ণভাবে ধসে পড়ে। আশপাশের এলাকাগুলোতে পানি ছড়িয়ে পড়ে এবং সেখানকার বাসিন্দারা সমুদ্রে ভেসে যায়। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
পূর্বাঞ্চলের শহরগুলোতে জারি করা হয়েছে কারফিউ। বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে স্কুল ও দোকানপাট। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চল বেনগাজি, দেরনা ও আল-মার্জ।
রাষ্ট্রীয় সব সংস্থাকে পূর্বাঞ্চলের বন্যা ও ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলার নির্দেশ দিয়েছে লিবিয়ার অন্তর্বতী সরকার। এদিকে, তিন দিনের শোক ঘোষণা ঘোষণা করেছে দেশটির পূর্বাঞ্চল-ভিত্তিক সরকার।
লিবিয়ায় জাতিসংঘের অফিস বলছে, ঘূর্ণিঝড়টি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে তারা। এসময় জরুরি ত্রাণ সহায়তার দেয়ার আশ্বাসও দেয়া হয়।
গত সপ্তাহে গ্রিসে আছড়ে পড়ার পর রোববার লিবিয়ায় আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় ড্যানিয়েল। এসময় ভারী বৃষ্টিতে দেশটির পূর্বাঞ্চলে দেখা দেয় ভয়াবহ বন্যা। প্লাবিত হয় রাজধানী ত্রিপোলিসহ উপকূলীয় শহরের রাস্তা-ঘাট ও বাড়িঘর। ভেঙে পড়ে গাছপালা ও বৈদ্যুতিক খুঁটি।
লিবিয়া বর্তমানে দুই ভাগে বিভক্ত। একপক্ষ পূর্ব দিকে, অন্যপক্ষ পশ্চিম দিকের অঞ্চলগুলো শাসন করছে। এ অবস্থায় উদ্ধার অভিযান কঠিন হবে বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের।
সংবাদচিত্র ডটকম/আন্তর্জাতিক