রাজবাড়ী জেলার ৫টি উপজেলা, ৩টি পৌরসভা ও ৪২টি ইউনিয়নে ৭৪৬ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিপরীতে মাত্র ১৬৯ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার রয়েছে। এর বাইরে জেলার ৫৭৭টিতেই নেই স্থায়ী শহীদ মিনার। ফলে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরি করে বিভিন্ন দিবস পালনে করে আসছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
রাজবাড়ী জেলা মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ১৪৮টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৫৫টি, ৪৩টি কলেজের মধ্যে ৩০টি, ৭৪টি মাদ্রাসার মধ্যে ৭৩টিতে নেই শহীদ মিনার। ৪৮১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪১৯টিতে শহীদ মিনার নেই।
শিক্ষার্থীরা জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার না থাকায় স্কুল মাঠে কলা গাছ, বাঁশ ও সিমেন্টের খুঁটিসহ অস্থায়ীভাবে শহীদ মিনার তৈরি করে মাতৃভাষা দিবস, বিজয় দিবসসহ জাতীয় দিবসগুলো পালন করা হয়। প্রতিটি স্কুলে শহীদ মিনার নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা উচিত। শহীদ মিনার না থাকলে মাতৃভাষা সম্পর্কে নতুন প্রজন্ম কিভাবে জানবেন। মাতৃভাষা সম্পর্কে জানতে হলে অবশ্যই প্রাথমিক, মাধ্যমিক, মাদ্রাসা ও কলেজ থেকে প্রতিটি শিক্ষার্থীদের শিখতে হবে। কিন্তু দেখা যায় সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ গুরুত্বপূর্ণ অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোনো শহীদ মিনার নেই।
দেশসেরা স্বাবলম্বী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম বলেন, আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার রয়েছে। মাতৃভাষা সম্পর্কে জানতে হলে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার জরুরি প্রয়োজন। বিদ্যালয়গুলো স্থানীয়ভাবে শহীদ মিনার নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারেন।
রাজবাড়ী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার অহীন্দ্র কুমার মণ্ডল বলেন, সরকার নির্ধারিত কোনো বরাদ্দ না থাকায় সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। তবে নিজ উদ্যোগে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার তৈরি করে নিতে পারেন। এ বিষয়ে এলাকার শিক্ষানুরাগীদের এগিয়ে আসা উচিত।
রাজবাড়ী জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. হাবিবুর রহমান বলেন, মাতৃভাষা দিবস পালন করতে অবশ্যই শহীদ মিনার থাকা প্রয়োজন। পর্যায়ক্রমে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হবে। সরকারের পাশাপাশি এলাকার সচেতন নাগরিকদের এগিয়ে আসতে হবে।
আফরা ইসলামিয়া সিদ্দীকিয়া আলিম মাদরাসার সহকারী শিক্ষক মো. মোসলেম উদ্দিন বলেন, প্রতি বছরের মতো এবারও অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরি করে আমরা মাতৃভাষা দিবস যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে পালন করব। আগামী ২ মার্চ একটি মিটিং হওয়ার কথা রয়েছে। এ মিটিংয়ে স্থায়ীভাবে শহীদ মিনার নির্মাণের কথা আলোচনা হবে।
সংবাদচিত্র ডটকম/সারা দেশ