মধ্যপ্রাচ্যের ১২টিরও বেশি দেশে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। অঞ্চলজুড়ে মোতায়েন রয়েছে প্রায় ৪০ হাজার মার্কিন সামরিক ও বেসামরিক কর্মী, রয়েছে বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, যুদ্ধবিমান, যুদ্ধজাহাজ ও নৌবহর। ইরাক ও আফগানিস্তানের যুদ্ধকালীন সময়েও মার্কিন বাহিনীর উপস্থিতি ছিল নজরকাড়া।
ইসরায়েল-ইরান উত্তেজনা ও লোহিত সাগরে হুথিদের হামলার প্রেক্ষাপটে গত বছর অঞ্চলজুড়ে মার্কিন সেনা উপস্থিতি বাড়ানো হয়। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ইরানি হামলার আশঙ্কায় কিছু ঘাঁটি থেকে মার্কিন কর্মীদের আংশিক সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
কাতার: আল উদেইদ ঘাঁটি মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ডের (সেন্টকম) ফরওয়ার্ড হেডকোয়ার্টার। এখান থেকে ইরাক, সিরিয়া ও আফগানিস্তানে সামরিক অভিযান পরিচালিত হয়েছে। প্রায় ১০ হাজার সেনা মোতায়েন রয়েছে এখানে। সম্প্রতি নিরাপত্তাজনিত কারণে রানওয়ে থেকে বেশ কিছু বিমান প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।
বাহরাইন: এখানে মার্কিন নৌবাহিনীর পঞ্চম ফ্লিটের সদর দফতর অবস্থিত। এটি পারস্য উপসাগর থেকে পূর্ব আফ্রিকায় যুক্তরাষ্ট্রের নৌতৎপরতা পরিচালনা করে। বাহরাইনে প্রায় ৯ হাজার মার্কিন সেনা এবং একাধিক যুদ্ধজাহাজ ও নৌবাহিনীর সহায়ক যান অবস্থান করছে।
কুয়েত: ক্যাম্প আরিফজান ও আলী আল-সালেম বিমান ঘাঁটিতে মার্কিন বাহিনীর বড় উপস্থিতি রয়েছে। ক্যাম্প আরিফজান একটি লজিস্টিক হাব হিসেবে ব্যবহৃত হয়, যেখানে প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার সেনা মোতায়েন। রয়েছে ড্রোন ও গোয়েন্দা সরঞ্জাম।
সংযুক্ত আরব আমিরাত: আল ধাফরা বিমান ঘাঁটিতে মার্কিন বিমানবাহিনীর উপস্থিতি রয়েছে। গোয়েন্দা তথ্য ও কম্ব্যাট অপারেশনের জন্য এটি একটি কৌশলগত ঘাঁটি।
ইরাক: বর্তমানে ইরাকে মোতায়েন রয়েছে আড়াই হাজার মার্কিন সেনা। অতীতে এই সংখ্যা ১ লাখ ৬০ হাজার ছাড়িয়েছিল। বর্তমানে আল আসাদ ও ইরবিল ঘাঁটি থেকে মার্কিন বাহিনী আইএসবিরোধী অভিযানে কাজ করছে।
সিরিয়া: সিরিয়ায় মার্কিন বাহিনীর প্রায় ২ হাজার সদস্য রয়েছে। তারা ইসলামিক স্টেটের উত্থান ঠেকাতে স্থানীয় বাহিনীর সঙ্গে কাজ করছে। জুনে যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা দেয়, ৮টি সামরিক ঘাঁটি একত্র করে একটি ঘাঁটিতে রূপান্তর করা হবে। এছাড়া সিরিয়ার রাজনৈতিক বাস্তবতায় পরিবর্তন আনতে দেশটি আলোচনার পথে হাঁটছে।
মোট ঘাঁটির সংখ্যা: স্বতন্ত্র সংস্থাগুলোর মতে, পুরো মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অন্তত ১৯টি সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। এর মধ্যে সৌদি আরব, বাহরাইন, মিশর, ইসরায়েল, জর্ডান, কুয়েত, কাতার, সিরিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইরাকে স্থায়ী বা আধা-স্থায়ী ঘাঁটি রয়েছে। তুরস্ক ও জিবুতির ঘাঁটিগুলিও মাঝেমধ্যে মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলের মিশনে ব্যবহৃত হয়।
সংবাদচিত্র ডটকম/আন্তর্জাতিক