মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্কের সমাধান দুই দেশই নিজেদের মধ্যে বের করে নেবে। কাশ্মীরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষিতে যখন অঞ্চলজুড়ে উদ্বেগ ও সামরিক উত্তেজনা চরমে, তখন ট্রাম্প এই মন্তব্য করেন, জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর মঙ্গলবারের হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যার মধ্যে একজন নেপালের নাগরিকও রয়েছেন। হামলার দায় স্বীকার করেছে ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (TRF) নামের একটি গোষ্ঠী, যা ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোর দাবি অনুযায়ী পাকিস্তানভিত্তিক নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার একটি শাখা। জাতিসংঘ লস্কর-ই-তৈয়বাকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে।
নয়া দিল্লির অভিযোগ, পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় এই ধরনের গোষ্ঠীগুলো কাজ করে আসছে। তবে ইসলামাবাদ বরাবরই এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, তারা কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে সমর্থন দেয় না, কেবল কাশ্মীরের ‘আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার’ আন্দোলনের প্রতি নৈতিক ও কূটনৈতিক সমর্থন জানায়।
বিশ্লেষকদের মতে, পেহেলগামের এ হামলা গত দুই দশকে কাশ্মীরে বেসামরিক মানুষের ওপর অন্যতম ভয়াবহ হামলা। হামলার জেরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা আরও বেড়েছে, আর আশঙ্কা তৈরি হয়েছে সম্ভাব্য সামরিক সংঘাতের।
এই পরিস্থিতিতে পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দিতে রোম যাওয়ার পথে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, “ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে দীর্ঘদিনের সীমান্তবিরোধ রয়েছে, যা আমি জানি। তবে আমি দুই দেশের নেতাদের ভালো করেই চিনি এবং আমার বিশ্বাস, তারা কোনো না কোনো পথ খুঁজে নেবে।”
তবে এই বিষয়ে তিনি দুই দেশের নেতাদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেছেন কিনা—সেই প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যান।
পেহেলগামের হামলার পর দুই দেশের মধ্যে একাধিক পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপ দেখা গেছে। ভারত পাকিস্তানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সিন্ধু পানি বণ্টন চুক্তি স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে। অন্যদিকে, পাকিস্তান ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ও আকাশসীমা ব্যবহারে কড়াকড়ি আরোপ করেছে এবং একটি সীমান্ত ক্রসিংও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
কাশ্মীরে এখন ভারতীয় বাহিনী ব্যাপক সাঁড়াশি অভিযান চালাচ্ছে জঙ্গিদের খোঁজে, যার ফলে অঞ্চলজুড়ে অস্থিরতা আরও বাড়ছে। এই প্রভাব পড়েছে ভারতের শেয়ারবাজারেও—শুক্রবার বাজারে সাময়িক পতন দেখা গেছে।
এদিকে, নিয়ন্ত্রণ রেখায় টানা দ্বিতীয় রাতেও ভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে গুলি বিনিময়ের খবর জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম, যদিও এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর নিশ্চিত করা হয়নি।
সংবাদচিত্র ডটকম/আন্তর্জাতিক