কিশোরগঞ্জের মিঠামইন থেকে করিমগঞ্জ উপজেলার মরিচখালী পর্যন্ত প্রস্তাবিত ১৫.৩১ কিলোমিটার দীর্ঘ উড়াল সড়ক (এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে) প্রকল্পটি বাতিলের প্রক্রিয়ায় রাখছে সরকার।
অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যয় সংকোচন এবং পরিবেশ সংরক্ষণের কৌশলের অংশ হিসেবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সাবেক রাষ্ট্রপতি ও আওয়ামী লীগের নেতা মো. আবদুল হামিদের উদ্যোগে নেওয়া ৫ হাজার ৬৫১ কোটি টাকার এই প্রকল্পটি ২০২৩ সালের ১৭ জানুয়ারি একনেক সভায় অনুমোদিত হয়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল হাওর অঞ্চলের মিঠামইন, ইটনা ও অষ্টগ্রামের কৃষিনির্ভর জনগণের জন্য সারা বছর কার্যকর যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, কৃষিপণ্যের বিপণন সহজ করা এবং স্থানীয় অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা।
তবে প্রকল্পটির পরিবেশগত প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ বাড়তে থাকে মিঠামইন-অষ্টগ্রাম সড়ক চালুর পর। হাওরের ওপর বাঁধ দিয়ে নির্মিত সেই সড়ক চালু হওয়ার পর ২০২০ সালে অঞ্চলে আকস্মিক তীব্র বন্যা দেখা দেয়, যা প্রকল্পের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে।
বাংলাদেশ ব্রিজ অথরিটি (বিবিএ) জানিয়েছে, প্রকল্প বাতিলের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। জমি অধিগ্রহণের জন্য ইতোমধ্যে প্রাথমিকভাবে বরাদ্দ ৩০০ কোটি টাকার মধ্যে কোনো অংশ এখনো ব্যবহার না হওয়ায় তা ফেরত নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
বিবিএ সূত্রে জানা গেছে, এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে রেলপথ ও সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকের পর প্রকল্প বাতিলের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়।
সেতু বিভাগের সচিব মোহাম্মদ আবদুর রউফ গত ৭ মে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে বলেন, “হাওর অঞ্চলের জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশগত ভারসাম্যের কথা বিবেচনায় নিয়ে এই প্রকল্প বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
প্রকল্পটি মূলত ২০২৮ সালের মধ্যে বাস্তবায়নের পরিকল্পনা ছিল। তবে পরিবেশগত ঝুঁকি ও পূর্ববর্তী অভিজ্ঞতা বিশ্লেষণ করে সরকার এখন এই ধরনের স্থাপনা হাওর অঞ্চলে না করার দিকেই ঝুঁকছে।
সংবাদচিত্র ডটকম/জাতীয়