ঢাকার সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় ফের মুখোমুখি সংঘর্ষে জড়িয়েছে ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার সকাল থেকেই দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দানা বাঁধে। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সেটি ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় রূপ নেয়, ফলে ওই এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে।
পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে আধা ঘণ্টার মধ্যেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঢাকা মহানগর পুলিশের ধানমন্ডি জোনের সহকারী কমিশনার শাহ মোস্তফা তারিকুজ্জামান জানান, দুই পক্ষের প্রায় আড়াইশ থেকে তিনশ শিক্ষার্থী মুখোমুখি অবস্থানে ছিল। পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নিয়ে সবাইকে নিজ নিজ ক্যাম্পাসে ফেরত পাঠায়।
তিনি আরও বলেন, “উত্তেজনা সকাল ১০টার পর থেকেই চলছিল। সংঘর্ষের মূল কারণ এখনো নিশ্চিত নয়, তবে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে এক কলেজের শিক্ষার্থী অন্য কলেজের একজনকে বাস থেকে নামিয়ে মারধর করে। পাল্টা জবাবে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়।”
ঘটনার পর সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়ে গেছে। তবে এলাকায় এখনো অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে সতর্কতামূলকভাবে। এই সংঘর্ষ নতুন নয়। প্রায় প্রতিবছরই সায়েন্স ল্যাব সংলগ্ন ঢাকা কলেজ, সিটি কলেজ ও আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভিন্ন ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
গত ৯ ফেব্রুয়ারি সিটি কলেজ ও আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে কথা কাটাকাটি থেকে সংঘর্ষে জড়ানোর ঘটনা ঘটে।
আরও আগে, ২০২৩ সালের ১০ সেপ্টেম্বর ঢাকা কলেজ ও আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীরা সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে চলা ওই ঘটনায় ১৮ জন আহত হন। সেদিন আইডিয়াল কলেজের নামফলক খুলে নিয়ে যায় ঢাকা কলেজের কিছু শিক্ষার্থী।
পরবর্তী সময়ে পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় আইডিয়ালের শিক্ষার্থীরা ঢাকা কলেজের একটি বাসে ভাঙচুর চালায়। সায়েন্স ল্যাব মোড় থেকে এক কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থান করা এসব কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি প্রায় নিয়মিত হয়ে দাঁড়িয়েছে।
শেষ সবচেয়ে বড় সংঘর্ষটি ঘটে গত ২০ নভেম্বর, ঢাকা কলেজের ১৮৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিনে। সেদিনও সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে সিটি কলেজ ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে, যেখানে আহত হন দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী।
এর জেরে গঠন করা হয় একটি সমন্বয় কমিটি—পুলিশ ও পাঁচটি কলেজের প্রতিনিধিদের নিয়ে। উদ্দেশ্য ছিল ধানমন্ডি এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সংঘাত নিয়ন্ত্রণে আনা। কিন্তু সর্বশেষ এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে, কমিটির কার্যকারিতা নিয়ে। ‘তুচ্ছ ঘটনা’ থেকে বড় সংঘর্ষে রূপ নেওয়া এই পরিস্থিতি আদৌ আর কতদিন চলবে—সে প্রশ্ন এখন এলাকাবাসী ও অভিভাবকদের।
সংবাদচিত্র ডটকম/রাজধানী