ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে থার্ড টার্মিনাল নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি ও আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে প্রকল্প পরিচালক একেএম মাকসুদুল ইসলামের বিরুদ্ধে। প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির অনুসন্ধানে নেমেছে দুদক।
দুদক জানায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে থার্ড টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পের পিডি একেএম মাকসুদুল ইসলামের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি ও জালিয়াতির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।
৭ হাজার কোটি টাকার প্রাক্কলিত প্রকল্প ব্যয় ২২ হাজার কোটি টাকায় বৃদ্ধি করা, কম দামে দেশি বিভিন্ন সরঞ্জামাদি কিনে অনেক বেশি দামে বিদেশ থেকে আমদানি করা দেখিয়ে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া, সয়েল টেস্টে বেশি ফি ও প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি দেখানো, বালু ভরাটে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি দাম ও পরিমান দেখিয়ে ৯০০ কোটি টাকা লোপাট, এছাড়া প্রকল্পের কয়েকটি বড় বড় কাজ অন্য ঠিকাদারের নিকট বিক্রি করে হাজার কোটি টাকা কমিশন বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে পিডির বিরুদ্ধে।
সূত্র জানায়, দরপত্রে উল্লেখ রয়েছে ইউরোপীয় মানের যন্ত্রাংশ ও সরঞ্জামাদি সংযোজন করতে হবে। অথচ সেখানে ব্যাবহার করা হয়েছে কমদামের চীন ও কোরিয়ার যন্ত্রাংশ ও সরঞ্জামাদি, বিনিময়ে পিডি ঘুষ পেয়েছে হাজার কোটি টাকা। সিলিংয়ে স্পেসিফিকেশন মতো পণ্য ব্যবহার না করে নিম্ন মানের পণ্য ব্যবহার করে কোটি কোটি টাকা ঘুষ নিয়েছে পিডি মাকসুদুল ইসলাম।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে খুশি করতে মুরলসহ কিছু অযৌক্তিক কাজ দেখিয়ে প্রায় ১২ কোটি টাকা লোপাট করেছে পিডি। এভাবে নানা ভাবে অনিয়ম, দুর্নীতি স্বজনপ্রীতি, সিন্ডিকেট করে রাষ্ট্রের ৪ হাজার কোটি টাকা আত্মসাত করেছে পিডি একেএম মাকসুদুল ইসলাম।
জানা যায়, ২০১৭ সালে থার্ড টার্মিনাল নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেয় তৎকালীন সরকার। এর নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১৯ সালের ২৮ ডিসেম্বর। এতে ব্যয় ধরা হয়েছিল ২১ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকা। এরমধ্যে জাপানি সহযোগিতা সংস্থা জাইকা ঋণ হিসেবে দেয় ১৬ হাজার ১৪১ কোটি টাকা বাকি টাকা বাংলাদেশর। এই নির্মম কাজ করছে জাপানের মিতসুবিসি ও ফুজিতা এবং দক্ষিণ কোরিয়ার স্যামসাং। ২০২৩ সালে আংশিক উদ্বোধন করা হয় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল। দুদকের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি। অব্যাহত রয়েছে তদন্ত। (চলবে)
সংবাদচিত্র ডটকম/দুদক