বৃষ্টি ও উজানের ঢল কমে আসায় সিলেট-সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে সুরমার পানি সিলেট ও কানাইঘাটের সবগুলো পয়েন্টে বিপৎসীমার নিচে দিয়ে বইছে। এতে প্লাবিত এলাকাতেও কমছে বন্যার পানি। আর নতুন করে বৃষ্টির সম্ভাবনা না থাকায় পরিস্থিতির আরো উন্নতি হওয়ার কথা জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
সকাল থেকে সুরমা নদীর পানি সিলেট ও কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার নিচে নেমেছে। কুশিয়ার পানিও কিছুটা কমেছে, তবে এখনো রয়েছে বিপৎসীমার ওপরে। সিলেটের ১৩ উপজেলার বেশিরভাগ এলাকাতেই পানি কমায় জেগে উঠেছে রাস্তাঘাট। ঘরবাড়ি থেকে পানি নেমে যাওয়ায় ফিরতে শুরু করেছেন অনেকে।
সুনামগঞ্জের ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলার বন্যা পরিস্থিতিরও উন্নতি হয়েছে। তবে নতুন করে তলিয়েছে জগন্নাথপুর উপজেলার নিচু এলাকা। এছাড়া পৌরশহরের পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে।
নতুন করে বৃষ্টি বা পাহাড়ি ঢলের সম্ভাবনা না থাকায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতির আশা পানি উন্নয়ন বোর্ডের। প্রায় ২ সপ্তাহের বন্যায় দুই জেলাতে দুর্ভোগে ৭ লাখের বেশি মানুষ।
এদিকে সিলেট ও সুনামগঞ্জে বন্যার পানি কমতে শুরু করলেও দুর্ভোগ প্রকট হয়েছে বানভাসীদের কাছে। ভেঙে পড়া কাঁচা ঘরবাড়ি নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা। ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি মেরামতে সরকারি সহায়তা চেয়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। পানি নেমে গেলে তালিকা করে তাদের পুনর্বাসনের আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন।
বন্যার পানি ঘরে ওঠায় পরিবার নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে ওঠেন গোয়াইনঘাট উপজেলার রানীগঞ্জ গ্রামের ওসমান আলী। পানি কমতে শুরু করায় ফিরেছেন বাড়িতে। কিন্তু বসবাসের অবস্থা নেই তার কাঁচা ঘরে। একই অবস্থা উপজেলার অন্তত ৬ হাজার পরিবারের।
বন্যা কবলিত সিলেটের ১৩ উপজেলায় ১০ লাখের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ। তালিকা করে এসব মানুষকে পুনর্বাসনের আশ্বাস দিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী।
সুনামগঞ্জেও ঘরবাড়ি হারিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অসংখ্য পরিবার। পানি কমার সাথে সাথে বিধ্বস্ত বাড়িঘর নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন তারা। ভাঙা ঘরবাড়ি সংস্কারে সরকারি সহায়তা চেয়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ।
জেলায় কি পরিমাণ ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এখনো সে হিসাব নেই প্রশাসনের কাছে। তবে বন্যার পানি নেমে গেলে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।
এদিকে দুর্গত এলাকায় ভোগান্তির পাশাপাশি প্রকট হয়েছে খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট। সরকারিভাবে যতটুকু সহায়তা দেয়া হচ্ছে তাও প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
এর আগে গত ১১ মে সিলেটে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। নগর তলিয়ে যেতে শুরু করে ১৬ মে থেকে। ৮ দিন পর নগর থেকে নামল পানি। ১৩ দিন পর সিলেটে সুরমা নদীর পানিও বিপৎসীমার নিচে নেমেছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে সিলেট পয়েন্টে সুরমার পানি বিপৎসীমার প্রায় ১৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সংবাদচিত্র/সারাদেশ