দেখতে সাচ্চা ভদ্রলোক মনে হলেও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একজন ‘প্যাথলজিক্যাল লায়ার’ বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, মির্জা ফখরুল লোকটা সজ্জন কিন্তু কথাবার্তায় বড়ই বেসামাল। আমার বাবাও শিক্ষক ছিলেন। মির্জা ফখরুল কলেজের শিক্ষক। কিন্তু এত মিথ্যা কথা বলতে পারে। এত গালিগালাজ করতে পারে। এত বিষ তার মুখে ভাবতেও অবাক লাগে। দেখলে মনে হয় সাচ্চা ভদ্রলোক। আর কথা যখন বলে, তখন মনে হয় একজন ‘প্যাথলজিক্যাল লায়ার’।
রবিবার (২৩ জুলাই) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে বসুরহাট পৌরসভা মিলনায়তনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
কাদের বলেন, এই মিথ্যাবাদী (মির্জা ফখরুল) এখন বলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আসলে নাকি আওয়ামী লীগ দশটা আসনও পাবে না। ২০০৮ সালে এই ফখরুল এবং তার নেত্রী আওয়ামী লীগকে মাত্র ত্রিশটি আসন দিয়েছিল কিন্তু নির্বাচনে দেখা গেল ত্রিশটি আসন বিএনপি পেয়েছে। তারা যেটা আওয়ামী লীগকে দিতে চেয়েছে আল্লাহর হুকুমে সেটা তাদের ভাগ্যে জুটেছে। এবার কী হবে জানি না। এবার আরও বেপরোয়া বেসামাল হয়ে বিদেশিদের কাছে নালিশ করছে কিন্তু কিছুতেই কাজ হচ্ছে না।
বিএনপি এখন খাই খাই পার্টি অভিহিত করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি নালিশ করতে করতে এখন দেখছে কাজ হচ্ছে না। এখন বিএনপি খাই খাই পার্টি। ক্ষুধার জ্বালায় মরে। ক্ষমতার ক্ষুধা। অনেক দিন ক্ষমতায় নাই ক্ষুধায় অস্থির হয়ে গেছে। সে জন্য পারে না কিছু করতে। ক্ষমতার জন্য পাগল হয়ে গেছে, বেপরোয়া হয়ে গেছে। তাদের লক্ষ্য একটাই শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে বিদায় করা।
কাদের বলেন, বিএনপি আরেকবার ক্ষমতায় গেলে আবারও হাওয়া ভবন করবে। গণতন্ত্র, মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতার আদর্শ, দেশের উন্নয়ন গিলে খাবে। সুযোগ পেলে বাংলাদেশ গিলে খাবে। এই দলের কাছে গণতন্ত্র, মুক্তিযুদ্ধ, আইনের শাসন, দেশের নিরাপত্তা, নিরপেক্ষ নির্বাচন ব্যবস্থা নিরাপদ নয়। বিএনপি মানেই ভোট চুরি, ভোট জালিয়াতি, ভুয়া ভোটার তালিকা।
কাদের বলেন, ইউরোপ-আমেরিকা এসেছে। বিএনপি ভেবেছে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে এই সরকারকে বিদায় দেবে। পাইলেন কী ঘোড়ার ডিম। ইউরোপ-আমেরিকা কী দিল। এখন বিএনপি নেতাদের মুখ শুকিয়ে গেছে। নেতারা মুখে বলে না,পত্রিকায় গালিগালাজ করে।
তিনি বলেন, নোয়াখালীতে এসে প্রধানমন্ত্রী ও আমাকে উদ্দেশ করে অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করে গেছেন ফখরুল। করতে পারেন। নোয়াখালীর লোক চোখে অন্ধকার দেখে না। দিনের বেলায় দিনের আলোই দেখে। আর আপনারা দিনের বেলায় রাতের অন্ধকার দেখেন। নোয়াখালীর মানুষ দিনের আলোয় উন্নয়ন দেখে। গর্ব করে বলে বেড়ান নোয়াখালী বিএনপির ঘাঁটি। সে ঘাঁটি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা অলরেডি ভেঙে দিয়েছি। মারামারি ষড়যন্ত্র ও রক্তপাত করে নয়, আমরা কাজ করে এ নোয়াখালীকে আলোকিত করেছি।
নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, নিজেদের আচরণ সংযত করুন। শেখ হাসিনা উন্নয়ন করেছে আপনারা ভালো আচরণ করুন মানুষের সঙ্গে। ক্ষমতার দাপট দেখাবেন না। ক্ষমতা চির দিন থাকে না।
নেতা-কর্মীদের দেয়া স্লোগানের সমালোচনা করে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি একটা স্লোগান শুনেছি। এ স্লোগান যেন আর না শুনি। রক্তের বন্যা মুক্তিযুদ্ধের স্লোগান না। ভেসে যাবে অন্যায়। এ স্লোগান কেন আমরা দেব, কী প্রয়োজন। রক্তের বন্যা আমরা বয়াতে যাব কেন। আমরা শান্তি চাই, শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চাই। তবে যে আগুন নিয়ে আসবে, সে হাত গুটিয়ে দেবেন। যে হাত ভাঙচুর করতে আসবে, সে হাত আমরা ভেঙে দেব। আমরা আক্রমণকারী হব না। আক্রান্ত হলে পাল্টা জবাব দেব।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল কাদের মির্জা। এতে বক্তব্য রাখেন ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী ও উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন।
এর আগে বেলা সোয়া ১১টার দিকে বসুরহাট পৌরসভায় বাস্তবায়িত নব আধুনিকায়ন বসুরহাট বাসস্ট্যান্ড ও ৫৩৫টি সোলার বাতি স্থাপন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন সেতুমন্ত্রী।
সংবাদচিত্র ডটকম/রাজনীতি