পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্পের একাংশ উদ্বোধনের জন্য সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সময় চাওয়া হয়েছে। উদ্বোধনের আগে ঢাকা-ভাঙ্গা অংশের রেললাইনে পরীক্ষামূলকভাবে (ট্রায়াল রান) ট্রেন চালানো হবে। আনুষ্ঠানিকভাবে এই ট্রায়াল রান হবে ৭ সেপ্টেম্বর।
এ বিষয়ে পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্পের পরিচালক মো. আফজাল হোসেন দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘রেলমন্ত্রী আগামী ৭ সেপ্টেম্বর সময় দিয়েছেন। ফলে ওইদিন ট্রায়াল রান হবে। ঢাকার কমলাপুর থেকে নতুন লাইনে ট্রেন চালিয়ে দেখা হবে। ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ভাঙ্গা পর্যন্ত প্রায় ৮২ কিলোমিটার রেললাইন বসানোর কাজ শেষ হয়ে গেছে।’
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ঢাকা থেকে ভাঙ্গা রেললাইন চালু হলে প্রথমে ঢাকা, মাওয়া, পদ্মা, শিবচর এবং ভাঙ্গা রেলস্টেশন খুলে দেয়া হতে পারে। এই রেললাইন উদ্বোধনের এক সপ্তাহ পর থেকে শুরুতে এক জোড়া ট্রেন চালানো হবে। এক মাস পর ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো হবে এবং আরও কিছু স্টেশনও খুলে দেয়া হবে। এ ছাড়া তিন মাসের মধ্যেই সব স্টেশনের কাজ এবং সিগন্যালিংয়ের কাজও শেষ হয়ে যাবে। তখন ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো হবে। অর্থাৎ ঢাকা থেকে ভাঙ্গা রেললাইন উদ্বোধন হলেও পূর্ণাঙ্গভাবে ট্রেন চলাচল শুরু হতে তিন মাস সময় লাগবে।
পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের কাজ তিন ভাগে ভাগ করে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এর মধ্যে প্রথম ধাপে ঢাকা থেকে মাওয়া ৪০ কিলোমিটার, দ্বিতীয় ধাপে মাওয়া থেকে ফরিদপুরের ভাঙা পর্যন্ত ৪২ কিলোমিটার এবং তৃতীয় ধাপে ভাঙা থেকে যশোর পর্যন্ত ৮৭ কিলোমিটার ব্রডগেজ রেললাইন নির্মাণ হচ্ছে। এর মধ্যে ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ৮২ কিলোমিটার পথে রেললাইন বসানোর বেশির ভাগ কাজ শেষ। এদিকে প্রকল্পের তৃতীয় অংশে ভাঙ্গা থেকে যশোর পর্যন্ত প্রায় ৮৭ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে গত জুন মাস থেকে। আগস্ট পর্যন্ত ভাঙ্গা থেকে যশোর অংশে ১৫ কিলোমিটার রেললাইন বসে গেছে।
প্রকল্পের আগস্ট মাসের অগ্রগতির তথ্য বলছে, পুরো প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি হয়েছে ৮৩ শতাংশ। এর মধ্যে মাওয়া-ভাঙ্গা অংশের অগ্রগতি হয়েছে ৯৮ শতাংশ। ঢাকা-মাওয়া অংশের অগ্রগতি হয়েছে ৮১ শতাংশ। এদিকে ভাঙ্গা-যশোর অংশের কাজের অগ্রগতি হয়েছে ৭৮ ভাগ।
ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে যশোর পর্যন্ত ১৬৯ কিলোমিটার রেললাইন বসানো এবং স্টেশন ও অন্য অবকাঠামো নির্মাণের জন্য আলাদা প্রকল্প নেয় রেলওয়ে ২০১৬ সালের জুনে। জিটুজি পদ্ধতিতে এ প্রকল্পে অর্থায়ন করছে চীন। প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করছে চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেড (সিআরইসি)। পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করছে কনস্ট্রাকশন সুপারভিশন কনসালট্যান্ট (সিএসসি), বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। পদ্মা সেতু রেল সংযোগের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৯ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা। প্রকল্পের মেয়াদ আছে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত।
সংবাদচিত্র ডটকম/জাতীয়