দীর্ঘ প্রায় এক মাসে ধরে হ্রদের জলে নিমজ্জিত রাঙ্গামাটির ঝুলন্ত সেতু। ছবি: সংগৃহীত
দীর্ঘ প্রায় এক মাসে ধরে হ্রদের জলে নিমজ্জিত রাঙ্গামাটির ঝুলন্ত সেতু। এতে রাঙ্গামাটিতে ভাটা পড়েছে পর্যটক আগমে। যার প্রভাব পড়েছে পর্যটন খাত সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়। রাঙ্গামাটি পর্যটন শিল্পকে বাঁচাতে এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান চায় ব্যবসায়ীরা। আর সমস্যা সমাধাণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের।
রাঙ্গামাটি পর্যটন শিল্পের আইকন এই ঝুলন্ত সেতু। প্রায় এক মাস ধরে ডুবে আছে হ্রদের জলে। দুর্ঘটনা এড়াতে সেতুতে পর্যটক চলাচলে দেয়া হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। এতে পর্যটকের পদচারণায় সদা মুখর থাকা স্থানটি এখন প্রায় নিস্তব্ধ হয়ে গেছে।
ঝুলন্ত সেতু ডুবে যাওয়ায় প্রভাব পড়েছে পর্যটন খাত সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়। পর্যটক না থাকায় বোটগুলো বেঁধে রাখা হয়েছে ঘাটে। আবাসিক হোটেলে নেই কোনো বুকিং, অলস সময় কাটাচ্ছে টেক্সটাইল ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে হাতে গোনা দুই একজন পর্যটক যাও আসে, রাঙ্গামাটি পর্যটন শিল্পের আইকন ঝুলন্ত সেতুর এমন করুণ অবস্থায় রাজ্যের হতাশা তাদের কণ্ঠে।
ঢাকা থেকে বেড়াতে আসা সাইফুল হাসান বলেন, ‘অনেক পরিকল্পনারকরে এসেছি রাঙ্গামাটিতে, ইচ্ছা ছিল সেতুতে হাঁটব, ছবি তুলব তা আর হলো না। সেতু তো ডুবে গেছে। হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছি।’
সামির ট্যুরিজমের কর্নধার সামিরুল ইসলাম বলেন, ‘এ বর্ষায় আমাদের রাঙ্গামাটির চারটা বুকিং বাতিল হয়েছে। পর্যটকরা জানিয়েছে সেতু ডুবে গেছে খবর পেয়েছি। তাই এখন আর রাঙ্গামাটিতে যাব না। এতে আমাদের প্রায় দেড় লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। তাই নিজেই চলে আসলাম, দেখে গেলাম বাস্তব অবস্থা।’
স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী শংকর হোড় বলেন, ‘এত বছর হয়ে গেছে, প্রতিবছর সেতুটি ডুবে যায়, কিন্তু কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি।’
ব্যবসায়ীরা বলেন, ‘কোনো পর্যটক না আসায় আমাদের ব্যবসা প্রায় বন্ধ। আমাদের দোকানে বেচাকেনা নাই। সংসার চালাতে অনেক কষ্ট হচ্ছে।’
রাঙ্গামাটি আবাসিক হোটেল ব্যসবসায়ী সমিতির সদস্য নিয়াজ আহম্মেদ বলেন, ‘প্রতি বছর এই সেতুটি ডোবার ফলে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়। আমাদের পর্যটন শিল্পকে বাঁচাতে এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান চাই। এবাবে তো চলতে পারে না।’
রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কৃষিবিদ কাজল তালুকদার বলেন, ‘এটাই আসরেই হতাশার। কেন এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি, বিষয়টি আমার মাথায় আসছে না। তবে এই সেতুর সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য কাজ শুরু করেছি। একটি প্রাথমিক ব্যয় নির্ধারণ করেছি। যার পরিমাণ ২৫/৩০ কোটি টাকার মত খরচ হতে পারে। বিষয়টি নিয়ে পর্যটন মন্ত্রণালয় ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা শুরু করব।’
রাঙ্গামাটি শহরের তবলছড়ি এলাকায় দুই পাহাড়কে যুক্ত করতে ১৯৮৬ সালে ৩৩৫ ফুট দৈর্ঘের সেতুটি নির্মাণ করে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন। যা সারা বিশ্বে রাঙ্গামাটি পর্যটন শিল্পের আইকন হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
সংবাদচিত্র ডটকম/ভ্রমন