বাংলাদেশ সরকার চলচ্চিত্র শিল্পের বিকাশ ও উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য ব্যক্তিবিশেষ এবং শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র ও প্রামাণ্যচিত্রকে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান করে থাকে। প্রতিবছরের মতো এবারও তাই এক ঝাঁক তারকা পাচ্ছেন চলচ্চিত্রের সর্বোচ্চ সম্মাননার এ পুরস্কার।
১৯৭৫ সাল থেকে প্রতি বছর বড় পরিসরে বর্ণাঢ্য কর্মসূচি, নৃত্য ও সংগীতের মাধ্যমে ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার’ অনুষ্ঠানটি আয়োজন করা হয়। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। তবে প্রতি বছর ২৮টি ক্যাটাগরিতে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার দেয়া হলেও এবছর পুরস্কার দেয়া হচ্ছে ২৭ টি ক্যাটাগরিতে।
সম্প্রতি জাতীয় পুরস্কার সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি চূড়ান্ত তালিকার অনুমোদন দিয়েছেন। যেখানে ২৭ ক্যাটাগরিতে ৩৪টি পুরস্কার দেয়া হবে।
চলচ্চিত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখায় এ বছর যৌথভাবে আজীবন সম্মাননা পাচ্ছেন অভিনেত্রী ডলি জহুর ও অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চন।
শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র যৌথভাবে মাতিয়া বানু শুকু (লাল মোরগের ঝুঁটি) ও রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত (নোনাজলের কাব্য)
শ্রেষ্ঠ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র আকা রেজা গালিব (ধর)
শ্রেষ্ঠ প্রামাণ্য চলচ্চিত্র কাওসার চৌধুরী (বধ্যভূমিতে একদিন)
শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র পরিচালক রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত (নোনাজলের কাব্য)।
শ্রেষ্ঠ অভিনেতা নির্বাচিত হয়েছেন যৌথভাবে মো. সিয়াম আহমেদ (মৃধা বনাম মৃধা) ও মীর সাব্বির মাহমুদ (রাতজাগা ফুল)।
শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী যৌথভাবে আজমেরী হক বাঁধন (রেহানা মরিয়ম নূর) ও তাসনোভা তামান্না (নোনাজলের কাব্য)।
পার্শ্ব চরিত্রে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা এম ফজলুর রহমান বাবু (নোনাজলের কাব্য)
শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী পার্শ্ব চরিত্রে শম্পা রেজা (পদ্মপুরাণ)।
শ্রেষ্ঠ অভিনেতা খল চরিত্রে মো. আবদুল মান্নান জয়রাজ (লাল মোরগের ঝুঁটি)।
শ্রেষ্ঠ অভিনেতা কৌতুক চরিত্রে প্রভাষ কুমার ভট্টাচার্য মিলন (মৃধা বনাম মৃধা)
শ্রেষ্ঠ শিশুশিল্পী আফিয়া তাবাসসুম (রেহানা মরিয়ম নূর)
শিশুশিল্পী শাখায় বিশেষ পুরস্কার জান্নাতুল মাওয়া ঝিলিক (যা হারিয়ে যায়)।
শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালক সুজেয় শ্যাম (যৈবতী কন্যার মন)
শ্রেষ্ঠ গায়ক কে. এম. আবদুল্লাহ-আল-মুর্তজা মুহিন (শোনাতে এসেছি আজ-পদ্মপুরাণ)
শ্রেষ্ঠ গায়িকা চন্দনা মজুমদার (দেখলে ছবি পাগল হবি-পদ্মপুরাণ)
শ্রেষ্ঠ গীতিকার প্রয়াত গাজী মাজহারুল আনোয়ার (অন্তরে অন্তর জ্বালা-যৈবতী কন্যার মন)
শ্রেষ্ঠ সুরকার সুজেয় শ্যাম (অন্তরে অন্তর জ্বালা-যৈবতী কন্যার মন)
শ্রেষ্ঠ কাহিনিকার রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত (নোনাজলের কাব্য)
শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার নূরুল আলম আতিক (লাল মোরগের ঝুঁটি)
শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা তৌকীর আহমেদ (স্ফুলিঙ্গ)।
শ্রেষ্ঠ সম্পাদক সামির আহমেদ (লাল মোরগের ঝুঁটি)
শ্রেষ্ঠ শিল্প নির্দেশক শিহাব নূরুন নবী (নোনাজলের কাব্য)
শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক দলগত-সৈয়দ কাশেফ শাহবাজি, সুমন কুমার সরকার, মাজহারুল ইসলাম রাজু (লাল মোরগের ঝুঁটি)
শ্রেষ্ঠ শব্দগ্রাহক শৈব তালুকদার (রেহানা মরিয়ম নূর)
শ্রেষ্ঠ পোশাক ও সাজসজ্জা ইদিলা কাছরিন ফরিদ (নোনাজলের কাব্য)।
শ্রেষ্ঠ মেক-আপম্যান দলগত– মো. ফারুখ, মো. ফরহাদ রেজা মিলন (লাল মোরগের ঝুঁটি)।
পুরস্কার হিসেবে নির্বাচিত সবাইকে দেয়া হবে ১৮ ক্যারেট মানের ১৫ গ্রাম ওজনের স্বর্ণ দিয়ে তৈরি একটি পদক, পদকের একটি রেপ্লিকা ও এককালীন নির্ধারিত পরিমাণ সম্মানী ও সম্মাননাপত্র দেয়া হবে।
আজীবন সম্মাননার জন্য ৩ লাখ, শ্রেষ্ঠ পূর্ণদের্ঘ্য চলচ্চিত্র প্রযোজক, শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র পরিচালকের জন্য ২ লাখ ও অন্যান্য ক্ষেত্রে দেয়া হবে ১ লাখ টাকা।
এবারের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদানের জন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় ১৩ সদস্যের জুরি বোর্ড গঠন করে। ২০২১ সালের মুক্তিপ্রাপ্ত ২১টি পূর্ণদের্ঘ্য, ১৭টি স্বল্পদৈর্ঘ্য ও ৭টি প্রামাণ্য চলচ্চিত্রসহ মোট ৪৫টি চলচ্চিত্র থেকে বাছাই করা হয় এবারের বিজয়ীদের। তবে এ বছর ‘শ্রেষ্ঠ নৃত্য পরিচালক’ ক্যাটাগরিতে কোনো প্রার্থীকে যোগ্য বলে বিবেচনা করা হয়নি।
সংবাদচিত্র ডটকম/চলচ্চিত্র