পঞ্চগড়ের বিলুপ্ত ৩৬টি ছিটমহলের বাসিন্দারা দুপুরে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে ছিটমহল বিনিময়ের ৭ম বর্ষপূর্তি উদযাপন করেন।
সোমবার (০১ আগস্ট) পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাফিজাবাদ ইউনিয়নের বিলুপ্ত ৭৮ নং গাড়াতি ছিটমহলের মফিজার রহমান কলেজ মাঠের শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন। পরে কেক কেটে বিলুপ্ত ছিটমহল বিনিময়ের ৭ম বর্ষপূর্তি উদযাপন করেন।
এর আগে বিলুপ্ত ছিটমহলের রাজমহল এলাকা থেকে একটি আনন্দ শোভাযাত্রা করা হয়। শোভাযাত্রাটি বিলুপ্ত গাড়াতি ছিটমহলের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে কলেজ মাঠে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় শোভাযাত্রায় পঞ্চগড় সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আমিরুল ইসলাম, বিলুপ্ত গাড়াতি ছিটমহলের সাবেক চেয়ারম্যান ও ছিটমহল আন্দোলনের নেতা মফিজার রহমানসহ বিলুপ্ত ছিটমহলের অধিবাসীরা অংশ নেন।
২০১৫ সালের ৩১ জুলাই দিবাগত মধ্যরাতে বাংলাদেশ-ভারত ছিটমহল বিনিময় হয়। তারা সেই দিনটিকে ‘মুক্তি দিবস’ হিসেবে উদযাপন করছেন। দীর্ঘ ৬৮ বছর ছিটমহল নামক ভূখণ্ডে অবরুদ্ধ জীবন থেকে ছিটমহলবাসীদের মুক্তি মিলে আজকের এই দিনে।
১৬২ সাবেক ছিটমহলের মধ্যে ভারতের ভেতরে বাংলাদেশের সাবেক ছিটমহল ৫১, জমির পরিমাণ ৭ হাজার ১১০ একর। বাংলাদেশের ভেতরে ভারতের সাবেক ছিটমহল ১১১, জমির পরিমাণ ১৭ হাজার ১৬০ একর।
১১১ সাবেক ছিটমহলের মধ্যে লালমনিরহাটে ৫৯, কুড়িগ্রামে ১২, নীলফামারীতে ৪ ও পঞ্চগড়ে ৩৬টি। ছিটমহল বিনিময়ের মাধ্যমে ভারতের ভেতরে বাংলাদেশের ছিটমহলের মালিক হয় ভারত এবং বাংলাদেশের ভেতরে ভারতের ছিটমহলের মালিক হয় বাংলাদেশ। বাংলাদেশের ভেতরে ভারতের ছিটমহলে বসবাসকারী ৩৭ হাজার ৫৩৫ জন বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পান।
সাবেক ছিটমহলবাসী ও জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, ছিটমহল বিনিময়ের পর থেকেই বঞ্চিত মানুষগুলোকে মূলধারায় যুক্ত করতে সরকার বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মসূচি গ্রহণ করে। গত ৬ বছরে সরকার সাবেক ছিটমহলগুলোয় যোগাযোগ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ধর্মীয় উপাসনালয়, সামাজিক নিরাপত্তা ও নাগরিকের সব মৌলিক অধিকার পূরণ করেছে।
সরকার ২০০ কোটি টাকা খরচে সাবেক ছিটমহলগুলোয় উন্নয়নমূলক কাজ করেছে বলে জানায় সংশ্লিষ্টরা।
সংবাদচিত্র/সারাদেশ