আব্দুল করিম ছদ্মনামে মসজিদে ইমামতির কাজ করতেন রমনা বটমূলে বর্ষবরণের অনুষ্ঠানে বোমা হামলা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এবং ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মুফতি শফিকুল ইসলাম। শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানায় র্যাব।
বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) রাতে কিশোরগঞ্জের ভৈরব এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় মুফতি শফিকুল ইসলামকে। শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজারে সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরে র্যাব।
এসময় র্যাব জানায়, ২০০১ সালে রমনা বটমূলে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলায় ১০ জনের মৃত্যু হয়। পরে রমনা থানায় একটি হত্যা মামলাসহ আরেকটি বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা করা হয়। হত্যা মামলায় ২০১৪ সালে গ্রেপ্তার শফিকুলসহ ৮ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৬ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় আদালত। এছাড়া ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা হত্যা মামলায় ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইবুন্যাল ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং মুফতি শফিকুলসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করে।
র্যাব আরো জানায়, ২০০৫ সালে হবিগঞ্জের বৈদ্যের বাজারে গ্রেনেড হামলায় সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়াসহ ৫ জন হত্যা মামলারও চার্জশীটভুক্ত আসামি গ্রেপ্তার শফিকুল ইসলাম। তার বিরুদ্ধে ভৈরব থানায় ৬টি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। ২০০৮ সাল থেকে নরসিংদীতে একটি মাদ্রাসায় অবস্থান করে আত্মগোপনে চলে যান শফিকুল। সেসময় থেকে আব্দুল করিম ছদ্মনামে স্থানীয় একটি মসজিদে ইমামতির কাজ করতেন।
২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলায় ১০ জন নিহত হয়। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় তদন্ত শেষে ২০০৮ সালের ৩০ নভেম্বর মুফতি হান্নানসহ ১৪ জনকে আসামি করে হত্যা মামলায় দন্ডবিধি ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দুটি অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।
মামলা দুটিতে একই বছরের ১৬ এপ্রিল অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে বিচার কাজ শুরু হয়। এর মধ্যে হত্যা মামলায় বিচার শেষে ২০১৪ সালের ২৩ জুন ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত রায় দেন। রায়ে মুফতি হান্নানসহ আটজনকে মৃত্যুদণ্ড ও ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়।
এর মধ্যে ২০১৭ সালের ১২ এপ্রিল রাতে মুফতি হান্নানের ফাঁসি কার্যকর হয়। সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলার দায়ে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অন্য আসামিরা হলেন মাওলানা তাজউদ্দিন (পলাতক), মাওলানা আকবর হোসাইন, মুফতি আব্দুল হাই (পলাতক), হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর (পলাতক), মাওলানা আবু বকর ও আরিফ হাসান সুমন।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন হাফেজ মাওলানা আবু তাহের, মাওলানা সাব্বির, হাফেজ ইয়াহিয়া, মাওলানা শওকত ওসমান ওরফে শেখ ফরিদ, মাওলানা আব্দুর রউফ ও মাওলানা শাহাদাৎ উল্লাহ জুয়েল।
৩০২/৩৪ ধারায় তাদের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরো এক বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়।
সংবাদচিত্র/অপরাধ