গাজায় মানবিক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবটি ভারসাম্যপূর্ণ নয়, এই যুক্তি দেখিয়ে ভেটো দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সংযুক্ত আরব আমিরাতের আনা প্রস্তাবে নিরাপত্তা পরিষদের অধিকাংশ সদস্য এর পক্ষে ভোট দেয়।
অবিলম্বে মানবিক যুদ্ধবিরতি ও জিম্মিদের নিঃশর্ত মুক্তির আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে একটি প্রস্তাব তোলে সংযুক্ত আরব আমিরাত। প্রস্তাবটির সহযোগী ছিল ৯৭টি দেশ। আর্টিকেল নাইনটি নাইন জারির পর নিরাপত্তা পরিষদে আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে ভোট হয়।
নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্যের মধ্যে ১৩টি দেশ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়। ভোটদানে বিরত থাকে যুক্তরাজ্য। তবে শেষ পর্যন্ত ভেটো ক্ষমতাধর যুক্তরাষ্ট্র বিপক্ষে ভোট দেয়ায় প্রস্তাবটি আটকে যায়। নিয়ম অনুযায়ী, স্থায়ী পাঁচ সদস্যের কোনো একটি দেশ বিপক্ষে ভোট দিলে প্রস্তাব বাতিল হয়ে যায়।
এর পক্ষে যুক্তি হিসেবে জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন দূত রবার্ট উড বলেন, ‘প্রস্তাবটি ভারসাম্যপূর্ণ নয় এবং বাস্তবতা প্রতিফলিত হয়নি। তবে বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের রক্ষায় জোর চেষ্টা চালাচ্ছে মার্কিন প্রশাসন।’
রবার্ট উড আরও বলেন, ‘সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ইসরাইলের আত্মরক্ষার অধিকার আছে। প্রস্তাবটি আন্তর্জাতিক আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ না। আর হামাস যা করেছে তা কোনো দেশই সহ্য করবে না।’
নিরাপত্তা পরিষদকে অকার্যকর করার অভিযোগ এনে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া সমালোচনা করেছে রাশিয়া। জাতিসংঘের সব সদস্য দেশকে শান্তির জন্য কাজ করার আহ্বান জানিয়েছে চীন।
নিরাপত্তা পরিষদের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে ইসরাইলের নৃশংসতা বন্ধে সব চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত।
জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত রিয়াদ মানসুর বলেন, ‘যুদ্ধবিরতি ছাড়া আর কোনো পথ খোলা নেই। প্রতিদিন নিরীহ মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে। এই বর্বরতা বন্ধ করে মানবতাকে জয় করতে হবে।’
জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘গাজার পরিস্থিতি অন্ধকারের দিকে যাচ্ছে। ফিলিস্তিনিদের শান্তি ও নিরাপত্তায় আন্তর্জাতিকভাবে সব চেষ্টাই করে যাচ্ছে জাতিসংঘ।
মহাসচিব আরও বলেন, ‘গাজার বর্তমান সংকট মোকাবিলা করে একটি শান্তিপূর্ণ ভবিষ্যতের জন্য একমাত্র কার্যকর সম্ভাবনার দিকে সবার দৃষ্টি রাখতে হবে। আন্তর্জাতিক আইনের ভিত্তিতে ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের শান্তি প্রতিষ্ঠায় পাশে দাঁড়াতে হবে।’
গাজায় অবিলম্বে মানবিক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্র ভেটো দেয়ায় কড়া নিন্দা জানিয়েছে হামাস। এক বিবৃতিতে হামাসের জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা বলেন, ওয়াশিংটনের এই পদক্ষেপ অনৈতিক ও অমানবিক।
ইসরাইল বলছে, সব জিম্মিকে ফেরত দিলে এবং হামাস ধ্বংস হলেই যুদ্ধবিরতি সম্ভব। দুই মাসের বেশি সময় ধরে ইসরাইলি হামলায় ফিলিস্তিনে নিহত সাড়ে ১৭ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
সংবাদচিত্র ডটকম/আন্তর্জাতিক