বিশ্বের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো একমাত্র নারী সদস্যদের নিয়ে সফলভাবে মহাকাশ ঘুরে পৃথিবীতে ফিরে এসেছেন ছয়জন। এই ব্যতিক্রমধর্মী সাবঅরবিটাল মিশনে যুক্ত ছিলেন জনপ্রিয় পপ তারকা কেটি পেরি, যিনি মহাকাশে পৌঁছেই গান গেয়ে সবার মন জয় করেন।
মিশনটি পরিচালনা করেছে জেফ বেজোসের মহাকাশ কোম্পানি ব্লু অরিজিন, এবং এটি ছিল তাদের ‘নিউ শেপার্ড’ প্রোগ্রামের এনএস-৩১ নামের সর্বশেষ ফ্লাইট। সোমবার, যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেক্সাসের ‘লঞ্চ সাইট ওয়ান’ থেকে স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে রকেটটি উৎক্ষেপণ করা হয়। প্রায় ১০ মিনিটের এই মহাকাশ যাত্রায় অংশ নেন ছয়জন নারী, যারা এক সময়ের জন্য ওজনহীনতার অভিজ্ঞতা নিয়ে পৃথিবীর অপূর্ব দৃশ্য উপভোগ করেন।
এ যাত্রার নেতৃত্বে ছিলেন জেফ বেজোসের বাগদত্তা ও সাংবাদিক লরেন সানচেজ। তার সঙ্গে ছিলেন পপ তারকা কেটি পেরি, লেখক ও নাগরিক অধিকার কর্মী আমান্ডা এনগুয়েন, সাংবাদিক ও সিবিএস মর্নিংসের সহ-উপস্থাপক গেইল কিং, নাসার সাবেক রকেট বিজ্ঞানী আয়িশা বোয়ে, এবং চলচ্চিত্র নির্মাতা কেরিয়ান ফ্লিন।
ক্যাপসুলটি পৃথিবী থেকে সর্বোচ্চ ১০০ কিলোমিটার উচ্চতায় পৌঁছায়, যেখানে ‘কারমান লাইন’ অতিক্রম করার সঙ্গে সঙ্গে যাত্রীরা কার্যত মহাকাশে প্রবেশ করেন।
এই মিশনের উদ্দেশ্য ছিল, নারীদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে মহাকাশ ভ্রমণে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব তৈরি করা এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে মহাকাশ অভিযানে অনুপ্রাণিত করা। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (FAA), নাসা কিংবা সামরিক বাহিনী এই ছয়জনকে আনুষ্ঠানিকভাবে নভোচারী হিসেবে স্বীকৃতি দেবে না, কারণ তারা সেই নির্দিষ্ট প্রশিক্ষণ বা শর্ত পূরণ করেননি।
মিশনের আগে কেটি পেরি জানান, প্রায় দুই দশক ধরে মহাকাশে যাওয়ার স্বপ্ন দেখে আসছেন তিনি। সুযোগ পেয়ে এক মুহূর্তের জন্যও না ভেবে ‘হ্যাঁ’ বলে দেন। অন্যদিকে, গেইল কিং বলেন, তার জন্য এই সিদ্ধান্ত ছিল চরম কঠিন – কারণ এটি ছিল সাহসিকতা ও আত্মবিশ্বাসের এক নতুন অধ্যায়।
ব্লু অরিজিন এর আগে ৫২ জনকে মহাকাশে নিয়ে গেছে, যার মধ্যে ছিলেন জেফ বেজোস নিজেও। ২০২১ সালে তিনি নিউ শেপার্ডের প্রথম যাত্রায় অংশ নেন এবং পরবর্তীতে বলেন, সেই অভিজ্ঞতা তাঁকে আরও “ভিত্তিভূত মানুষ” করে তুলেছে।
এই অল-উইমেন ফ্লাইট একটি নতুন অধ্যায় সূচিত করল মহাকাশ অভিযানের ইতিহাসে—যেখানে নারীরা শুধু অংশগ্রহণকারী নয়, নেতৃত্বেও।
সংবাদচিত্র ডটকম/আন্তর্জাতিক