বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সব অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলো বন্ধে পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে সরকার। এগুলোর ওয়েবসাইট, ফেসবুক, ইউটিউব, টিকটক, টেলিগ্রাম, এক্সের (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্ট ‘ব্লক’ করতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) চিঠি দিয়েছে জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা এজেন্সি।
বুধবার (১৪ মে) তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে সরকার এরই মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। কার্যক্রম নিষিদ্ধের আওতায় পড়ে সাইবার কার্যক্রমও। তাই পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে ওয়েবসাইট, ফেসবুক, ইউটিউব, টিকটক, টেলিগ্রাম, এক্সসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের কার্যক্রম বন্ধ রাখতে বিটিআরসিকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর কর্তৃপক্ষ এটির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিবে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, এই চিঠির আলোকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটা এবং এক্স ও ইউটিউব কতৃপক্ষকে চিঠি পাঠাবে বিটিআরসি। তারা তাদের নীতিমালা অনুযায়ী যাচাই-বাছাই করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবে।
এর আগে, গত সোমবার (১২ মে) অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এক প্রজ্ঞাপনে আওয়ামী লীগসহ সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোর সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। এতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত এসব সংগঠনের যেকোনো সভা-সমাবেশ, মিছিল, প্রচারণা ও গণমাধ্যমে উপস্থিতি নিষিদ্ধ থাকবে।
এ নির্দেশনার আলোকে ওইদিন রাতেই রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের নিবন্ধনও স্থগিত ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।
জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা এজেন্সি ও বিটিআরসি সূত্রে জানা গেছে, সংশ্লিষ্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্মগুলোকে শিগগিরই অ্যাকাউন্ট ও লিংক ‘ব্লক’ করার অনুরোধ জানিয়ে চিঠি পাঠানো হবে।
তবে, বিষয়টি সহজ নয় বলে অভিমত বিশেষজ্ঞদের। জানা গেছে, সরকার চাইলে ওয়েবসাইট ব্লক করতে পারে, তবে ফেসবুক বা ইউটিউবের কনটেন্ট সরানো বা অ্যাকাউন্ট বন্ধের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ সরকারের নেই। এসবের জন্য মেটা, গুগল বা সংশ্লিষ্ট প্ল্যাটফর্মগুলোকে অনুরোধ করা হয়। তারা নিজস্ব নীতিমালা অনুযায়ী যাচাই করে পদক্ষেপ নেয়।
মেটার সর্বশেষ স্বচ্ছতা প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধে ২ হাজার ৯৪০টি কনটেন্টের অ্যাক্সেস সীমিত করেছে তারা।
অন্যদিকে গুগলের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে বাংলাদেশ থেকে পাঠানো ৪৯০টি অনুরোধে মোট ৫ হাজার ৮২৭টি কনটেন্ট সরানোর কথা বলা হয়। তবে বছরের প্রথমার্ধে গুগল ৬৮.২ শতাংশ এবং দ্বিতীয়ার্ধে ৪৫.৮ শতাংশ অনুরোধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
সংবাদচিত্র ডটকম/জাতীয়