অতিরিক্ত স্বাস্থ্য সচিব আক্তারুজ্জামানের (বামে) ও মোঃ জাহিদুল ইসলাম, সিএইচসিপি এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি। ছবি: সংগৃহীত
কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রভাইডার (সিএইচসিপি) প্রকল্পের চাকরি রাজস্ব খাতে স্থায়ী করার প্রজ্ঞাপন জারির নামে প্রায় তিন কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এক অতিরিক্ত সচিবসহ বাংলাদেশ সিএইচসিপি অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন সংগঠনেরই বহু কর্মী।
গত ১ আগস্ট রাজধানীর মহাখালীর বিএমআরসি ভবনে আয়োজিত এক সভায় অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. জাহিদুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক মো. নঈম উদ্দিন প্রতিটি সিএইচসিপি কর্মীর কাছ থেকে দুই হাজার ১০০ টাকা করে চাঁদা তোলার সিদ্ধান্ত নেন। সভায় দেশের সব জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক উপস্থিত ছিলেন। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৪ হাজার কর্মীর কাছ থেকে মোট ২ কোটি ৯৪ লাখ টাকা উত্তোলনের পরিকল্পনা করা হয়।
অভিযোগ রয়েছে, এর আগেও জাহিদুল ইসলাম বিভিন্ন সময়ে চাকরি রাজস্ব খাতে অন্তর্ভুক্তি, ইএফটি অনলাইনে বেতন-ভাতা বাস্তবায়ন, এমনকি হাইকোর্টে রিট করার নামে সিএইচসিপি কর্মীদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা আদায় করেছেন। শুধু চলতি বছরের জুন মাসেই অনলাইন বেতন-ভাতার নামে ২ কোটি ১০ লাখ টাকা সংগ্রহের অভিযোগ উঠেছে।
কর্মীদের দাবি, সামান্য বেতনের চাকরি থেকে শুরু করেও জাহিদুল ইসলাম এখন কোটি কোটি টাকার মালিক। তার রয়েছে প্রাইভেট কার, ঢাকায় ফ্ল্যাট এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টারসহ বিপুল সম্পদ।
এদিকে গত ১২ সেপ্টেম্বর ঝিনাইদহে আয়োজিত খুলনা বিভাগীয় সভায়ও টাকা তোলার সিদ্ধান্ত হয়। এর পর ১৪ সেপ্টেম্বর খুলনা সিএইচসিপি নামে যশোর সোনালী ব্যাংক করপোরেট শাখায় একটি হিসাব খোলা হয়।
বাগেরহাটের কর্মী মিজানুর রহমান বলেন, “প্রজ্ঞাপন জারির নামে আমাদের কাছ থেকে জোরপূর্বক টাকা আদায় করা হচ্ছে। আগে রিটের নামে কোটি টাকা খেয়েছে, এখন আবার নতুন করে চাঁদা তোলা হচ্ছে।”
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেন, “চাকরি রাজস্ব খাতে অন্তর্ভুক্তির নামে টাকা তোলার কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। যারা টাকা তুলছে, সেটা কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত নয়।” তবে তার স্বাক্ষরিত প্যাডে বিভাগীয় শাখাগুলোর নামে হিসাব খোলার নির্দেশনা পাওয়া গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আক্তারুজ্জামানের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
সংবাদচিত্র ডটকম/অপরাধ