দেশে করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়ার কারণে আগামী ২৩ জুলাই থেকে ১৫ দিন দেশের সব ধরনের শিল্পকারখানা বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। আজ মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) এই বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
এর আগে পবিত্র ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে দেশে চলমান কঠোর বিধি-নিষেধ শিথিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী আগামী ১৫ জুলাই থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত এক সপ্তাহের জন্য বিধি-নিষেধ শিথিল করা হয়েছে। তবে ২৩ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত কঠোর লকডাউন আরোপ করা হয়েছে।
শিথিল লকডাউনে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলবে গণপরিবহন, খোলা থাকবে দোকানপাট-শপিংমল। লকডাউন শিথিল হলেও বন্ধ থাকবে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। সরকারি অফিস চলবে ভার্চ্যুয়ালি।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ঈদ উদযাপন, জনসাধারণের যাতায়াত, ঈদ পূর্ববর্তী ব্যবসা বাণিজ্য পরিচালনা, দেশের আর্থ সামাজিক অবস্থা এবং অর্থনৈতিক কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এদিকে আগে জারি করা বিধি-নিষেধের সময় সব ধরনের শিল্প-কলকারখানা খোলা থাকলেও এবার বন্ধ থাকছে সব ধরনের শিল্প-কলকারখানাও। প্রজ্ঞাপনে এই বিষয়ে আলাদা নির্দেশনা রয়েছে।
২৩ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট মানতে হবে যেসব বিধি-নিষেধ :
১. সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্বশাসিত ও বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে।
২. সড়ক, রেল ও নৌপথে গণপরিবহন (অভ্যন্তরীণ বিমানসহ) ও সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে।
৩. শপিংমল/মার্কেটসহ সব দোকানপাট বন্ধ থাকবে।
৪. সব পর্যটন কেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ থাকবে।
৫. সব ধরনের শিল্প-কলকারখানা বন্ধ থাকবে।
৬. জনসমাবেশ হয় এই ধরনের সামাজিক [বিবাহোত্তর অনুষ্ঠান (ওয়ালিমা), জন্মদিন, পিকনিক, পার্টি ইত্যাদি], রাজনৈতিক ও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান বন্ধ থাকবে।
৭. বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আদালতের বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করবে।
৮. ব্যাংকিং/বীমা/আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করবে।
৯. সরকারি কর্মচারিরা নিজ নিজ কর্মস্থলে অবস্থান করবেন এবং দাফতরিক কাজ ভার্চ্যুয়ালি (ই-নথি, ই-মেইল, এসএমএস, হোয়াটসঅ্যাপসহ অন্য মাধ্যম) সম্পন্ন করবেন।
১০. আইন-শৃঙ্খলা এবং জরুরি পরিষেবা, যেমন-কৃষি পণ্য ও উপকরণ (সার, বীজ, কীটনাশক, কৃষি যন্ত্রপাতি ইত্যাদি), খাদ্যশস্য ও খাদ্যদ্রব্য পরিবহন/বিক্রয়, ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্য সেবা, কোভিড-১৯ টিকা প্রদান, জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) প্রদান কার্যক্রম, রাজস্ব আদায় সম্পর্কিত কার্যাবলী, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস/জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, টেলিফোন ও ইন্টারনেট (সরকারি-বেসরকারি), গণমাধ্যম (প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া), বেসরকারি নিরাপত্তা ব্যবস্থা, ডাক সেবা, ব্যাংক, ভিসা সংক্রান্ত কার্যক্রম, সিটি করপোরেশন/পৌরসভা (পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, সড়কের বাতি ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি কার্যক্রম), সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি, ফার্মেসি ও ফার্সাসিউটিক্যালসসহ অন্যান্য জরুরি/অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবার সংগে সংশ্লিষ্ট অফিসসমূহের কর্মচারি ও যানবাহন প্রাতিষ্ঠানিক পরিচয়পত্র প্রদর্শন সাপেক্ষে যাতায়াত করতে পারবে।
এর আগে গত ১ জুলাই থেকে ৭ দিনের লকডাউন দেয় সরকার। এরপর সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ১৪ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত লকডাউন বাড়িয়ে গত ৫ জুলাই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। প্রজ্ঞাপনে ২১টি বিধি-নিষেধ জারি করে সরকার।
এদিকে আগামী ২১ জুলাই বাংলাদেশে উদযাপিত হবে পবিত্র ঈদুল আযহা। ঈদুল আযহা পর ১৪ দিনের লকডাউন থাকবে সারাদেশ।
সংবাদচিত্র/জাতীয়