জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ঘোষণা দিয়েছে, ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের উপর লাঞ্ছিতের ঘটনায় জড়িত দলের সদস্যদের শনাক্ত করে প্রমাণের ভিত্তিতে যথাযথ সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) এনসিপি যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক খান মুহাম্মদ মুরসালিনের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিষয়টি ইতোমধ্যেই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। “দায়ী ব্যক্তিদের শনাক্ত করা হচ্ছে, এবং প্রমাণের ভিত্তিতে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে,” বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
ঘটনা ঘটে সকাল ৯:৪৫ টার দিকে বিমানবন্দরের ভিআইপি গেটের সামনে। তখন এনসিপির নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন দলের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানানোর জন্য। অধ্যাপক ইউনূস সম্প্রতি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে অংশগ্রহণ শেষে দেশে ফিরেছেন। তার সফরসঙ্গী ছিলেন এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন ও যুগ্ম আহ্বায়ক তাসনিম জারা।
সংবাদ সূত্রে জানা যায়, এনসিপি সাংবাদিকদের বুধবার রাতে সংবাদ সংগ্রহের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। তবে বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর সাংবাদিকরা অভিযোগ করেছেন যে, কিছু নেতাকর্মীর দ্বারা তাদের অসদাচরণের শিকার হতে হয়েছে। এই ঘটনার কারণে পরিকল্পিত সংবাদ সম্মেলনও প্রভাবিত হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনের মূল উদ্দেশ্য ছিল দেশে ফেরার পর আখতার হোসেন ও তাসনিম জারা এনসিপির অর্জন, চ্যালেঞ্জ এবং গ্লোবাল লিডারশিপের সম্ভাবনা তুলে ধরার।
এনসিপি বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি “দুঃখজনক ও নিন্দনীয়” হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। দলটি বলেছে, ঘটনার প্রমাণের ভিত্তিতে যারা দায়ী তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত এবং নিরপেক্ষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এনসিপি আরও জানিয়েছে, এই ঘটনা এনসিপির “বাংলা বসন্ত” আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে ঘটেছে। চলতি “বাংলা বসন্ত” দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে গণতান্ত্রিক ও সামাজিক আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে উঠেছে। একই ধারাবাহিকতায় আফ্রিকার কিছু দেশে তরুণরা দুর্নীতি ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে অংশ নিচ্ছে। এনসিপি দাবি করেছে, এসব ঘটনা বৈশ্বিক রাজনীতিতে নতুন বার্তা বহন করছে।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, আখতার হোসেন ও তাসনিম জারা যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে “বাংলা বসন্ত” ও এনসিপির উদ্দেশ্য, সম্ভাবনা ও অর্জন তুলে ধরেছেন। দেশে ফেরার পর তারা এই বার্তাগুলো সাংবাদিকদের মাধ্যমে জনগণ ও আন্তর্জাতিক মহলে পৌঁছে দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বিমানবন্দরে ঘটানো লাঞ্ছিতের কারণে সেই উদ্দেশ্য ব্যাহত হয়েছে।
এনসিপি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নিশ্চিত করেছে, প্রমাণ সাপেক্ষে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং দল হিসেবে তারা সাংবাদিকদের নিরাপত্তা ও সুষ্ঠু সাংবাদিকতার অধিকার রক্ষা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।