মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে তামিম ইকবাল। ছবি: সংগৃহীত
শেষ পর্যন্ত গুঞ্জন সত্যি হলো। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) আসন্ন নির্বাচন থেকে নিজেদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিলেন সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবালসহ প্রায় ১৫ জন প্রার্থী।
এ সময় নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ‘ফিক্সিং’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, আপনারা বলেন ফিক্সিং বন্ধ করেন ক্রিকেটে। আগে নির্বাচনের ফিক্সিং বন্ধ করেন, এরপর ক্রিকেটের ফিক্সিং বন্ধ কইরেন। এটা কোনো ইলেকশান ছিল না। বাংলাদেশের ক্রিকেটে এই ইলেকশন কালো দাগ হয়ে থাকবে।
বুধবার (১ অক্টোবর) মনোনয়ন প্রত্যাহারের পর তামিম এই নির্বাচন প্রক্রিয়াকে দেশের ক্রিকেটের জন্য ‘কালো দাগ’ হিসেবে অভিহিত করেন এবং তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পাতানো নির্বাচনের ছক সাজানো হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
সাবেক অধিনায়ক বললেন, প্রত্যাহারের কারণটি খুবই পরিষ্কার। এখানে আমার কাছে মনে হয় না যে আমাকে খুব বিস্তারিত বা ব্যাখ্যা করে কোন কিছু বলার আছে। আমি শুরু থেকেই একটা কথা বলে আসছি, নির্বাচনটা কোন দিকে যাচ্ছে বা কীভাবে হচ্ছে, এ জিনিস নিয়ে আপনারা সবাই এখন পরিষ্কার। যখন যেমন মনে হচ্ছে, যখন যা মনে হচ্ছে, তখন তা করা হচ্ছে। এটা… এটা আসলে নির্বাচন না। ক্রিকেটের সাথে এই জিনিসটা কোনো দিক থেকেই মানায় না।
তামিম বলেন, যখন ইসি তালিকা দেবে আজকে কারা কারা প্রত্যাহার করেছেন, তাদের নামগুলা আপনারা দেখলেই বুঝতে পারবেন যে সবাই তাদের জায়গা থেকে হেভিওয়েট, তাদের ভোটব্যাংকও খুব শক্তিশালী। এটা হলো আমাদের একটা প্রতিবাদের পথ যে, এই নোংরামির অংশ আমরা থাকতে পারব না। এখানে বিভিন্ন ধরনের বিভিন্ন সময় অনেক ধরনের কথা বলা হয়েছে, তবে দিন শেষে আমার কাছে মনে হয় যে, এই নোংরামির সাথে আমরা কোনো দিক থেকে কোনভাবেই অংশ নিতে পারব না।
তামিমের দাবি, মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে আগ্রহী ছিলেন আরও অনেকে। কিন্তু তাদেরকে নির্বাচনে থাকতে বাধ্য করা হয়েছে নানাভাবে।
তিনি বলেন, একটা জিনিস আমি সবসময় বলছি, ক্রিকেট, বাংলাদেশ ক্রিকেট এটা ডিজার্ভ করে না, বাংলাদেশের ক্রিকেট সমর্থকেরাও এটা ডিজার্ভ করে না। জানি না কতজন স্বীকার করবেন বা করবেন না, আরও অনেকেই আজকে নাম প্রত্যাহার করতেন। তাদেরকে বিভিন্নভাবে, বিভিন্ন উপায়ে বোঝানো হয়েছে বা চাপ সৃষ্টি করা হয়েছে, কোনোভাবে থামানো হয়েছে।
‘তার পরও ১৫ জন যদি আজকে (প্রত্যাহার) করে থাকেন, এটা একটা উল্লেখযোগ্য সংখ্যা। প্রায় ৫০ শতাংশ সরে দাঁড়িয়েছে। পাতানো নির্বাচনের এই খেলায় ক্রিকেটের পরাজয় হয়েছে।’
সবশেষে হতাশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, আমি শুধু এটাই বলবো, যারা বোর্ডে আছেন তারা যদি এভাবেই নির্বাচন করতে চান তাহলে করতেই পারেন। জিততেই পারেন। কিন্তু আজ ক্রিকেট হেরে গেছে।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বিসিবি নির্বাচন থেকে ১৫ জন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। তারা হলেন- তামিম ইকবাল (ওল্ডডিওএইচএস), রফিকুল ইসলাম বাবু (ইন্দিরা ক্রীড়াচক্র), মাসুদুজ্জামান (মোহামেডান), সাঈদ ইব্রাহীম আহমেদ (ফেয়ার ফাইটার্স), মির হেলাল (চট্টগাম জেলা), সৈয়দ বুরহান হোসেন পাপ্পু (তেজগাঁও ক্রিকেট একাডেমি), ইসরাফিল খশরু (এক্সিউম ক্রিকেটার্স), সাব্বির আহমেদ রুবেল (প্রগতি সেবা সংঘ), তৌহিদ তারেক (পাবনা), অসিফ রাব্বানী (শাইনপুকুর), সিরাজ উদ্দিন মোহাম্মদ আলমগীর (ক্যাটাগরি-৩), ইয়াসির আব্বাস (আজাদ স্পোর্টিং), ফাহিম সিনহা (সুর্যতরিণ), সাইফুল ইসলাম সপু (গুপিবাগ ফ্রেন্ডস) ও ওমর শরীফ মোহাম্মদ ইমরান (বাংলাদেশ বয়েজ)।
সংবাদচিত্র ডটকম/ক্রিকেট