কারাগারে বসে ডেসটিনি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমিন-এর জুম মিটিংয়ে অংশ নেয়ার ঘটনায় ৪ জন প্রধান কারারক্ষীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। সেই সংগে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়েছে ৭ জন সহকারী প্রধান কারারক্ষী ও ৬ জন সাধারণ কারারক্ষীর বিরুদ্ধে।
শুক্রবার (২ জুলাই) রাতে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন কারা মহাপরিদর্শক (আইজি-প্রিজন) বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. মোমিনুর রহমান মামুন। তিনি বলেন, কারাগারের অধীনে থেকে জুম মিটিংয়ে অংশ নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় ডিআইজি-প্রিজন তৌহিদুল ইসলামকে প্রধান করে ইতোমধ্যে ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি ৭ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিবে।
তিনি আরও বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার আগেই অভিযোগ উঠায় যারা এই আসামিকে নজরদারিতে রাখতে দায়িত্ব পালন করেছিলেন তাঁদের মধ্যে প্রধান ৪ জন কারারক্ষীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি ১৩ জন সহকারী কারারক্ষী ও সাধারণ কারারক্ষীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার আগেই কারাকর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিয়েছে উল্লেখ করে আইজি-প্রিজন বলেন, যাদেরকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে তাঁরা যদি তদন্তে নির্দোষ প্রমাণিত হন তবে আবারও কাজে ফিরতে পারবেন। কিন্তু আমরা চাই না কোনোভাবেই কারাকর্তৃপক্ষ সমালোচনায় পড়ুক। তাঁদের জন্যতো একটা সংস্থা সমালোচনায় পড়তে পারে না। তাই তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার আগেই অভিযোগ উঠাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
কেরানীগঞ্জ কারাগার সূত্রে জানা গেছে, সাময়িক বরখাস্তকৃত ৪ জন প্রধান কারারক্ষী হলেন- মো. ইউনুস আলী মোল্লা, মীর বদিউজ্জামান, মো. আব্দুস সালাম ও মো আনোয়ার হোসেন।
বিভাগীয় মামলা হওয়া ১৩ জনের মধ্যে ৭ জন সহকারী কারারক্ষী হলেন- মো. জসিম উদ্দিন, সাইদুল হক খান, মো. বিল্লাল হোসেন, ইব্রাহিম খলিল, মো. বরকত উল্লাহ, এনামুল হক ও সরোয়ার হোসেন এবং সাধারণ কারারক্ষী হলেন- মোজাম্মেল হক, জাহিদুল ইসলাম, আমির হোসেন, কামরুল ইসলাম, শাকিল মিয়া ও নবীন কারারক্ষী আব্দুল আলীম।
উল্লেখ্য, ৪ হাজার ১১৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ এবং ৯৬ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগ এমএলএম কোম্পানি ডেসটিনি’র চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেন ও এমডি রফিকুল আমিন-এর বিরুদ্ধে ২০১২ সালে রাজধানীর কলাবাগান থানায় দু’টি মামলা দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন। ওই বছরের ১১ অক্টোবর মামলায় গ্রেফতার হন রফিকুল আমিন ও মোহাম্মদ হোসেন। এরপর গ্রেফতারকৃত এই দু’জনসহ মোট ৫৩ জনের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের ৪ মে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয় আদালতে। এরপর থেকেই কেরানীগঞ্জ কারাগারে রয়েছেন তারা। কিন্তু অসুস্থতার কারণে গত দু’মাস ধরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন রফিকুল আমিন। এ সময় তিনি গত মে ও জুন মাসে একাধিকবার জুম মিটিংয়ে অংশ নিয়ে ফের এমএলএম ব্যবসা গড়ে তোলার চেষ্টা করছেন বলে সংবাদ প্রকাশ হয় গণমাধ্যমে। এরপর বিষয়টি নজরে এলে কারাকর্তৃপক্ষ ১৭ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়। সেই সংগে ঘটনা তদন্তে ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করে।
সংবাদচিত্র/আইন ও বিচার/আর.কে