প্রকাশের সময়: শুক্রবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১ । ১০:৩২ অপরাহ্ণ প্রিন্ট এর তারিখঃ সোমবার, ১২ মে ২০২৫

নৌকার ধাক্কায় ভেঙে পড়ল সেতু!

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সংবাদদাতা

ইটবোঝাই নৌকার ধাক্কায় ভেঙে গেছে সেতু। যে সেতু দিয়ে গত ২২ বছরে এক দিনও ব্যবহার হয়নি বলে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, দুই গ্রামের মানুষের যোগাযোগের সুবিধার জন্য দুই দশকের বেশি সময় আগে একটি সেতু নির্মাণ করা হয়। কিন্তু দুই পাশের সংযোগ সড়ক না থাকায় এক দিনের জন্যও সেতুটি ব্যবহার হয়নি।

সেতুটির অবস্থান ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলা ধরখার ইউনিয়নে।

বনগজ ও কৃষ্ণনগর গ্রামের মধ্যবর্তী নয়াখালের ওপর সেতুটি নির্মাণ হলেও তা কোনো কাজে আসেনি।

স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান, শুক্রবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকালে প্রায় সাত হাজার ইটবোঝাই একটি নৌকার সামনের অংশের সঙ্গে সেতুর মাঝখানের পিলারে ধাক্কা লাগে। এতে সেতুটি আংশিক ভেঙে যায়। সেতুর ভাঙা অংশ নৌকার ওপর পড়ে। নৌকাটি খালে ডুবে যায়। তবে মাঝিসহ সহযোগীদের থাকার কক্ষটি নৌকার পেছনের দিকে থাকায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

বিভিন্ন সূত্র জানায়, এলাকাবাসীর দাবির মুখে ১৯৯৯ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা ও আখাউড়া) আসনের তৎকালীন সাংসদ শাহ আলম সেতুটি নির্মাণের উদ্যোগ নেন। আখাউড়া উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল কার্যালয় (এলজিইডি) নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করেছিল। উত্তর-দক্ষিণে লম্বালম্বি সেতুটির দুই গোড়ায় মাটি নেই। সেতুটি সমতল থেকে অন্তত ১৫ ফুট উঁচু। এতে সারা বছর চারপাশে পানি থাকায় ২২ বছর সেতুটিতে কেউ কখনো ওঠানামা করেনি।

তবে সেতুটি নিয়ে দুই ধরনের তথ্য পাওয়া গেছে। এলজিইডির জেলা ও উপজেলা কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সেতুটির দৈর্ঘ্য ১৭ মিটার বা ৭৭ ফুট। সেতুর প্রস্থ ছিল ৬ ফুট। ৬ লাখ টাকা ব্যয়ে স্বল্প যানবাহন ও হেঁটে চলাচলের জন্য এই সেতু নির্মাণ করা হয়। স্থানীয় ব্যক্তিদের মতে, সেতুটির দৈর্ঘ্য ১২০ ও প্রস্থ ৮ ফুট। তৎকালীন স্থানীয় সাংসদ টিআর, কাবিখা, কাবিটাসহ বিভিন্ন প্রকল্পের বরাদ্দ নিয়ে ৪০ লাখের বেশি টাকা খরচ করে সেতু নির্মাণ করেন।

ধরখার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাছির মো. আরিফুল হক বলেন, সেতু নির্মাণের আগে রাস্তা নির্মাণ করতে হয়। কিন্তু এখানে ঘটেছে উল্টোটা। আগে সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। পরে আর রাস্তা নির্মাণ করা হয়নি। দুই বছর আগে একটি কর্মসূচি দিয়ে সেখানে ছয় লাখ টাকা ব্যয় করে মাটি ফেলেছিলেন। কিন্তু বন্যার পানি সেই মাটি ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। আর বর্তমান মাটির রাস্তা থেকে সেতুটির উচ্চতা প্রায় ১৫ থেকে ১৮ বা ২০ ফুট হবে।

এলজিইডির আখাউড়া উপজেলা প্রকৌশলী আবদুল লতিফ জানান, ইউএনওর মাধ্যমে সেতুটি ভেঙে যাওয়ার সংবাদ পেয়ে উপসহকারী প্রকৌশলী জহুরুল ইসলামকে পাঠানো হয়েছে।

জেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শিরাজুল ইসলাম বলেন, তাঁদের ডেটাবেইসের তথ্যানুসারে সেতুর দৈর্ঘ্য ১৭ মিটার বা ৫৫ দশমিক ৭৭ ফুট এবং প্রস্থ ৬ ফুট। ১৯৯৯ সালে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। নির্মাণ ব্যয় ছিল ৬ লাখ টাকা।

সংবাদচিত্র/সারাদেশ

প্রিন্ট করুন