প্রকাশের সময়: বৃহস্পতিবার, ২ অক্টোবর, ২০২৫ । ৬:০৯ অপরাহ্ণ প্রিন্ট এর তারিখঃ শুক্রবার, ৩ অক্টোবর ২০২৫

মোহাম্মদপুরে এলজিইডির ড্রাইভার রুহুলের ‘সাম্রাজ্য’

ইউসফ বাবলু

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে রুহুল ইসলাম নামে এলজিইডির একজন ড্রাইভার এলাকায় নিজের প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমে এক ধরনের ‘নিজস্ব সাম্রাজ্য’ গড়ে তুলেছেন। স্থানীয়রা জানান, সরকারি পদ এবং পরিচিতির সুযোগ নিয়ে রুহুল নানা ধরনের ব্যবসা, জমি দখল ও অনৈতিক প্রভাব খাটাচ্ছেন। তার কর্মকাণ্ডের বিষয়ে প্রশাসনকে বারবার অবহিত করা হলেও অদৃশ্য কারণে তেমন কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

রুহুল আমিন ১৯৯৬ সালে এলজিইডিতে দৈনিক ৬০ টাকা হাজিরার চুক্তিভিত্তিক চাকরিতে যোগ দেন। যদিও চাকরিটি স্থায়ী হয়নি, তবে তিনি বিভিন্ন দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ উপার্জন শুরু করেন। রুহুল দাবি করেছেন যে, রাজনৈতিক কারণে তিনি চাকরি হারিয়েছিলেন।

২০১৩ সালের পর থেকে রাজনৈতিক প্রভাবে আবারও এলজিইডির চাকরিতে ফিরে আসেন। বর্তমানে তিনি গাড়ি চালক হলেও আর গাড়ি চালান না। নিজের রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করে তিনি রাজনীতি ও তদবির বানিজ্যে দিন কাটাচ্ছেন। বর্তমানে তার বেতন ৩৪ হাজার টাকা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মোহাম্মদপুরের একতা ও চন্দ্রিমা হাউজিংয়ে রুহুল আমিনের অন্তত ২১টি ফ্ল্যাট এবং জমি রয়েছে। তিনি জয়েন্ট টাওয়ার, একতা হাউজিংয়ের মালিক সমিতির সভাপতি। ঢাকার পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ডিপিডিসি) জানিয়েছে, তার নামে অন্তত ২১টি ফ্ল্যাটে বিদ্যুতের মিটার রয়েছে।

সরাসরি দেখা যায়, একতা হাউজিংয়ের ৪, ৫, ৭, ৮ নম্বর রোডে তার জমি এবং প্রায় আটটি ফ্ল্যাট রয়েছে। পাশাপাশি চন্দ্রিমা মডেল টাউনের দুটি ফ্ল্যাটের মালিক তিনি। আরও জানা গেছে, তার গ্রামের বাড়ি শরিয়তপুরেও রয়েছে বহু সম্পত্তি।

বাসিন্দারা জানান, রুহুল আমিন তার সরকারি পরিচয় ব্যবহার করে স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে সুসম্পর্ক বজায় রেখেছেন। এর কারণে তার বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। স্থানীয়রা বলেন, “তার কারণে আমরা শান্তিতে বসবাস করতে পারি না। ব্যবসায়ীরা বাধ্য হয়ে চাঁদা দিতে হয়।”

অভিযোগের বিষয়ে রুহুল আমিন জানান, তিনি শুধু ১৮ জনের সঙ্গে মিলিয়ে একটি বাড়ি তৈরি করেছেন। বিদ্যুৎ বিভাগের ভুলের কারণে ২১টি মিটার তার নামে এসেছে। তার দাবি, এই ফ্ল্যাটগুলির মধ্যে মাত্র দুটি তার নিজস্ব।

স্থানীয় প্রশাসন এখনও এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। স্থানীয়রা আশা করছেন, প্রশাসন দ্রুত তদন্ত করে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে, যাতে তাদের নিরাপত্তা ও শান্তি নিশ্চিত হয়।

সংবাদচিত্র ডটকম/অপরাধ

প্রিন্ট করুন