বাংলাদেশের ক্রিকেটে সাকিব আল হাসান অধ্যায়ের ইতি টানা হলো— এমন ঘোষণা দিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া। তাঁর ভাষ্য অনুযায়ী, ফেসবুক পোস্ট ও রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার কারণে আর কখনো জাতীয় দলের হয়ে খেলতে পারবেন না এই তারকা অলরাউন্ডার।
গত সোমবার রাতে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল টোয়েন্টি ফোর-এর সঙ্গে মুঠোফোনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেন,
“তাকে বাংলাদেশের পতাকা বহন করতে দেওয়া যাবে না। এটা আমার পক্ষে কোনোভাবেই সম্ভব নয়। আমার বোর্ডের প্রতি স্পষ্ট নির্দেশনা থাকবে— সাকিব আল হাসান আর কখনো বাংলাদেশ টিমে খেলতে পারবেন না।”
বিতর্কের সূচনা
ঘটনার সূত্রপাত হয় সাকিব আল হাসানের একটি ফেসবুক পোস্টকে ঘিরে। গত রবিবার রাতে তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে একটি ছবি পোস্ট করে লিখেন, “শুভ জন্মদিন, আপা।” এরপর ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ পাল্টা স্ট্যাটাস দিয়ে মন্তব্য করেন, “একজনকে পুনর্বাসন না করায় সহস্র গালি দিয়েছেন আপনারা আমাকে। বাট আই ওয়াজ রাইট। ইন্ড অব দ্য ডিসকাশন।”
এর জবাবে সাকিব লিখেন, “যাক শেষমেশ কেউ একজন স্বীকার করলেন যে তাঁর জন্যই আমার আর বাংলাদেশের জার্সি গায়ে দেওয়া হলো না।”
পরের দিন বিকেলে আবারও পাল্টা প্রতিক্রিয়া দেন ক্রীড়া উপদেষ্টা। তিনি ফেসবুকে লেখেন, “যার হাত ছাত্র-জনতার রক্তে রঞ্জিত, তাকে বাংলাদেশের পতাকা বহন করতে দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না… শুধু ভালো ক্রিকেটার বলেই কাউকে পুনর্বাসন করা যাবে না।”
পেছনের প্রেক্ষাপট
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় সাকিব ছিলেন দেশের বাইরে। এরপর নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য হলেও দেশে ফিরতে পারেননি। তাঁর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা, শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারি এবং দুদকের মামলার অভিযোগও রয়েছে।
সাকিবের ব্যাখ্যা
শেখ হাসিনার জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানানো প্রসঙ্গে টোয়েন্টি ফোর-কে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় সাকিব বলেন,
“সে (শেখ হাসিনা) খেলা খুব সিরিয়াসলি ফলো করতেন, খেলা দেখতেন। সেই জায়গা থেকেই একটা সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। রাজনীতির আগে থেকেই। তাই একজনকে শুভেচ্ছা জানানোটা আমার কাছে স্বাভাবিক। অন্য কোনো উদ্দেশ্য ছিল না।”
ফেসবুক পোস্ট ও রাজনৈতিক সম্পর্ককে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া এই বিতর্ক এখন বাংলাদেশ ক্রিকেটে বড় এক অধ্যায়ের অবসানের ইঙ্গিত দিচ্ছে। ক্রীড়া উপদেষ্টার ঘোষণায় কার্যত নিশ্চিত হলো—লাল-সবুজ জার্সিতে আর দেখা যাবে না সাকিব আল হাসানকে।
সংবাদচিত্র ডটকম/ক্রিকেট