প্রকাশের সময়: শনিবার, ২১ জুন, ২০২৫ । ৪:৪২ অপরাহ্ণ প্রিন্ট এর তারিখঃ শনিবার, ২১ জুন ২০২৫

যেসব মার্কিন ঘাঁটিগুলি ইরানের লক্ষ্যবস্তু হতে পারে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের উপর আক্রমণ চালানোর কথা ভাবছেন, তেহরান দ্রুত প্রতিশোধ নেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে। ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী আজিজ নাসিরজাদেহ এই মাসে সতর্ক করেছেন, ‘যদি যুক্তরাষ্ট্র আক্রমণ করে, সমস্ত মার্কিন ঘাঁটি আমাদের নাগালের মধ্যে রয়েছে এবং আমরা দ্ব্যর্থহীনভাবে তাদের লক্ষ্যবস্তু করব।’

যদি যুক্তরাষ্ট্র ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নেয়, তাহলে সম্ভবত এটি মধ্যপ্রাচ্য এবং আশেপাশের অঞ্চলের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ঘাঁটি থেকে পরিচালিত হবে, যেগুলি তাদের নৈকট্য এবং তাৎপর্যের কারণে ইরানের প্রতিশোধের লক্ষ্যবস্তু হতে পারে। এখানে প্রধান মার্কিন ঘাঁটিগুলির বিবরণ দেওয়া হল:

১. আল উদেইদ বিমান ঘাঁটি (কাতার)
তাৎপর্য: মধ্যপ্রাচ্যের বৃহত্তম এই মার্কিন সামরিক ঘাঁটিটি ১০হাজারেরও বেশি মার্কিন কর্মীর আবাসস্থল এবং মার্কিন কেন্দ্রীয় কমান্ডের (সেন্টকম) মূল কেন্দ্র হিসাবে কাজ করে। মার্কিন বিমান বাহিনী স্থল-ভিত্তিক অভিযান পরিচালনা করে এবং একটি সামরিক প্রদর্শনীয় এলাকা হিসেবে কাজ করে। ঝুঁকি: ইরানের দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের নাগালের মধ্যে।

২. আল ধফরা বিমান ঘাঁটি (সংযুক্ত আরব আমিরাত)
তাৎপর্য: এটি মার্কিন বিমান বাহিনীর এফ-৩৫ এবং আইএসআর (গোয়েন্দা, নজরদারি এবং কৌশলগত পর্যালোচনা) বিমানের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রসরমান অবস্থান হিসেবে কাজ করে। ঝুঁকি: অতীতের উপগ্রহ চিত্রগুলিতে এর প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র ব্যাটারি এবং বিমান রাখার তথ্য পাওয়া গেছে, যা ইরানি ড্রোন এবং নির্ভুল হামলার ঝুঁকি তুলে ধরে।

৩. নৌ সহায়তা কার্যক্রম বাহরাইন (মানামা, বাহরাইন)
তাৎপর্য: মার্কিন নৌবাহিনীর পঞ্চম নৌবহরের সদর দপ্তর। পারস্য উপসাগর, লোহিত সাগর এবং আরব সাগরে মার্কিন নৌ অভিযানে সহায়তা করে। ঝুঁকি: হরমুজ প্রণালীতে তেহরান বারবার নৌ সম্পদ আক্রমণের হুমকির মধ্যে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সামুদ্রিক লক্ষ্যবস্তু। এখানে ইরান ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন বা অসমমিত নৌ বাহিনী ব্যবহার করতে পারে।

৪. ক্যাম্প আরিফজান (কুয়েত)
তাৎপর্য: মার্কিন সেনাবাহিনীর অভিযানের রাসদ ও সমরাস্ত্র সরবরাহ ব্যবস্থার মেরুদন্ড ও নির্দেশনা কেন্দ্র। এটি অভিযানে করে সহায়তা করে এবং একটি সামরিক প্রদর্শনীর এলাকা হিসেবে কাজ করে। ঝুঁকি: ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের নাগালের মধ্যে।

৫. ইনসিরলিক বিমান ঘাঁটি (তুরস্ক)
তাৎপর্য: এটি ঐতিহাসিকভাবে আঞ্চলিক অভিযানের জন্য ব্যবহৃত গুরুত্বপূর্ণ ন্যাটো ঘাঁটি। মার্কিন কৌশলগত যুদ্ধ বিমান এবং সম্ভবত পারমাণবিক অস্ত্রের আবাসস্থল।

৬. ঝুঁকি: তুরস্কের সাথে রাজনৈতিক উত্তেজনা ইরানে হামলার জন্য এর ভূমিকাকে জটিল করে তুলতে পারে।
তাৎপর্য: আইএসআইএস-বিরোধী অভিযানের জন্য মার্কিন বাহিনী দ্বারা ব্যবহৃত। ইরানের নিকটবর্তী। সেনা অভিযান বা ড্রোন হামলার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। ঝুঁকি: ইরাকে ইরান-সমর্থিত মিলিশিয়ারা ইতিমধ্যেই রকেট এবং ড্রোন দিয়ে ঘাঁটি লক্ষ্য করে আক্রমণ করেছে।

৭. দিয়েগো গার্সিয়া (ব্রিটিশ ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চল)
তাৎপর্য: ভারত মহাসাগরে ব্রিটিশ-নিয়ন্ত্রিত কোরাল দ্বীপ। ইরান থেকে দূরবর্তী হলেও দূরপাল্লার বোমারু বিমানের জন্য কার্যকর। এর দীর্ঘ রানওয়েতে বি-৫২ এবং বি-২ এর মতো মার্কিন কৌশলগত বোমারু বিমান অবস্থান করতে পারে। ঝুঁকি: দূরপাল্লার সম্ভাব্য ইরানি পাল্টা হামলার জন্য এখনও একটি কৌশলগত লক্ষ্যবস্তু।

সূএ: দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট

প্রিন্ট করুন