প্রকাশের সময়: শনিবার, ২১ জুন, ২০২৫ । ৪:২৬ অপরাহ্ণ প্রিন্ট এর তারিখঃ রবিবার, ২২ জুন ২০২৫

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংস্কারে বিশ্বব্যাংকের ৫০ কোটি ডলারের ঋণ সহায়তা

সংবাদচিত্র রিপোর্ট

বাংলাদেশের শাসনব্যবস্থা, আর্থিক খাত এবং স্বচ্ছতা বাড়াতে নতুন করে ৫০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ অনুমোদন করেছে বিশ্বব্যাংক। এই ঋণের মাধ্যমে সরকারি প্রতিষ্ঠানের জবাবদিহিতা বাড়ানো, আর্থিক খাতের দুর্বলতা মোকাবিলা এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সেবার মান উন্নয়নকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। শনিবার (২১ জুন) বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিস এই তথ্য জানায়।

এই ঋণের পরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৬ হাজার ১১৮ কোটি টাকা (১ ডলার সমান ১২২.৩৭ টাকা ধরলে)। সংস্থাটি জানিয়েছে, এই অর্থ সরকারি ও আর্থিক খাতের সংস্কার, প্রতিষ্ঠানগত স্থিতিশীলতা এবং রাজস্ব ব্যবস্থার উন্নয়নে ব্যয় হবে, যা টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর গেইল মার্টিন বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সরকারি খাতে স্বচ্ছতা ও কার্যকর বাজেট ব্যবস্থাপনা অপরিহার্য। সরকারের উচ্চাকাঙ্ক্ষী সংস্কারকে সমর্থন করতেই এই ঋণ দেওয়া হয়েছে।

বিশ্বব্যাংকের তথ্যমতে, বাংলাদেশের রাজস্ব-জিডিপি অনুপাত মধ্যম আয়ের দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম। ফলে উন্নত সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের সক্ষমতা অনেকাংশে বাধাগ্রস্ত হয়। এই কর্মসূচির আওতায় কর ব্যবস্থাকে আরও স্বচ্ছ, কৌশলগত ও দক্ষ করে তোলা হবে। কর ছাড়ের ক্ষেত্রে নতুন নিয়মে সংসদীয় অনুমোদন বাধ্যতামূলক করা হবে, যাতে আর্থিক শৃঙ্খলা বজায় থাকে। একইসঙ্গে ব্যাংকিং খাতের দুর্বলতা দূর করতে বাংলাদেশ ব্যাংককে প্রয়োজনীয় সমাধানক্ষমতা দেওয়া হবে।

ঋণ চুক্তিতে বলা হয়, ২০২৭ সালের মধ্যে সব সরকারি প্রকল্পের মূল্যায়ন নথি জনসমক্ষে প্রকাশ করতে হবে। সরকারি ক্রয়ে ই-জিপি বাধ্যতামূলক করা, সুবিধাভোগীদের মালিকানা প্রকাশ এবং ক্রয়সীমা বাতিলের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আর্থিক জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে নিরীক্ষা সংস্থাগুলোর ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি পরিসংখ্যান ব্যুরোর স্বাধীনতাও জোরদার করা হবে। দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য নগদ সহায়তা নিশ্চিত করতে আরও কার্যকর সামাজিক রেজিস্ট্রির ব্যবস্থাও গড়ে তোলা হবে।

বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র অর্থনীতিবিদ ধ্রুব শর্মা বলেন, এই অর্থায়ন জনগণের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কযুক্ত। সরকারের আয়ের ভিত্তি মজবুত করা এবং অর্থনৈতিক ধাক্কা সামলাতে দরিদ্র পরিবারগুলোকে যথাযথ সহায়তা দেওয়াই এর মূল উদ্দেশ্য। বিশ্বব্যাংকের হিসেবে, চলতি অর্থবছরে এই ঋণসহ মোট ৩.০৭ বিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সংস্থাটি। স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশকে দেওয়া বিশ্বব্যাংকের অনুদান ও ঋণের পরিমাণ ৪৬ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে।

সংবাদচিত্র ডটকম/জাতীয়

প্রিন্ট করুন