প্রকাশের সময়: শুক্রবার, ১৩ জুন, ২০২৫ । ১:২৬ অপরাহ্ণ প্রিন্ট এর তারিখঃ রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫

ইসরায়েলি হামলায় তেহরানে নিহত আইআরজিসি প্রধান ও দুই পরমাণু বিজ্ঞানী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ইরানের রাজধানী তেহরানে ইসরায়েলের চালানো একটি ভয়াবহ হামলায় ইসলামি বিপ্লবী গার্ড কর্পস (আইআরজিসি)-এর প্রধান মেজর জেনারেল হোসেইন সালামি নিহত হয়েছেন। একই হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন দেশটির দুই শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানী—মোহাম্মদ মাহদি তেহরানচি ও ফারেইদুন আব্বাসি।

শুক্রবার (১৩ জুন) ভোররাতে তেহরানের একাধিক আবাসিক ভবনে এই হামলা চালানো হয়। এতে বহু বেসামরিক নাগরিক হতাহত হয়েছেন বলে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে।

নিহত বিজ্ঞানীদের মধ্যে মোহাম্মদ মাহদি তেহরানচি ছিলেন ইসলামি আজাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট এবং ফারেইদুন আব্বাসি ছিলেন ইরানের পারমাণবিক শক্তি কমিশনের সাবেক প্রধান।

ঘটনার পরপরই তেহরানের ইমাম খোমেইনি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সব ধরনের ফ্লাইট সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, হামলার সময়সূচি ইচ্ছাকৃতভাবে নির্বাচন করা হয়েছে। কারণ মাত্র দুই দিন পরই ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পারমাণবিক আলোচনা শুরু হওয়ার কথা ছিল।

তেহরানে হামলার পূর্বাভাস আগেই পাওয়া গিয়েছিল। বৃহস্পতিবার (১২ জুন) থেকেই গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সম্ভাব্য হামলার ব্যাপারে সতর্কতা জারি করেছিল। অবশেষে শুক্রবার ভোরে তা বাস্তবে রূপ নেয়।

ইসরায়েল জানায়, ‘নেশন অব লায়ন্স’ নামক একটি পূর্বপরিকল্পিত সামরিক অভিযানের অংশ হিসেবে এই হামলা চালানো হয়। তাদের লক্ষ্য ছিল ইরানের সামরিক ঘাঁটি এবং পারমাণবিক স্থাপনাগুলো।

টাইমস অব ইসরায়েল ও দেশটির সামরিক সূত্র জানিয়েছে, এই অভিযানে দুই ডজনেরও বেশি যুদ্ধবিমান অংশ নেয় এবং তা সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পরিচালিত হয়।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্রের ভাষ্য, “এই অভিযানের উদ্দেশ্য ছিল ইরানের পরমাণু কর্মসূচি, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং সামরিক সক্ষমতা ধ্বংস করা।”

ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আইআরএনএ ও প্রেস টিভির তথ্য অনুযায়ী, এই হামলায় তেহরানের আবাসিক এলাকায় নারী ও শিশুসহ বেশ কয়েকজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।

তবে ইসরায়েল দাবি করেছে, তারা কেবলমাত্র সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে এবং বেসামরিক এলাকায় হামলার অভিযোগ তারা সরাসরি অস্বীকার করেছে।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এক বিবৃতিতে বলেন, “ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক হুমকি পুরোপুরি নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।”

এ ঘটনায় ইরানের পক্ষ থেকে এখনো কোনো বিস্তারিত আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়নি। তবে হামলার প্রতিক্রিয়ায় দেশটিতে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে, এবং পাল্টা জবাবের আশঙ্কা দিন দিন বাড়ছে।

সূত্র: তাসনিম নিউজ, টাইমস অব ইসরায়েল, প্রেস টিভি

প্রিন্ট করুন