প্রকাশের সময়: মঙ্গলবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২২ । ৯:৩৩ অপরাহ্ণ প্রিন্ট এর তারিখঃ শনিবার, ২১ জুন ২০২৫

ডিজিটাল আইনের অপব্যবহার কমে এসেছে: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

সংবাদচিত্র রিপোর্ট

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিনিয়ত ভুল ও উসকানিমূলক তথ্য ছড়ানো বন্ধ করতে ডিজিটাল আইনের বাস্তবায়ন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।

মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে মহিলা সাংবাদিক সমিতির আয়োজনে ‘ডিজিটাল স্বাক্ষরতার গুরুত্ব এবং ঘৃণামূলক বক্তব্য ও ভুল তথ্য প্রকাশ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, বিগত কয়েক বছরের ঘটনায় ডিজিটাল আইন নিয়ে অনেক বিতর্ক হলেও এ আইনের অপব্যবহার উল্লেখযোগ্য হারে কমে এসেছে।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন কানাডার রাষ্ট্রদূত লিলি নিকোলাস, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিনসহ আরও অনেকে।

তিনি বলেন, আমরা এমন এক সাইবার যুগে বাস করি যেখানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সঙ্গে আমাদের জীবন ওতোপ্রোতভাবে জড়িত। সেজন্যই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। আইনটি মূলত সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যমূলকভাবে হয়রানি করার জন্য করা হয়নি বরং এটি ব্যবহার করা হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুল তথ্য কিংবা উসকানিমূলক তথ্য ছড়ানো বন্ধ করতে।

ডিজিটাল আইন নিয়ে নানা বিতর্ক থাকলেও এর একটি জবাবদিহিতার জায়গা থাকা উচিত মন্তব্য করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, কদিন আগেও ফ্রান্সের নির্বাচনের সময়ে দেশটির সংসদ রাষ্ট্রপতিকে ভুল সংবাদ কিংবা উসকানিমূলক সংবাদ ছড়ায় এমন মিডিয়ার বিপক্ষে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেয়ার ক্ষমতা দিয়েছে। এভাবে প্রায় প্রতিটি দেশেই জবাবদিহিতার একটা জায়গা আছে।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে সব সময়েই সোচ্চার। তবে অনেক সময়েই মিডিয়া ভুল খবর প্রকাশ করে থাকে, যা সাধারণ মানুষের মধ্যে সন্দেহের সৃষ্টি করে। যারা সত্যি কথা বলছেন তাদের নিয়ে আমাদের কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু মিথ্যা কথা বলার সুযোগ যাতে কেউ না পায় এ জন্যই এ আইনের আওতায় একটি জবাবদিহিতার জায়গা রাখা হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও অনলাইনে নারীরা যৌন হয়রানি ও বাজে কথাবার্তার শিকার হওয়া নিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারীরা যৌন হয়রানির স্বীকার হলে তারা চাইলেই পুলিশের সাইবার সিকিউরিটির সাহায্য নিতে পারেন। ২০২০ থেকে এখন পর্যন্ত সাইবার সিকিউরিটিতে ২০ হাজার অভিযোগ এসেছে। যারা অভিযোগ করেছেন তাদের বেশিরভাগই নারী ও যাদের বয়স ২৪ বছরের নিচে। এদের প্রতিটি অভিযোগ গুরুত্ব সহকারে দেখা হয়েছে।

কানাডার রাষ্ট্রদূত লিলি নিকোলাস বলেন, ‘আমি মনে করি ফেসবুক থেকে শুরু করে প্রতিটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ব্যাপারে বাংলাদেশের পর্যবেক্ষণ ও পদক্ষেপ নেয়ার এটিই উপযুক্ত সময়। বাংলাদেশ ২০২৬ সালের মধ্যে এলডিসিভুক্ত দেশে প্রবেশ করবে। এখন থেকেই বাংলাদেশের ঘৃণামূলক বক্তব্য ও ভুল তথ্যের মতো স্পর্শকাতর ইস্যু নিয়ে কাজ শুরু করা উচিত। যদিও এটি অনেক কঠিন কাজ। কেননা অতিরিক্ত মনিটরিং আবার বাকস্বাধীনতা খর্ব করতে পারে। এদিকেই খেয়াল রাখতে হবে।’

বাংলাদেশের সঙ্গে কানাডার সম্পর্ক নিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে কানাডার সম্পর্ক ৫০ বছরের। কানাডাও একই ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়। নারী স্বাধীনতার জন্য আমাদের সরকার সবসময়েই সরব। বাংলাদেশের সঙ্গে আমরা এ ব্যাপারে কাজ করতে আগ্রহী। কানাডা এ বিষয়ে বাংলাদেশকে সব ধরণের সহযোগিতার জন্য প্রস্তুত।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, আমরা শুধু সাংবাদিকরা না, সাধারণ মানুষরাও নানাভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হয়রানির শিকার হচ্ছি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের যেমন ভালো দিক আছে, তেমনি খারাপ দিকও আছে। আমরা সেখানে যাকে যা ইচ্ছা বলে ফেলছি, যার কোনো গেটওয়ে নাই। যে যা খুশি তাকে বলে ফেলছে। গুজবের মোকাবিলা করতে হলে সত্য তথ্যটা জানাতে হবে। আর এ সত্য তথ্য উপস্থাপনে আমাদের সবাইকেই কাজ করতে হবে। আমাদের নিজেদের সুরক্ষা নিজেদের রক্ষা করতে হবে।

সংবাদচিত্র ডটকম/মিডিয়া

প্রিন্ট করুন