জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২০০৬ সালে প্রথম আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলতে নেমেছিলো বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচ জয়ে রাঙিয়েছিলো লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার ( ২২ জুলাই) নিজেদের শততম ম্যাচে প্রতিপক্ষ সেই জিম্বাবুয়েই। এবারও শেষ হাসি হাসলো বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়ের দেওয়া ১৫৩ রানের লক্ষ্যে খেলতে গিয়ে বিন্দুমাত্র পরীক্ষায় পড়তে হয়নি বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের। পেয়েছে ৮ উইকেটের বড় জয়।
হারারেতে টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৫২ রান করেছিলো জিম্বাবুয়ে। জবাবে সাত বল বাকি থাকতেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ।
প্রথম টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের বোলারদের চমৎকার বোলিংয়ে ২০ ওভার খেলতে পারেনি জিম্বাবুয়ে। ১৯ ওভারে তারা অলআউট হয় ১৫২ রানে। সেই লক্ষ্যে নাঈম শেখ ও সৌম্য সরকারের হাফসেঞ্চুরিতে সাত বল আগে দুই উইকেট হারিয়ে টপকে যায় বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬৩ রান করেন ওপেনার নাঈম শেখ। ৫১ বলে খেলা তার ইনিংসে ছিলো সাতটি চার। এছাড়া সৌম্য সরকার ৪৫ বলে ৫০ রান করেন। তার ইনিংসে দুইটি ছক্কা ও চারটি চারের মার রয়েছে। অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ১৫ এবং নুরুল হাসান সোহান ১৬ রান করেন।
বল হাতে শুরুটা দুর্দান্ত করেন পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। নিজের প্রথম ওভারেই তুলে নেন মারুমানির (সাত) উইকেট। দলীয় স্কোর তখন ১০। এরপর ঘুরে দাঁড়ায় জিম্বাবুয়ে। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৬৪ রান যোগ করেন মাদিভেরি ও রেগিস চাকাভা। এরপর মাদিভেরিকে (২৩) ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন সাকিব আল হাসান।
ক্রমেই বিপজ্জনক হয়ে ওঠা চাকাভাকে (২২ বলে ৪৩) তুলে নিয়ে বাংলাদেশ শিবিরে স্বস্তি এনে দেন উইকেট রক্ষক নুরুল হাসান সোহান।
শরীফুলের করা ১১তম ওভারে খেলায় পাল্টা চাপ বিস্তার করে বাংলাদেশ। ওভারের প্রথম বলে চাকাভাকে রান আউট করেন নুরুল। পঞ্চম বলে জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক সিকান্দার রাজা ফিরে যান রানের খাতা খোলার আগেই। তার আউটেও আছে নুরুলের অবদান। খোঁচা মারতে গিয়ে তাকে ক্যাচ দেন রাজা।
বল হাতে উইকেট পেয়েছেন সৌম্য সরকারও। তিনি মুসাকান্দার (ছয়) উইকেট তুলে নেন। পরের উইকেটটি তুলে নেন শরিফুল। ২২ বলে ৩৫ করা মায়ার্সের স্টাম্প উপড়ে ফেলেন তিনি। শেষ দিকে লুক জঙ্গউইয়ের (১৮) ব্যাটে ভর করে ১৫২ রানের পুঁজি পায় স্বাগতিকরা।
বাংলাদেশের পক্ষে মুস্তাফিজ তিনটি, সাইফউদ্দিন ও শরিফুল দুইটি করে এবং সাকিব ও সৌম্য একটি করে উইকেট লাভ করেন।
জবাব দিতে নেমে দারুণ শুরু করেন দুই ওপেনার নাঈম শেখ ও সৌম্য সরকার। তাদের ওপেনিং জুটিতে ১৩ ওভারে শতরান স্পর্শ করে বাংলাদেশ। তাদের এই জুটিই মূলত জয়ের পথ সহজ করে দেয়।
দীর্ঘ প্রায় ৮ বছর পর জিম্বাবুয়ে সফরে গেছে বাংলাদেশ দল। পূর্ণাঙ্গ এই সফরে একটি টেস্ট এবং তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলা শেষ করেছে টাইগাররা। টেস্ট এবং ওয়ানডে সিরিজ দাপটের সংগে জিতে নিয়েছে সফরকারী বাংলাদেশ।
এই ১০০ ম্যাচের মধ্যে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সর্বোচ্চ ১৫ ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। ১২টি খেলেছে পাকিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। ভারত আর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলেছে ১১টি করে ম্যাচ। ১০টি ম্যাচ খেলেছে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। দক্ষিণ আফ্রিকা ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলেছে ছয়টি। এছাড়া আয়ারল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া নেদারল্যান্ড, ওমান, কেনিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, নেপাল, স্কটল্যান্ড ও হংকংয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে মাঠে নেমেছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।
সংবাদচিত্র/ক্রিকেট