ভারতের উত্তর প্রদেশে কলিম উল্লাহ খান নামের এক ব্যক্তি একটি শতবর্ষী আম গাছ থেকে প্রায় তিনশ প্রজাতির নতুন আম উদ্ভাবন করেছেন। তিনি বহুদিন যাবৎ আমের উদ্ভাবনে কাজ করে যাচ্ছেন। খবর এএফপি।
তরুণ বয়সেই একটি আম গাছ থেকে কলম করে সাতটি আমের জাত ‘তৈরি’ করেছিলেন কলিম। কিন্তু এরপর ঝড়ে গাছটি উপড়ে যায়। তারপর ১৯৮৭ সালে শতবর্ষী এক গাছ থেকে নমুনা নিয়ে আবার পরীক্ষা শুরু করেন তিনি। এরপর আর থেমে থাকেননি তিনি। এখন পর্যন্ত উদ্ভাবন করেছেন ৩০০ টিরও বেশি প্রজাতি। প্রতিটিই স্বাদ, গন্ধ, আকারেও আলাদা।
একটি ১২০ বছরের গাছ থেকে এত প্রজাতির আমের উদ্ভাবন তাক লাগিয়ে দেয়ার মতো। কলিম উল্লাহ মনে করেন, তার কয়েক দশকের কঠোর অধ্যবসায়ের ফসল এটি। তিনি বলেন, খোলা চোখে এটি কেবলই একটি গাছ। কিন্তু ভালো করে তাকালে বোঝা যায়, এটি আসলে একটি আমের বাগান, বিশ্বের সবচেয়ে বড় আমের মহাবিদ্যালয়।
এখন পর্যন্ত উদ্ভাবিত আমের প্রজাতিগুলোর মধ্যে একটি কলিম উল্লাহর খুবই পছন্দের। সেই প্রজাতিটির নাম তিনি রেখেছেন বলিউডের জনপ্রিয় নায়িকা ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চনের সঙ্গে মিল রেখে। ১৯৯৪ সালে ঐশ্বরিয়া বিশ্বসুন্দরী খেতাব জেতার পর কলিম উল্লাহ একটি জাতের নাম রাখেন ঐশ্বরিয়া। এই জাতকেই এখন পর্যন্ত তিনি নিজের উদ্ভাবিত আমের মধ্যে সেরা মনে করেন।
কেবল ঐশ্বরিয়া নয়, কলিমের নামকরণ করা আমের মধ্যে রয়েছে ভারতীয় ক্রিকেটার শচীন টেন্ডুলকার এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নামও। আট সন্তানের জনক কলিম উল্লাহ বলেন, মানুষ হয়ত থাকবে না কিন্তু আমগুলো চিরকাল থাকবে। শচীন আম খেলেই মানুষের ক্রিকেটের মহানায়ককে মনে পড়বে।
ডালিমের আরেক নাম আনারকলি। কিন্তু কলিম উল্লাহ নিজের উদ্ভাবিত একটি আমের প্রজাতির নামও দিয়েছেন আনারকলি। এই প্রজাতির বিশেষত্ব হলো, এর দুই স্তরের ত্বক রয়েছে। দুই স্তরের আমের স্বাদ ও গন্ধও একেবারে ভিন্ন রকমের।
৮২ বছরের কলিম উল্লাহ খান এখনও নতুন নতুন প্রজাতির আম উদ্ভাবনের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি মনে করেন, এই গাছ থেকে এখনও আরও নতুন প্রজাতির আম উদ্ভাবন সম্ভব।
সংবাদচিত্র/আন্তর্জাতিক