চনপাড়ার অপরাধী গ্যাংয়ের হাতেই খুন হয়েছেন বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশ। আর এ খুনের নেতৃত্বে ছিল চিহ্নিত মাদক কারবারি রায়হান গ্রুপ। পুলিশের ওপর হামলাসহ এই গ্রুপের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে দশটিরও বেশি। পরশ হত্যার ছায়া তদন্তকারী সংস্থা র্যাব বলছে, হত্যার মোটিভ জানার চেষ্টা করছেন তারা।
গত ৪ নভেম্বর রাত পৌনে দুইটা থেকে আড়াইটার মধ্যে পরশকে হত্যা করা হয়। সে সময়ে এলাকার কয়েকটি সিসি ক্যামেরার ফুটেজে ঘটনায় জড়িত একাধিক ব্যক্তি ও মরদেহ সরিয়ে নিতে ব্যবহৃত একটি প্রাইভেট কার দেখা গেছে।
রাত ১টা ২৮ মিনিটে ৬ যুবক চনপাড়ার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের গলি থেকে বেরিয়ে চনপাড়া-রূপগঞ্জ মূল সড়কে উঠে হাতের বাঁয়ে মোড় নিয়ে ১ নম্বর ওয়ার্ডের দিকে চলে যায়। ১টা ৫১ মিনিটে তারা আবার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের দিকে ফিরে আসে। রাত ২টা ২৩ মিনিটে চার যুবক বালু ব্রিজ এলাকা থেকে ৬ নম্বর ওয়ার্ডে আসে। এরপর ২০ মিনিটে একাধিক যুবক ঘটনাস্থলের দিকে যায়।
রাত ২টা ৪৪ মিনিটে দুই যুবক গলির মুখে এসে পায়চারি করতে থাকে। ২টা ৫২ মিনিটে বালু ব্রিজ এলাকা থেকে দ্রুতগতির একটি সাদা রঙের টয়োটা এক্সিও গাড়ি এসে ৬ নম্বরের দিকে যায়। একই সঙ্গে গলির মুখে পাহারা দেয়া দুই যুবক গলি থেকে বেরিয়ে যায়।
এর ঠিক ১১ মিনিট পর দ্রুতগতিতে সাদা প্রাইভেটকারটি ৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে বেরিয়ে যেদিক থেকে এসেছিল ঠিক সেদিকেই অর্থাৎ বালু ব্রিজের দিকে চলে যায়। গাড়িটি ৬ নম্বর ওয়ার্ডের গলি অতিক্রমের সময় দুইজন গাড়ির দুই পাশ দিয়ে হেঁটে গাড়িটিকে গলি পার করে দেয়।
র্যাব জানিয়েছে, রায়হান গ্রুপের হাতেই খুন হয়েছে বুয়েট শিক্ষার্থী পরশ।
মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) দুপুরে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, পরশ হত্যার মূল রহস্য উদঘাটন করতে না পারলেও পরশ হত্যায় কারা জড়িত তা আমরা কিছুটা শনাক্ত করেছি। তার হত্যায় রায়হান গ্রুপের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে আমরা সন্দেহ করছি। রায়হানের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। সে চনপাড়ায় মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।
আল মঈন বলেন, এখনও বলার মতো কোনো অবস্থানে আমরা নেই। পরশের বেড়ে ওঠা চনপাড়া থেকে বেশি দূরে না। এটা পর্যালোচনা করা হচ্ছে। হত্যাকাণ্ড চনপাড়াতেই হয়েছে, এটা নিশ্চিত। যাদের নাম আসছে সবাইকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে।
এদিকে, তদন্তসংশ্লিষ্ট একটি সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জের চনপাড়ায় বুয়েটছাত্র পরশের কিলিং মিশনে অংশ নেয় ১০ থেকে ১২ জন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর সোর্স ভেবেই তাকে খুন করা হয়। হত্যায় জড়িতরা সবাই চিহ্নিত।
সংবাদচিত্র ডটকম/অপরাধ