তিস্তা, ধরলা, ব্রহ্মপুত্রসহ দেশের ৯ নদীর পানি বিপৎসীমারা উপরে। নদ-নদীর পানি বাড়ছে ৬০টি পয়েন্টে। পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি ও সিকিমে ভারী বৃষ্টির কারণে উত্তরের সব নদীর পানি বেড়ে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি দেখা দিতে পারে। ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকায় ঈদের পর উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে বন্যার পূর্বাভাস দিচ্ছে সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
তিস্তা অববাহকিার ধরলা নদী বইছে বিপৎসমীর ওপরে। আর কুড়িগ্রামে দুধকুমার নদীর পানি উপচে এখন লোকালয়ে। এতে অন্তত ৬০টি চর ও নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে ফসলের ক্ষেত।
বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র বলছে, ভারতের অরুণাচল, আসাম, মেঘালয় ও জলপাইগুড়িতে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। উজান থেকে আসা ঢলে তিস্তা, করতোয়া, আত্রায়, ব্রক্ষ্মপুত্র, টাঙ্গন,যমুনাসহ উত্তরাঞ্চলের সব নদনদীর পানি বাড়ছে। তবে এই পরিস্থিতিতে বড় বন্যার আশঙ্কা কম।
জুন থেকে আগস্ট বর্ষার কারণে বন্যার তীব্রতা বাড়ে। এই সময় বহ্মপুত্র, যমুনা ও পদ্মা অববাহিকায় নদীর পানি বৃদ্ধি পায়। এবার জুন মাসেই তিস্তা অববাহিকায় বন্যা শুরু হয়েছে। তবে মধ্য জুলাইয়ে পদ্মার পানি বাড়লে উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে আবারও বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টির আশংকা রয়েছে।
মধ্য জুনে শুরু হওয়া বন্যার রেশ এখনো কাটেনি সিলেট-সুনামগঞ্জে। সুরমা, কুশিয়ারা, বাউলাই, সমেশ্বরীসহ ৯ নদীর পানি এখনও বিপৎসমী ওপরে। এরই মধ্যে বেশ কিছু নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র বলছে, সিলেট বিভাগে বন্যার তীব্রতা আর বাড়বে না।
নেত্রকোণায় এবারের বন্যায় অন্তত দুই হাজার ঘরবাড়ি ভেসে গেছে। দুর্গত এলাকা থেকে পানি নামতে থাকায় ক্ষয়ক্ষতির হিসাব শুরু করেছে প্রশাসন। তাই প্রকৃত হিসাব জানাতে পারেনি তারা।
এদিকে, স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে সরকারি সহায়তার দাবি জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দারা।
নেত্রকোণায় ১৬ জুনের বন্যায় নষ্ট হয়েছে কলমাকান্দা উপজেলার প্রায় ৪০০ ঘরবাড়ি ও গৃহস্থলি জিনিসপত্র। ভেসে গেছে গোলার ধান, গবাদি পশু, হাঁস-মুরগি ও মাছ। সহায় সম্বল হারিয়ে দিশেহারা- দুর্গত এলাকার বাসিন্দারা।
পানির তোড়ে মুহূর্তের মধ্যে ভেঙে পড়ে ঘর, ভেসে যায় আসবাবপত্র। প্রাণ বাঁচাতে আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নেন বন্যার্তরা।
কলমাকান্দা ছাড়াও দুর্গাপুর, মোহনগঞ্জ, মদন, খালিয়াঝুড়ি, বারহাট্টা ও সদর উপজেলার বাসিন্দারা বন্যায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতায় উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন। পুনর্বাসনে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য।
নতুন করে বাড়িঘর নির্মাণে সরকারি সহযোগিতার দাবি জানিয়েছেন সর্বস্ব হারানো মানুষেরা।
সংবাদচিত্র/পরিবেশ