অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন দিয়েছে দুদক। ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) প্লট জালিয়াতির ঘটনার জড়িত থাকার অভিযোগে সাবেক প্রধান বিচারপতির নামে মামলার এ অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বৃহস্পতিবার (০৭ অক্টোবর) দুদক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
দুদক জানিয়েছে, রাজউকের প্লট জালিয়াতির ঘটনার অভিযোগে সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন দিয়েছে তারা। খুব শিগগিরই তার বিরুদ্ধে মামলা করবে দুর্নীতি বিরোধী রাষ্ট্রীয় এ সংস্থাটি।
সূত্র জানায়, সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা তার নিজ নামে রাজউক থেকে উত্তরা আবাসিক এলাকায় একটি প্লট বরাদ্দ পান। পরবর্তীতে তিনি অসৎ উদ্দেশে নিজ ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধ প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমে প্রতারণার আশ্রয়ে তার ভাই নরেন্দ্র কুমার সিনহার নামে রাজউক পূর্বাচল প্রকল্পে প্লটের জন্য আবেদন করান এবং তিন কাঠার একটি প্লট বরাদ্দ করান।
পরবর্তী সময়ে তিনি প্রভাব খাটিয়ে ওই তিন কাঠার প্লটটিকে পাঁচ কাঠার প্লটে উন্নীত করান। পুনরায় নিজ ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে পূর্বাচল থেকে প্লট স্থানান্তর করে উত্তরার সেক্টর-৪, রোড নম্বর-৬, বাড়ি নম্বর-১/এ প্লটটি রাজউক থেকে অনুমোদন করান। সিনহা নিজেই ওই প্লটের মোট ৭৫ লাখ টাকা পরিশোধ করেন। এরপর সেখানে ৯তলা ভবন নির্মাণ করেন।
অনুসন্ধানকালে নিরপেক্ষ প্রকৌশলীর প্রতিবেদন অনুযায়ী, উত্তরা আবাসিক এলাকায় সেক্টর-৪, রোড নম্বর-৬, বাড়ি নম্বর-১/এ ভবনের নির্মাণ ব্যয় ৬ কোটি ৩১ লাখ ৫ হাজার ৮৬৫ টাকা। এছাড়া, প্লটের মূল্য হিসেবে রাজউককে পরিশোধ করা হয় ৭৫ লাখ টাকা। সে হিসেবে প্লটের মূল্যসহ ভবন নির্মাণে মোট ব্যয় ৭ কোটি ৬ লাখ ৫ হাজার ৮৬৫ টাকা।
ওই সম্পদের মধ্যে কেবল খালেদা চৌধুরীর কাছ থেকে ফ্ল্যাট বিক্রির অগ্রীম বাবদ ৭০ লাখ টাকা প্রাপ্ত হয়েছেন। সেই টাকা বাদে অবশিষ্ট ৬ কোটি ৩৬ লাখ ৫ হাজার ৮৬৫ টাকা এবং শংখজিত সিংহর নামীয় হিসাবে স্থায়ী ও নগদে জমা আছে ৭৮ লাখ টাকা।
অর্থাৎ, ৭ কোটি ১৪ লাখ ৫ হাজার ৮৬৫ সম্পদ সুরেন্দ্র কুমার সিনহা অসৎ উদ্দেশে নিজ ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রতারণার মাধ্যমে নিজ ভাই ও নিজের আত্মীয়ের নামে বেনামে অর্জন করেছেন। যার কোনো বৈধ উৎস নেই বা তার জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ ও উক্ত সম্পদ অর্জনের ক্ষেত্রে অবৈধ পন্থায় অর্জিত অর্থ বিভিন্ন ব্যক্তির হিসাবের মাধ্যমে স্থানান্তর, রুপান্তর ও হস্তান্তর করে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭ (১) ধারা ও ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪ (২), (৩) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করায় কমিশন কর্তৃক তার বিরুদ্ধে উক্ত ধারায় মামলা রুজুর অনুমোদন দেন এবং দুদকের উপপরিচালক মো. গুলশান আনোয়ার প্রধান তার বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
সংবাদচিত্র/জাতীয়