আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে আমরা ১৯৭২ সালের মূল সংবিধানের অনেক কিছুই ফিরে পেয়েছি। ষোড়শ সংশোধনীর মাধ্যমে আর কিছুটা ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করেছি। সেখানে কিছুটা বাধা-বিপত্তি এসেছে এবং এটি এখন সাবজুডিস ম্যাটার।
তিনি বলেন, আমরা অবশ্যই বিষয়টি নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করছি। তার কারণ আমরা বাহাত্তরের মূল সংবিধান ফিরে পেতে চাই। কখন, কীভাবে কোন বাস্তবতার নিরিখে এটা করা হবে, সেটা দল ও সরকার নির্ধারণ করবে।
শনিবার (৫ নভেম্বর) রাজধানীর ধানমন্ডিতে জাতীয় সংবিধান দিবস উপলক্ষে ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল’ অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স (বিলিয়া) আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এসব কথা বলেন আইনমন্ত্রী।
সংবিধানের ৯৬ (২) অনুচ্ছেদ বা ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় কার্যকর না হওয়া প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এ বিষয়ে একটি রিভিউ পিটিশন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে পেন্ডিং আছে। আশা করছি, এই রিভিউ পিটিশনের শুনানি কিছুদিনের মধ্যেই শেষ হবে। এ ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্ট যেভাবে রায় দেবেন, আমরা ঠিক সেভাবেই কাজ করব।
সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ বলবৎ রাখার প্রাসঙ্গিকতা তুলে ধরে আনিসুল হক বলেন, আমি আমার নির্বাচনী এলাকায় নৌকা প্রতীক নিয়ে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়ে এসেছি। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার যাতে কায়েম করা যায়, সেজন্যই আমরা সরকার গঠন করেছি এবং সরকারে কাজ করছি। এখন যদি নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নের জন্য কোনো আইন করার ক্ষেত্রে দলের বিরুদ্ধে ভোট দিই, তাহলে তো আমি যে ম্যান্ডেট নিয়ে পাস করে এসেছি, তার বিরুদ্ধে ভোট দেয়া হবে। সেই ক্ষমতা কিন্তু জনগণ আমাকে সংসদ সদস্য হিসেবে দেয়নি। আমি যদি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য হতাম তাহলে আমার ইচ্ছেমতো ভোট দিতে পারতাম। সুতরাং যেখানে আমি দলের প্রতীক নিয়ে, দলের ইশতেহার দিয়ে সংসদ সদস্য হিসেবে পাস করে এসেছি, সেখানে কিন্তু আমি দলের বিরুদ্ধে ভোট দিতে পারি না।
তিনি আরও বলেন, সংসদ সদস্যদেরও কারও না কারও কাছে দায়বদ্ধতা থাকা উচিত।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠানোর বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আগামী নির্বাচনের আগে কারাগারে পাঠানোর এখনও কোনো চিন্তা-ভাবনা সরকারের নেই। তবে প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে বিষয়টি স্পষ্ট করে বলেছেন, বাড়াবাড়ি করলে…। এ সময় এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাহী আদেশ যে কোনো সময় ব্যবহার করা যায় বা বাড়ানো যায়।
একুশে আগস্ট গেনেড হামলা মামলায় উচ্চ আদালতে তারেক রহমানের সাজা বাড়ানোর জন্য আপিল করা হবে কি-না? এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আপনারা অপেক্ষা করুন, দেখুন কি হয়।
বিলিয়ার চেয়ারপারসন ব্যারিস্টার এম আমির-উল ইসলামের সভাপতিত্বে সেমিনারে অন্যদের মধ্যে সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম সামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মিজানুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জন বক্তব্য দেন। এ সময় লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সচিব মো. মইনুল কবির, সাবেক প্রধান তথ্য কমিশনার ও রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জমিরসহ বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদচিত্র ডটকম/জাতীয়