২০১৬ বিশ্বকাপে বেঙ্গালুরুতে ভারতের বিপক্ষে ৩ বলে মাত্র ২ রান করলেই জিতে যেত বাংলাদেশ। উইকেটে তখনও ছিলেন মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের মতো অভিজ্ঞ দুই ব্যাটার। তবুও সেই ম্যাচটা হারতে হয়েছিল ১ রানে। ছক্কা মেরে ম্যাচ জেতাতে গিয়ে আউট হয়ে গিয়েছিলেন মুশফিকরা। বাংলাদেশের সমর্থকদের কাছে সেই ম্যাচটা এখনও দুঃস্বপ্ন হয়ে গেঁথে রয়েছে মনে।
বেঙ্গালুরুর পর দুঃস্বপ্নের যাত্রায় এবার যোগ হলো অ্যাডিলেড। বুধবার (২ নভেম্বর) সুপার টুয়েলভের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে শক্তিশালী ভারতকে হারাতে ৯ ওভারে দরকার ছিল মাত্র ৮৫ রান। হাতে ছিল সব কটি উইকেট। যে কোনো উইকেটে, যেকোনো প্রতিপক্ষের সঙ্গে সহজ সমীকরণই বলা চলে। তবে এমন ম্যাচেও হারের হতাশা বাংলাদেশের।
ভারতের দেয়া ১৮৫ রানের বড় টার্গেট তাড়া করতে নেমে বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হওয়ার আগে বাংলাদেশের ওপেনিং জুটি সংগ্রহ করে ৭ ওভারে ৬৬ রান। চলতি বছর ওপেনিং জুটিতে যা সর্বোচ্চ সংগ্রহ।
লিটন রানআউট হতেই ম্যাচে ছন্দ হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। খেলার মোড় ঘুরিয়ে দেয় লিটন দাসের এই রানআউট। সরাসরি থ্রুতে তাকে ফিরিয়ে দেন লোকেশ রাহুল। তখনও থামানো যাচ্ছিল না লিটনকে। ২৭ বলে ৬০ রান করা এই ওপেনারকে দেখে বাংলাদেশের সমর্থকরা জয়ের স্বপ্ন দেখছিল।
লিটনের আউটের পর ভারতীয় বোলারদের তোপে ভেঙে পড়ে বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডার। পরপর উইকেট তুলে নেন মোহাম্মদ শামি ও আর্শদীপ সিংরা। বিশেষ করে এক ওভারে সাকিব ও আফিফকে তুলে নিয়ে ম্যাচটা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসেন তরুণ পেসার আর্শদীপ।
বল হাতে আজও দারুণ ছিলেন তাসকিন। উইকেট না পেলেও ভারতকে প্রথম পাওয়ার প্লে-তে রানই তুলতে দেননি টাইগার এ পেসার। চার ওভারে রান দিয়েছেন মাত্র ১৫। ২৪ বলের মধ্যে ১৬ বলই ডট দেন। তবে তাসকিনের দুর্দান্ত বোলিংয়ের পরও বিরাট কোহলি ও ফর্মে ফেরা রাহুলরা বেশ কয়েকবার জীবন পেয়ে টার্গেটটাকে বাড়িয়ে নিয়েছেন। বিশেষ করে শেষ ২ ওভারে ভারত তোলে ২৭ রান। হয়তো সেটাই শেষ পর্যন্ত খেলায় তফাত গড়ে দিয়েছে।
তবে ফিল্ডিংয়ে বেশ কয়েকটা ক্যাচ মিসের পর ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো হওয়ার পর এমন সহজ সমীকরণের নাগাল না পাওয়া বড় ব্যর্থতা নিঃসন্দেহে। যদিও ডেথ ওভারে ভারতীয় বোলাররাও ছিলেন দুর্দান্ত। এ ছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ভারতের ফিল্ডিং ছিল প্রশ্নবিদ্ধ, তবে বুধবার সবাই নিশ্চিতভাবেই লেটার মার্কস পাবেন।
ম্যাচের আগের দিন সাকিব বলেছিলেন, বাংলাদেশ জিতলে অঘটন হবে। তবে এমন ম্যাচে জেতাটা যে কারো জন্যই প্রাপ্য। বিশেষ করে লিটনের এমন দুর্দান্ত ইনিংসের পর জয়টা আরও বেশি দরকার ছিল। আজ সবচেয়ে বেশি খারাপ লাগবে কার? দুর্ভাগ্যজনক রানআউটে কাটা পড়ার পর লিটনের অভিব্যক্তিই বলে দেয় বড্ড পোড়াবে তাকে ম্যাচটা।
সংবাদচিত্র ডটকম/ক্রিকেট