জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
জনগণকে বিভ্রান্ত করতেই সরকারের নির্দেশে জিয়াউর রহমানের নামে মামলা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
আজ শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে খালেদ মোশাররফসহ তিন মুক্তিযোদ্ধা সেনা কর্মকর্তা হত্যার ৪৮ বছর পর দায়ের করা মামলার প্রসঙ্গ টেনে এ অভিযোগ করেন তিনি।
রিজভী বলেন, ‘স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমান, যিনি বহুদলীয় গণতন্ত্র চালু করেছিলেন, নতুনভাবে তার বিরুদ্ধে গতকাল একটি মামলা দেওয়া হয়েছে। মামলাটা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে দেওয়া হয়েছে। কেন দেওয়া হয়েছে? শেখ হাসিনা এবং তার সরকার এখন ডুবুডুবু অবস্থায়। এই ডুবন্ত অবস্থা থেকে জনগণকে একটু যদি বিভ্রান্ত করা যায় সেজন্য …।’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের পর অভ্যুত্থান-পাল্টা অভ্যুত্থানের মধ্যে মেজর জেনারেল খালেদ মোশাররফ বীর উত্তম, কর্নেল নাজমুল হুদা বীর বিক্রম ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ টি এম হায়দার বীর উত্তমকে হত্যার ঘটনার প্রায় পাঁচ দশক পর এ মামলা হয় গতকাল বৃহস্পতিবার। এতে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে অভিযুক্ত করা হয়। কর্নেল নাজমুল হুদার মেয়ে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য নাহিদ ইজহার খান ঢাকার শেরেবাংলা নগর থানায় এ মামলা দায়ের করেন।
এ প্রসঙ্গে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘যিনি মামলা করেছেন তিনি মুক্তিযোদ্ধা কর্নেল হুদা (নাজমুল হুদা) সাহেবের মেয়ে। কর্নেল হুদা সাহেবের মেয়ে যে মামলাটি দিলেন… তার মা (নীলুফার হুদা) একটা বই (‘কর্নেল হুদা ও আমার যুদ্ধ’) লিখেছেন। তার মায়ের লেখা বইটা তো মেয়ে পড়ে দেখেননি। সেখানে তিনি লিখেছেন, খালেদ মোশাররফ এবং কর্নেল হুদাকে সুরক্ষিত করার জন্য কর্নেল নওয়াজিসকে জিয়াউর রহমান নির্দেশ দিয়েছিলেন। যে মেয়েটি গতকাল মামলা করেছেন তারই মা কিন্তু এই বই লিখেছেন। নিজের মায়ের লেখা বইকে অগ্রাহ্য করে শেখ হাসিনার কথায় তিনি মামলা করলেন।’
তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি যারা মামলা দিচ্ছেন তাদের শেখ হাসিনার কথা না শোনা ভালো। কারণ এতে আপনারাও জনগণের কাছে বিচ্ছিন্ন হবেন, জনগণ আপনাদের ভালো চোখে দেখবে না।’
রিজভী প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বক্তব্যের সমালোচনা করে বলেন, ‘তিনি গত পরশু দিন বলেছেন, কালো টাকা দিলে নিয়েন কিন্তু স্বাধীনভাবে ভোট দিয়েন। একটা সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান এ কথা বলতে পারেন? কালো টাকা নিয়েন…। আপনি শেখ হাসিনার আদর্শে অনুপ্রাণিত, আওয়ামী চেতনায় অনুপ্রাণিত, লুটপাটের চেতনায় অনুপ্রাণিত, দুর্নীতির চেতনায় অনুপ্রাণিত। তাই কালো টাকা নেওয়ার কথা আপনি বলতে পারেন।
ঢাকা-১২ আসনের বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নিরব, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোনায়েম মুন্নাসহ নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে এ মানববন্ধন কর্মসূচি হয়।
যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলমকে কারাগারে ২৪ ঘণ্টা ‘লকআপে’ রাখার নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে তাকেসহ বন্দি নেতাদের মুক্তির দাবি জানান রিজভী।
জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সহসভাপতি ফখরুল ইসলাম রবিনের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বিএনপির মীর সরফত আলী সপু, আবদুল খালেক, যুবদলের শফিকুল ইসলাম মিল্টন, মহিলা দলের হেলেন জেরিন খান, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতারা বক্তব্য দেন।
সংবাদচিত্র ডটকম/রাজনীতি