দেশে গত কয়েকদিন ধরে আবারো করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখি। গত ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ৬৮৫ জন নতুন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে, যা বিগত চার মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। তবে এ সময় করোনা আক্রান্ত হয়ে কারো মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। একদিনে শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক ১৮ শতাংশ।
এর আগে সবশেষে ২১ ফেব্রুয়ারি দেশে এক দিনে ১৯৫১ জন কোভিড রোগী শনাক্ত হয়েছিল। মাঝের সময়টায় এই সংখ্যা আর ১৬শ ছাড়ায়নি।
শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় ১৩ হাজার ৮৩৩টি নমুনা পরীক্ষা করে এই নতুন রোগীদের শনাক্ত করা হয়েছে। পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১২ দশমিক ১৮ শতাংশ। গতকাল নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ছিল ১৪ দশমিক ৩২ শতাংশ। এ পর্যন্ত করোনার কারণে মোট প্রাণহানি হয়েছে ২৯ হাজার ১৩৫ জনের।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, দেশে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৯ লাখ ৬২ হাজার ২১৩ জনে। সুস্থ হয়েছেন আরো ১৮৫ জন। এ নিয়ে মোট সুস্থ ১৯ লাখ ৬ হাজার ৪১৭ জন।
এর আগে, দেশে করোনা শনাক্তের হার ১০ এর ওপরে ছিল গত ১৭ ফেব্রুয়ারি, ১০ দশমিক ২৪। এরপর শনাক্তের হার ধারাবাহিকভাবে কমছিল। সংক্রমণ কমার ধারায় গত ৫ মে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা নেমেছিল ৪ জনে। তবে গত ২২ মের পর থেকে টানা এক মাসের বেশি সময় ধরে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা আবারো বাড়ছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারণ করা মানদণ্ড অনুযায়ী, কোনো দেশে রোগী শনাক্তের হার টানা দুই সপ্তাহের বেশি ৫ শতাংশের নিচে থাকলে করোনার সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলে ধরা যায়।
দেশে করোনা ভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল ২০২০ সালের ৮ মার্চ। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ব্যাপক বিস্তারের মধ্যে গত বছরের ২৮ জুলাই দেশে রেকর্ড ১৬ হাজার ২৩০ নতুন রোগী শনাক্ত হয়।
গত বছরের ডিসেম্বরের শেষে বিশ্বে ছড়াতে শুরু করে করোনার অতি সংক্রামক নতুন ধরন ওমিক্রন। তখন দেশে রোগী শনাক্তের হার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মৃত্যুও বাড়তে থাকে।
এ বছর ফেব্রুয়ারি থেকে আবার নামতে শুরু করে করোনা রোগীর সংখ্যা। যদিও জানুয়ারির শেষ দিকে শনাক্তের হার কিছুটা কমে ৩০ শতাংশের নিচে নামে। ওমিক্রন আতঙ্ক কিছুটা কাটিয়ে দেশে কয়েক দিন ধরে শনাক্তের সংখ্যা কমতে শুরু করে।
এর আগে, ওমিক্রন আতঙ্কের শুরুর দিকে দেশে কয়েক সপ্তাহ ধরে শনাক্তের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছিল। তাই সংক্রমণ ঠেকাতে বেশকিছু বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল সরকার। তবে ধীরে ধীরে সেসব বিধিনিষেধ তুলে নেয় সরকার।
গত বছরের মাঝামাঝি করোনার ডেল্টা ধরনের দাপটে দেশে করোনায় মৃত্যু, রোগী শনাক্ত ও শনাক্তের হার অনেক বেড়ে গিয়েছিল। তবে আগস্টে দেশব্যাপী করোনার গণটিকা দেয়ার পর সংক্রমণ কমতে থাকে।
সংবাদচিত্র/স্বাস্থ্য