অনলাইনে পণ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন এবং তার স্বামী প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ রাসেলসহ চারজনের বিরুদ্ধে লক্ষ্মীপুরে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৪ জুন) দুপুরে লক্ষ্মীপুরে ১১ লাখ ৩৩ হাজার টাকার চেক মামলায় অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সদর আদালতের বিচারক শামছুল আরেফিন এ রায় দেন।
আসামিদের আদালতে উপস্থিত থাকার জন্য নোটিশ পাঠানো হয়। কিন্তু তারা আদালতে উপস্থিত হননি। এতে বিচারক তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন বলে জানান মামলার আইনজীবী ও ভুক্তভোগী মুহাম্মাদ মাহমুদুল হক সুজন।
গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত অন্যরা হলেন- ইভ্যালির ম্যানেজার ফাইন্যান্স জায়েদ হাসান, সিনিয়র ম্যানেজার ফাইন্যান্স আব্দুল্যা আল মাসুদ।
গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বাসা থেকে ইভ্যালির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন এবং তার স্বামী প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ রাসেলকে গ্রেফতার করা হয়। এর আগে ১৫ সেপ্টেম্বর রাতে আরিফ বাকের নামে এক ব্যক্তি তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ মামলার পরিপ্রেক্ষিতে তাদের দুজনকে গ্রেফতার করে র্যাব।
এর আগে ১৪ সেপ্টেম্বর সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় ইভ্যালি, ই-অরেঞ্জসহ ১০টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর মাধ্যমে ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করে মন্ত্রণালয়ের এ-সংক্রান্ত কমিটি।
১৩ আগস্ট ইভ্যালিকে চিঠি দিয়ে ১৫ জুলাই পর্যন্ত কোম্পানির সম্পদ ও ঋণের বিবরণ, গ্রাহক ও মার্চেন্টদের কাছে ইভ্যালির দেনার বিবরণ জানতে চায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তবে সময় চেয়ে আবেদন করে ইভ্যালি। সেই আবেদনে সাড়া দেয়নি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এছাড়া ২৬ আগস্ট দেয়া হিসাবে ইভ্যালি জানিয়েছিল, গ্রাহকরা তাদের কাছে ৩১১ কোটি টাকা পাবেন।
গ্রাহকের পাওনার সমপরিমাণ টাকা পণ্য কেনার জন্য অগ্রিম মূল্য বাবদ পরিশোধ করা হয়েছে। এর আগে ১৯ আগস্ট ইভ্যালি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে তাদের এ দায় ও সম্পদের তথ্য দেয়। ওই সময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও) সেলের মহাপরিচালক হাফিজুর রহমান সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এ সময় তিনি বলেছিলেন, ইভ্যালির দেনার পরিমাণ ৫৪২ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। হাফিজুর রহমান আরও বলেন, ইভ্যালি তাদের সম্পদের পরিমাণ দেখিয়েছে ১০৫ কোটি টাকা। কোম্পানির ব্র্যান্ড ভ্যালু দেখিয়েছে ৪২২ কোটি ৬২ লাখ টাকা। সেভাবেই তারা তাদের ব্যালেন্স শিট মিলিয়েছে। জানা গেছে, ইভ্যালির ৫৪২ কোটি ৯৯ লাখ টাকার দেনার বিপরীতে ব্র্যান্ড ভ্যালু দেখানো হয়েছে ৪২২ কোটি ৬২ লাখ টাকা।
অদৃশ্য সম্পদ দেখানো হয় ১৫ কোটি ৮২ লাখ টাকা এবং দৃশ্যমান সম্পদের হিসাব দেখানো হয়েছে ১০৫ কোটি ৫৪ লাখ ৫৩ হাজার ৬৪০ টাকা।
সংবাদচিত্র/আইন ও বিচার