BVNEWS24
বাংলাদেশ
৪৬ শর্তের বেড়াজালে কোরবানির পশুর হাট
জুলাই ১৪, ২০২১, ২২:৪০ || আপডেট: জুলাই ১৪, ২০২১, ২২:৫৯
৪৬ শর্তের বেড়াজালে কোরবানির হাট
করোনা মহামারির মধ্যে নির্ধারিত সময়ের আগেই এবার ঢাকাসহ দেশব্যাপী কোরবানির গরুর হাট বসেছে। হাটের জন্য রয়েছে ৪৬টি শর্ত। প্রথম শর্ত ১৭ জুলাইয়ের আগে গরুর হাট বসানো যাবে না। কিন্তু হাটে গরু আনা শুরু হয়েছে ১০ দিন আগে। শর্তে বলা হয়েছে, হাট চালুর দু’দিনের বেশি আগে গরু আনা যাবে না।
আবাসিক এলাকায় গরুর হাট বসানোতেও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। অথচ রেলওয়ে কলোনির আবাসিক এলাকার মাঠ গরুর হাটের জন্য ইজারা দিয়েছে সিটি করপোরেশন নিজেই। দেশের বিভিন্ন জায়গাতেই যেখানে-সেখানে হাট বসছে।
এবার ঢাকার দুই সিটিতে ২১টি গরুর হাট বসানোর অনুমোদন দিয়েছে সিটি করপোরেশন। ইতিমধ্যেই হাট ইজারা দেওয়া শেষ হয়েছে। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের আগেই ঢাকার মেরাদিয়া, ধূপখোলা মাঠ, হাজারীবাগ, জিগাতলাসহ অনেক এলাকায় গরুর হাট বসে গেছে। ক্রেতারাও যাচ্ছেন কোরবানির পশু কিনতে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে গরুর হাট পরিচালনার কথা বলছে সিটি করপোরেশন।
বিক্রেতা ও ক্রেতাদের জন্য যে ৪৬টি শর্ত দেওয়া হয়েছে তার বড় একটি অংশ করোনায় স্বাস্থ্যবিধি, সামাজিক দূরত্ব ও মাস্ক সংক্রান্ত।
শর্তাবলীতে বলা হয়েছে, গরুর হাটে পুরো স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। গরুগুলোকে এমনভাবে রাখতে হবে যাতে ক্রেতারা নিজেদের মধ্যে তিন ফুট দূরত্ব বজায় রেখে হাটে অবস্থান করতে পারেন। সেভাবেই হাটে গবাদি পশু তুলতে হবে।
হাটে ক্রেতা-বিক্রেতা সকলকে মাস্ক পরতে হবে। গরু কিনতে দু’জনের বেশি হাটে যেতে পারবেন না। হাটের আয়তন অনুযায়ী সামাজিক দূরত্ব রেখে যতো জন ক্রেতা একসংগে প্রবেশ করতে পারেন, ততোজন প্রবেশ করবেন। বাকিরা বাইরে অপেক্ষা করে পর্যায়ক্রমে প্রবেশ করবেন।
হাটে প্রবেশের পথে শরীরের তাপমাত্রা মাপা ও সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা থাকবে। হাটের ভেতরেও থাকবে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা। হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থাও রাখতে হবে প্রতিটি হাটে। এছাড়া হাটে আইসোলেশন সেন্টার এবং মেডিক্যাল টিম থাকবে। প্রয়োজন হলে তাঁরা কাউকে দ্রুত আইসোলেশন সেন্টারে নিয়ে যাবেন। এছাড়া থাকবে ভ্রাম্যমাণ আদালত, সিটি করপোরেশনের টিম এবং জাল টাকা চিহ্নিত করার বুথ। কোনো হাটে জোর করে গরু নেওয়া যাবে না।
এই শর্তগুলো পালনে ভ্রাম্যমাণ আদালত ছাড়াও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের নিজস্ব টিম নিয়োগ করা হয়েছে।
ইজারাদাররা শর্ত না মানলে তাদের ইজারা বাতিল করা হবে। ক্রেতা বা বিক্রেতা যারাই স্বাস্থ্যবিধি মানবেন না, মাস্ক পরবেন না, তাঁরা জরিমানাসহ শান্তির মুখোমুখি হতে পারেন। নারী, শিশু, বয়স্ক লোক ও অসুস্থ কাউকে হাটে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। সম্ভব হলে অনলাইনে কোরবানির পশু কিনতে বলা হয়েছে।
১৩ জুলাই দেশব্যাপী ডিজিটাল কোরবানির পশুর হাট শুরু হয়েছে। আইসিটি ডিভিশন ও ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের যৌথ ব্যবস্থাপনায় এই ‘অনলাইন হাট’ পরিচালিত হচ্ছে। এক হাজার ৮৪৩টি অনলাইন শপের মাধ্যমে ২৪১টি হাটকে এই অনলাইন প্ল্যাটফর্মে যুক্ত করা হয়েছে।
গত বছর এক কোটি ১৮ লাখ কোরবানির পশুর চাহিদা ছিলো, কিন্তু করোনা’র কারণে বিক্রি হয়েছে ৯৪ লাখ পশু। এবার এক কোটি ১৯ লাখ কোরবানিযোগ্য পশু রয়েছে। অনলাইন শপের মাধ্যমে এবার রেকর্ডসংখ্যক কোরবানির পশু বিক্রির আশা করা হচ্ছে।
গত বছর অনলাইনে ২৭ হাজার কোরবানির গরু বিক্রি হয়েছিলো। এবার টার্গেট করা হয়েছে এক লাখের মতো।
অনলাইনে ছবি ও ভিডিও দেখেই গরু কিনতে হবে। তবে খামার বা হাটের পাশে কারও বাড়ি হলে দেখার সুযোগ থাকবে। তা না হলে গরুটি সরবরাহের সময়ই দেখা যাবে। অনলাইনে দেখা গরু এবং বাস্তবের গরুর মিল না থাকলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের গাইড লাইন অনুযায়ী সমাধান হবে।
ঢাকায় এবার অনলাইনে গরু কিনে কোরবানির দায়িত্বও দেয়া যাবে। অনলাইন হাট থেকে একদম কোরবানি করে বাড়িতে গোস্ত পৌঁছে দেয়া হবে।
সূত্র: ডয়চে ভেলে।