বহুল আলোচিত অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার চার্জ গঠন করেছেন আদালত। আজ কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাঈল এ মামলার চার্জ গঠন করেন। একই সঙ্গে ওসি প্রদীপসহ ৩ আসামির জামিন নামঞ্জুর করা হয়েছে। গত বছর কক্সবাজারের টেকনাফে চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন তিনি।
জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, চার্জ গঠনের জন্য আজ রোববার (২৭ জুন,২০২১) দিন ধার্য ছিল। সেই হিসেবে সকালে সাবেক ওসি প্রদীপসহ ১৫ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়।
ফরিদুল আলম জানান, আজ রোববার দীর্ঘ শুনানি শেষে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। এ মামলায় সাক্ষ্য দেয়ার জন্য আগামী ২৬-২৮ জুলাই দিন ধার্য করা হয়েছে।
পিপি অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম আরো বলেন, ফৌজদারী কার্যবিধির ২৬৫ (গ) ধারায় মামলায় অভিযুক্ত বরখাস্ত হওয়া টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, কনস্টেবল সাগর দেব এবং বাহারছরা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই নন্দদুলাল রক্ষিতের পক্ষের আইনজীবীরা মামলার দায় থেকে তাদের অব্যাহতি ও জামিনের আবেদন করেন। তবে আদালত শুনানি শেষে তা নামঞ্জুর নামঞ্জুর করেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, গত ১০ জুন সাবেক ওসি প্রদীপ ও এসআই নন্দদুলালের জামিন চেয়ে আদালতে আবেদন করেন তাদের আইনজীবীরা। কিন্তু আদালতে নথি উপস্থাপিত না হওয়ায় ওই দিন শুনানি হয়নি। গত ১৩ জুন এ নিয়ে পুনরায় আদালতে আবেদন করা হয়। পরে আবেদনটি আমলে নেয় আদালত এবং শুনানির জন্য ২৭ জুন (আজ) দিন ঠিক করে।
এ ছাড়া গত ২৪ জুন একই আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন প্রার্থনা করেন এ মামলায় অভিযুক্ত কনস্টেবল সাগর দেব। আদালত তার জামিন আবেদনের বিষয়ে শুনানির জন্য আজ রোববার দিন ধার্য করেছিলেন।
কক্সবাজারের টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে গত বছরের (২০২০ সাল) ৩১ জুলাই রাতে গাড়ি তল্লাশিকে কেন্দ্র করে বিতণ্ডার এক পর্যায়ে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান। নিহতের বড় বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে গত ৫ আগস্ট এ ঘটনায় মামলা করেন।
মামলায় বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সাবেক ইনচার্জ (পরিদর্শক) লিয়াকত আলীকে প্রধান আসামি করা হয়। এ ছাড়া টেকনাফ থানার তৎকালীন ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ৯ পুলিশ সদস্যকে মামলায় আসামি করা হয়। মামলাটি তদন্ত করার জন্য র্যা বকে আদেশ দেন আদালত। প্রধান আসামি লিয়াকত আলী ও প্রদীপ কুমার দাশসহ ৭ পুলিশ সদস্য গত ৬ আগস্ট আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।
এদিকে, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা র্যা ব-১৫ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. খায়রুল ইসলাম গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর প্রদীপ কুমার দাশসহ ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। মামলার অন্যতম অভিযুক্ত প্রদীপ কুমারের অন্যতম সহযোগী কনস্টেবল সাগর দেব ঘটনার শুরু থেকেই পলাতক ছিলেন। দীর্ঘ ১১ মাস পলাতক থাকার পর অবশেষে গত ২৪ জুন আত্মসমর্পণ করেন।
সংবাদচিত্র/আইন ও বিচার/আর.কে