করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ঢাকার ৪ পাশের ৭ জেলায় নতুন করে বিধিনিষেধ দিয়েছে সরকার। নিষেধাজ্ঞার মধ্যে ওইসব জেলার ওপর দিয়ে কোনো গণপরিবহন চলবে না। ফলে কার্যত ঢাকার সংগে সব জেলার গণপরিবহন বন্ধ থাকবে।
যাত্রীবাহী বাসের বিষয়ে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে সোমবার (২১ জুন) রাতে সংবাদচিত্রকে নিশ্চিত করেছেন সংগঠনটির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ।
ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বলেন, যে সাতটা জেলায় লকডাউন দেয়া হয়েছে সেগুলো এড়িয়ে ঢাকায় প্রবেশ সম্ভব না। তাই বিধিনিষেধ অনুযায়ী মঙ্গলবার সকাল থেকে আমরা দূরপাল্লার সব পরিবহন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
এর আগে বিধিনিষেধের আওতায় থাকা জেলাগুলোর কোথাও লকডাউন চলাকালে ট্রেন থামবে না বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন।
তিনি বলেন, ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া ট্রেনের গন্তব্যে যেতে যদি কোনো লকডাউন এলাকা পড়ে সেখানে ট্রেন থামবে না, যাত্রী উঠাবে না, নামাবেও না। লকডাউন এলাকা ক্রস করে ট্রেন গন্তব্যে যাবে।
অন্যদিকে বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক জানান, লকডাউন ঘোষণা করা সাত জেলায় সব যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল মঙ্গলবার (২২ জুন) থেকে বন্ধ থাকবে। আরিচা ও মাওয়া ঘাটের লঞ্চ ও স্পিডবোটও বন্ধ থাকবে, ফেরিতে শুধুমাত্র মালবাহী গাড়ি পারাপার হতে পারবে।
ঢাকা বা ঢাকার বাইরে থেকে ছেড়ে আসা কোনো নৌযান এই সাত জেলার মধ্যে কোনো ঘাটে দাঁড়াতে পারবে না বলেও তিনি জানান।
এর আগে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, মুন্সীগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, রাজবাড়ি, মাদারীপুর ও গোপালগঞ্জ জেলায় সার্বিক কার্যাবলী ও চলাচল (জনসাধারণের চলাচলসহ) ৩০ জুন পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করে।
আদেশে বলা হয়, এই সময়ে শুধুমাত্র আইনশৃঙ্খলা এবং জরুরি পরিষেবা, যেমন-কৃষি উপকরণ (সার, বীজ, কীটনাশক, কৃষি যন্ত্রপাতি ইত্যাদি), খাদ্যশস্য ও খাদ্যদ্রব্য পরিবহন, ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্য সেবা, কোভিড-১৯ টিকা প্রদান, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস বা জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, বন্দরগুলোর (নদীবন্দর) কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট (সরকারি-বেসরকারি), গণমাধ্যম (প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া), বেসরকারি নিরাপত্তা ব্যবস্থা, ডাক সেবাসহ অন্যান্য জরুরি ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবার সংগে সংশ্লিষ্ট অফিসগুলো, তাদের কর্মচারী ও যানবাহন এবং পণ্যবাহী ট্রাক বা লরি এই নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরে থাকবে।
এ বিষয়ে সচিবালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, কয়েক দিন ধরে করোনা সংক্রমণ বেড়ে চলেছে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে আজকে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে ঢাকাকে আরো সুরক্ষা দিতে আমরা একটু কাট-অফ (বিচ্ছিন্ন) রাখতে চাই অন্য জেলার সংগে।
সংবাদচিত্র/জাতীয়/আর.কে